ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র স্মরজিৎ বসুর মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে পুলিশি গাফিলতির অভিযোগ আগেই উঠেছিল। তাই নিয়ে চাপে থাকা বীরভূম পুলিশ এ বার নড়েচড়ে বসল। শুক্রবার দুপুরে ঘটনার সতেরো দিন পরে তদন্তে এসে ওই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার পুনর্গঠন করে দেখলেন খোদ বীরভূমের পুলিশ সুপার মুরলীধর শর্মা। ওই সময়ে উপস্থিতি ছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষ, দমকল, ছাত্র ও স্থানীয় বাসিন্দারা। স্মরজিতের পরিবারের পক্ষে থেকেও একজন উপস্থিত ছিলেন। মুরলীধরবাবু বলেন, “সে দিন ঠিক কী হয়েছিল, তা জানতেই তদন্তে গিয়েছিলাম। ওই মৃত্যুর ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।”
গত ৬ এপ্রিল সিউড়ির তিলপাড়ার কাছে একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয়েছিল স্মরজিৎ বসু নামে সিউড়ি বিই কলেজের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রের মৃতদেহ। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছিল, ওই দিন দুপুরে কয়েক জন সহপাঠীর সঙ্গে স্নানে গিয়েছিলেন স্মরজিৎ। বাকিরা বিকালে ফিরে এলেও ফেরেননি স্মরজিৎ। পরে দমকল এসে ওই পুকুর থেকে তাঁর দেহটি উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে মৃতের পরিবারের পক্ষে থেকে প্রথম থেকেই দাবি করা হচ্ছিল, তাঁদের ছেলেক খুন করা হয়েছে। গত ১৩ মে পাঁচ সহপাঠীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগও দায়ের করেন স্মরজিতের বাবা চন্দ্রনাথ বসু। এমনকী স্মরজিতের মৃত্যুর পেছনে হস্টেল ওয়ার্ডেন আব্দুল মালিকের ভূমিকা নিয়েও অভিযোগ করেন স্মরজিতের পরিবারের। কিন্তু খুনের অভিযোগের এতদিন পরেও পুলিশ ওই ঘটনায় কাউকে ধরেনি। তাই মামলায় পুলিশি গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে স্মরজিতের পরিবার। এই নিয়ে তাঁরা কোচবিহারের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারেরও দ্বারস্থ হয়েছেন। মৃতের পরিবারের পাশে দাঁড়ায় বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনও। এই নিয়ে বীরভূম পুলিশের উপরে একটা চাপ তৈরি হচ্ছিল। এ দিন তদন্তে খোদ পুলিশ সুপারের নেমে পড়া, সে দিকেই ইঙ্গিত করছে বলে জেলা পুলিশেরই একাংশের দাবি। তাঁদের আরও দাবি, ওই ঘটনার প্রথম তদন্তকারী অফিসারকে (যাঁর পদমর্যদা ছিল সাব ইন্সপেক্টর) সরিয়ে দিয়ে ইন্সপেক্টর পদমর্যদার এক আধিকারিকের হাতে তদন্ত ভার তুলে দেওয়া হয়েছে। বীরভূমের পুলিশ সুপার অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
|