কিম ডেভির প্রত্যর্পণ ঘিরে তৈরি হওয়া তিক্ততাকে পাশে সরিয়ে রেখেই ভারত এ বার ডেনমার্কের সঙ্গে বাণিজ্য ও অন্যান্য সম্পর্ক বাড়াবে। মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি সম্প্রতি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত জুলাই মাসে ডেনমার্ক তাদের শীর্ষ আদালতে ডেভির প্রত্যর্পনের মামলাটি তুলতে অস্বীকার করার পরই কোপেনহেগেনের সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক কমিয়ে দিয়েছিল নয়াদিল্লি। ভারতের যুক্তি ছিল, এক জন সন্ত্রাসবাদীকে আশ্রয় দেওয়ার ঘটনা যে কোনও সভ্য দেশের পক্ষেই অবমাননাকর। কিন্তু ডেনমার্ক এতে পাল্টা যে অভিযোগ আনে যে ভারতই বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে না। ডেনমার্ক সরকার এখন ডেভির প্রত্যর্পণের জন্য ভারতকে নতুন করে আবেদন করতে বলেছে। সম্প্রতি সে দেশের আইন মন্ত্রকের ডেপুটি পার্মানেন্ট সেক্রেটারি জেন্স ক্রিশ্চিয়ানের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল ভারতে এসে এই আশ্বাসও দিয়েছে যে, তাদের দেশ প্রক্রিয়াটি দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করবে।
এই পরিস্থিতিতে প্রত্যর্পণ নিয়ে চাপানউতোর চালিয়ে না গিয়ে বরং বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ানোকেই বেশি লাভজনক মনে করছে মনমোহন সরকার। ডেনমার্ক বিশ্বের অন্যতম বড় অর্থনীতির দেশ। গড় জাতীয় উৎপাদন ৩৩ হাজার কোটি ডলারের বেশি। ভারতের প্রত্যক্ষ লগ্নিকারী দেশগুলির তালিকায় ১৯ নম্বরে। তাদের ৮০টি সংস্থা বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করছে। দেশের ওষুধ শিল্প, দূষণ, শক্তি ক্ষেত্রে ডেনমার্কের বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু গত দু’বছর ধরে এই বিনিয়োগ এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ক্রমশই কমছে। সরকার তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ডেনমার্কের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। ডেভি-জট কাটানোর চেষ্টা হবে আলাদা ভাবে।
ডেভি প্রশ্নে ডেনর্মাকের অভিযোগ ছিল, উচ্চতর আদালতে আবেদন করার মেয়াদ যথেষ্ট বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু বাড়ানো মেয়াদ ফুরনোর ৭ দিন আগে বন্দি আইনের নানা দিক সম্পর্কে জানতে চায় ভারত, যেগুলি তাদের অজানা থাকার কথা নয়। ভারতের জেলে অত্যাচার, কম খাবার দেওয়া, চিকিৎসায় অব্যবস্থার মতো অভিযোগও এনেছিল ডেনমার্ক।
এখন ফের প্রত্যর্পণ নিয়ে আবেদনের সুযোগ তৈরি হওয়ায় নিজের অবস্থান বদলাচ্ছে ভারতও। |