সরকারি নির্দেশ সত্ত্বেও ফেরত মেলেনি টাকা
নির্দেশ ছিল ১৫ দিনের মধ্যে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার। এর মাঝে কেটে গিয়েছে পাঁচ-পাঁচটি মাস। টাকা তো মেলেইনি, উল্টে উপেক্ষিত হয়েছে সমবায়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রারের নির্দেশ।
জেলা সমবায় দফতরের ডেপুটি রেজিস্টার বিজয় হালদার অবশ্য বলেন, “অভিযোগকারীর টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন বলে সমবায় কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছেন। তাই আমরা আর একটু অপেক্ষা করছি। না দিলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
‘তারকেশ্বর নেতাজি সুভাষ আরবান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড’ নামে ওই সমবায় ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে রঞ্জন মান্না নামে খানাকুলের পূর্ব রাধানগর গ্রামের এক বাদাম বীজ ব্যবসায়ী পুলিশ-প্রশাসন এবং সমবায় দফতরে লিখিত অভিযোগ করেন।
ওই অভিযোগে তিনি জানান, ২০১১ সালের ২৬ নভেম্বর ওই সমবায় ব্যাঙ্কের চাঁপাডাঙা শাখায় তিনি একটি সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলেন। তাতে ৭ লক্ষ ৭ হাজার ২০০ টাকা জমা রাখেন। অ্যাকাউন্টটি খোলার জন্য ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান আনসার আলি সাহানা, তাঁর ছেলে এবং এক কর্মী বেশ কয়েক বার তাঁর বাড়িতে যান। রঞ্জনবাবু জানান, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বলেছিলেন, ওই পরিমাণ টাকা জমা দিলে ১৫ দিনের মধ্যে ২৫ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া হবে। ঋণের আশায় তিনি বহু কষ্টে ওই টাকা যোগাড় করেন।
ঋণ অবশ্য পাননি রঞ্জনবাবু। এ ব্যাপারে তদ্বির করতে জুতোর শুকতলা খুইয়ে শেষ পর্যন্ত জমা দেওয়া টাকা তুলে ফেলতে চান তিনি। কিন্তু নানা অছিলায় নিজের জমা দেওয়া টাকাও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাঁকে ফেরত দেননি বলে অভিযোগ। রঞ্জনবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে সমবায় দফতর তদন্তে নামে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়। এর পরেই দফতরের হুগলি জেলার ডেপুটি রেজিস্ট্রার বিজয় হালদার ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান আনসার আলি সাহানাকে রঞ্জনবাবুর টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার লিখিত নির্দেশ পাঠান। গত বছরের ১২ ডিসেম্বরের লেখা ওই নোটিসে বলা হয়, চিঠি পাওয়ার পনেরো দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দিতে হবে। না হলে আনসার এবং বোর্ড অফ ডিরেক্টরের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কড়া প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সমবায় ব্যাঙ্কটি চিঠি হাতে পায় তার এক দিন পরে।
এর পর থেকে পাঁচ মাস কেটে গিয়েছে। যদিও রঞ্জনবাবু টাকা হাতে পাননি। শুধু তাই নয়, টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশের যে চিঠি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়, তার প্রতিলিপি কাগজে-কলমে রঞ্জনবাবুকে পাঠানোর কথা বলা হলে তা-ও রঞ্জনবাবুর বাড়িতে পৌঁছয়নি। বিষয়টি জানতে পেরে দিন কয়েক আগে তারকেশ্বরে সমবায় দফতরের সিআই অফিস থেকে তিনি ওই প্রতিলিপি সংগ্রহ করেন।
স্বভাবতই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তারকেশ্বরের পুরপ্রধান স্বপন সামন্ত গোটা বিষয়টি জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন দফতরের মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর কাছে।
স্বপনবাবুর অভিযোগ, “ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। সমবায় দফতরে আনসারের কিছু ঘনিষ্ঠ কর্মী থাকাতেই রঞ্জনবাবুর বাড়িতে চিঠির প্রতিলিপি ইচ্ছে করেই পাঠানো হয়নি।”
এ ব্যাপারে বিজয়বাবুর অবশ্য বক্তব্য, “আমরা ডাকে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। কোনও কারণে হয়তো পৌঁছয়নি।” ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান আনসার আলি সাহানার সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। টেলিফোনে ব্যাঙ্কের এক মহিলা কর্মী বলেন, “রঞ্জনবাবুর টাকা যথাসময়েই ফেরত দেওয়া হবে। রঞ্জনবাবুকেও সেটা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।” ওই ব্যাঙ্ককর্মীর দাবি, “সমবায়ের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা এখনও পেরোয়নি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.