ছাড়া পেয়ে গেল অপহরণের ঘটনায় অভিযুক্তেরা। অপহৃতের ভাগ্যই এখন ঝুলছে পুলিশের হাতে।
আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে না-পেরে মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতায় পালিয়ে এসেছিলেন এক অর্থলগ্নি সংস্থার কর্ণধার। ওই সংস্থার কিছু এজেন্ট তাঁকে ‘অপহরণ’ করে মুর্শিদাবাদেই ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। পথেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেল গোটা দলটি। শুক্রবার সকালে অপহরণের অভিযোগে প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ ওই সংস্থার ন’জন এজেন্ট ও গাড়িচালককে গ্রেফতার করে। অপহরণকারীদের কবল থেকে ছাড়া পেলেও মুর্শিদাবাদ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় অপহৃতকে। ওই জেলা
মহম্মদ মুস্তাকিন। |
পুলিশ সূত্রের খবর, মহম্মদ মুস্তাকিন নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য দিকে, অপহরণে অভিযুক্তদের এ দিন আলিপুর পুলিশ আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক ধৃতদের জামিন মঞ্জুর করেন।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, মহম্মদ মুস্তাকিন মুর্শিদাবাদের রানিতলা থানা এলাকার বেলিপুর গ্রামের বাসিন্দা।
ওই অঞ্চল থেকে এজেন্ট মারফত কয়েক লক্ষ টাকা তুলেছিলেন তিনি। গত ২২ এপ্রিল লালগোলা থানায় মুস্তাকিনের বিরুদ্ধে আমানতকারীদের টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন অপূর্ব শীল নামে এক এজেন্ট। পুলিশ জানায়, থানায় অভিযোগ জমা পড়েছে জানতে পেরে গা ঢাকা দেন সংস্থার কর্ণধার। অপূর্ব ও তাঁর মতো আরও কয়েক জন এজেন্ট মুস্তাকিনের খোঁজে মুর্শিদাবাদ ও লাগোয়া জেলাগুলিতে তল্লাশি শুরু করেন। সম্প্রতি তাঁরা জানতে পারেন, ওই ব্যক্তি নিউ গড়িয়া এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে আছেন। দিন দু’য়েক আগে মুর্শিদাবাদ থেকে টাটা সুমো ভাড়া করে অপূর্ব ও আরও আট জন এজেন্ট সোজা কলকাতায় আসেন এবং ওই এলাকায় গিয়ে মুস্তাকিনের খোঁজ শুরু করেন। |
পুলিশ জানায়, এ দিন সকালেও গাড়িতে চেপে শহরের নানা এলাকায় মুস্তাকিনের খোঁজ করছিলেন এজেন্টরা। এ দিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ সার্ভে পার্ক থানা এলাকায় বাইপাসের ধারে এজেন্টরা দেখতে পান মুস্তাকিন দুই ব্যক্তির সঙ্গে হেঁটে যাচ্ছেন। অভিযোগ, এজেন্টরা তখনই মুস্তাকিনকে জোর করে গাড়িতে তোলেন এবং মুর্শিদাবাদের দিকে রওনা হন। কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, লালবাজারের ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমে সাড়ে ৭টা নাগাদ একটি টেলিফোন করে জানানো হয়, ওই ব্যক্তিকে জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাচ্ছে একদল যুবক। গাড়ির নম্বরও তাঁরা জানিয়ে দেন। ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকেও সব থানা এবং ট্রাফিক গার্ডে সেই খবর জানিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ জানায়, সায়েন্স সিটির কাছে পরমা আইল্যান্ডের সামনে এক ট্রাফিক সার্জেন্ট এবং এক কনস্টেবল ওই গাড়িটিকে চিনতে পেরে দাঁড় করান এবং তল্লাশি শুরু করেন। চালক-সহ মোট ১১ জনকে প্রগতি ময়দান থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের দাবি, প্রাথমিক জেরায় ধৃতেরা স্বীকার করেন, টাকা ফেরত না পেয়ে বাধ্য হয়ে তাঁরা মুস্তাকিনকে গ্রামে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। এজেন্টদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, তাঁদের লক্ষ্য ছিল, যে কোনও ভাবে হোক মুস্তাকিনকে আমানতকারীদের হাতে দেওয়া। |