তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দেওয়া সম্ভাব্য প্রশ্নাবলি বা সাজেশনের ২০টির মধ্যে পরীক্ষায় এসেছে ৬টি। এসএফআই সাজেশন দিয়েছিল ২৪টি প্রশ্নের। তার মধ্যে কিন্তু মিলেছে ৯টি।
এর পরেই গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন দাবি করেছে, কয়েকজন শিক্ষকের সাহায্যে এসএফআই ‘প্রশ্ন ফাঁস’ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বৃহস্পতিবার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এসএফআইয়ের অবশ্য দাবি, প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ অবান্তর।
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়েছে ২০ মে থেকে। তার পাঁচ-ছ’দিন আগে থেকেই এসএফআই ও টিএমসিপি দু’পক্ষই সংগঠনের পক্ষ থেকে রীতিমতো প্রশ্নের আকারে কয়েকটি বিষয়ে সাজেশন তৈরি করে জেরক্স বিলি করেছিল। তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে পরোক্ষে রেষারেষিও ছিল। তবে প্রথম কয়েক দিনের পরীক্ষার সাজেশন কেউই দেয়নি। এই দিন ছিল তৃতীয় বর্ষের ইতিহাস সপ্তম পত্রের (সাধারণ) পরীক্ষা। তার সাজেশন তৈরি করেছিল দু’পক্ষই। পরীক্ষার শুরুর কিছু ক্ষণের মধ্যেই রটে যায়, এসএফআইয়ের সাজেশন থেকে বেশি প্রশ্ন এসেছে। সেই গুঞ্জনই কিছু ক্ষণের মধ্যে আন্দোলনেরও আকার নেয়।
টিএমসিপি-র অভিযোগ অবশ্য বেশ গুরুতর। তাদের জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় এবং কিছু কলেজের কয়েক জন বাম মনোভাবাপন্ন শিক্ষকই এসএফআইকে প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে। আমরা তদন্ত চেয়েছি।” তাঁর দাবি, পরীক্ষার প্রশ্নের সঙ্গে এসএফআইয়ের সাজেশনের প্রশ্নের ভাষারও মিল রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার শ্যামসুন্দর বৈরাগ্য জানান, প্রশ্নপত্রে মোট ১৮টি প্রশ্ন ছিল। তার মধ্যে ৯টি ছিল এসএফআইয়ের বিলি করা সাজেশনের প্রশ্নের মধ্যেও। ৯টি প্রশ্নের মোট নম্বর ৯০। তিনি বলেন, “বিষয়টি অস্বাভাবিক ঠেকছে। তাই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ামক সনাতন দাস তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনিও বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।” এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি অনিমেষ সিংহের দাবি, “প্রশ্ন ফাঁস কোথায় হল? ২৪টি প্রশ্নের সাজেশন দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে ৯টি মিলেছে। এমনটাই তো স্বাভাবিক। তাই কেন তদন্ত হবে তা বোধগম্য হচ্ছে না।” তাঁর দাবি, তাঁরা অভিজ্ঞ শিক্ষকদের সাহায্য নিয়েছেন। কিন্তু কোনও শিক্ষক অন্যায় ভাবে তাঁদের সাহায্য করেননি।
কিন্তু ছাত্র সংগঠন কেন পরীক্ষার সাজেশন তৈরি করবে? মালদহ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রভাস চৌধুরী বলেন, “সব ছাত্র সংগঠনই চায় প্রভাব বাড়াতে। তাই দু’পক্ষই পাল্লা দিয়ে সাজেশনও তৈরি করছে আজকাল। সেই রেষারেষিরই ফল আজকের ঘটনা।”
|