স্নাতক স্তরে তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগে থেকে নমুনা প্রশ্নপত্রের ‘সাজেশন’ তৈরি করে বিলি করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং এসএফআইয়ের বিরুদ্ধে। ওই সাজেশন সংগ্রহে জন্য মালদহের বিভিন্ন কলেজে পোস্টারও দেওয়া হয়। তা জানাজানি হলে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতৃত্ব রবিবার তড়িঘড়ি পোস্টার তুলে সাজেশন বিক্রি বন্ধ করে দেন।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদ জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ দাস কলেজে পোস্টার দিয়ে সাজেশন বিলি করার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “বদনাম করার জন্য আমাদের সংগঠনের নামে সাজেশন অন্য কেউ বিলি করছে। বিষয়টি নজরে আসতে বিলি বন্ধ করা হয়। পোস্টার ছেঁড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।” এসএফআই জেলা সভাপতি অনিমেষ সিংহ বলেন, “অনেক দিন ধরে সংগঠনের তরফে পরীক্ষার আগে সাজেশন বিলি হয়। তা দেখে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সাজেশন বিলি শুরু করে।”
সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে মালদহ গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা। বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, দুই ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে অন্তত এক সপ্তাহ আগে থেকে নমুনা প্রশ্নপত্রের সাজেশন তৈরি করে ছাপিয়ে বিলি করা হয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি ওই অভিযোগ না মানলেও পরীক্ষার্থীর একাংশের অভিযোগ, পাঁচ দিন আগে মালদহ কলেজের দেওয়ালে সংগঠনের কলেজ ইউনিটের প্যাডে পোস্টার দিয়ে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের সাজেশন সংগ্রহ করতে বলা হয়। তাঁদের জানানো হয়, মালদহ কলেজ সংলগ্ন জেরক্সে দোকান থেকে ওই সাজেশন বিনা পয়সায় মিলবে। তবে জেরক্স করার খরচ লাগবে। তা দেখে কলেজ সংলগ্ন ওই দোকানে পরীক্ষার্থীরা ভিড় করেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মালদহ কলেজ ইউনিটের ইনচার্জ কৌশিক দাস পরীক্ষার্থীদের ওই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “পরীক্ষার আবেদনপত্র জমার কাজে ব্যস্ত থাকায় পোস্টার ছেঁড়া যায়নি। আমরা সাজেশন বিলি করিনি।”
কিন্তু রবিবারেও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তৈরি সাজেশন কিনতে অনেক পরীক্ষার্থী মালদহ কলেজের পাশে জেরক্সের দোকানে ভিড় জমায়। ঘটনার কথা শোনার পরে তৃণমূল কলেজ শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান মালদহ কলেজের শিক্ষক নরেশ রায় বলেন, “গুরুতর অভিযোগ। যে সাজেশন বিলি করা হচ্ছে সেখান থেকে প্রশ্ন না থাকলে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হবে। আবার সাজেশনের সঙ্গে আসল প্রশ্নপত্রের মিল খুঁজে পাওয়া গেলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠবে।” যদিও ওই ঘটনায় এমন কিছু অন্যায় দেখতে পাচ্ছেন না জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। তিনি বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার জন্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদ যদি সাজেশন দিয়ে থাকে তাতে দোষের কী আছে? ওঁরা তো ভাল কাজই করেছে।” |