হাসপাতালে অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে বিতর্কে জড়ালেন রাজ্যের এক মন্ত্রীর ছেলে। বুধবার রাতে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটেছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, বালুরঘাটের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর ছেলে আইনজীবী ঋতব্রত চক্রবর্তী রাতে সুপারের কাছে অব্যবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই ঘটনায় সুপার বুদ্ধদেব মণ্ডলের নামে এক অস্থায়ী কর্মীকে চড়, কান ধরে ওঠবোস করানোর অভিযোগ ওঠে।
ওই কর্মীকে নিগ্রহের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পাহারা ও সাফাইয়ে দায়িত্বে থাকা অস্থায়ী কর্মী কর্মবিরতির ডাক দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। তাঁরা সুপারের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ভারপ্রাপ্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোক বিশ্বাস পরিস্থিতি সামাল দেন। সুপারের হয়ে তিনি দুঃখপ্রকাশ করে ভবিষ্যতে এই ঘটনা ঘটবে না বলে আশ্বাস দিলে বেলা ১২টা নাগাদ বিক্ষোভকারীরা কাজে ফেরেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোকবাবু বলেন, “সুপার ওই কর্মীর গায়ে হাত দিয়ে অন্যায় করেছেন। সুপার ও নিগৃহীত কর্মীকে লিখিত জানাতে বলা হয়েছে। জেলার স্বাস্থ্য কমিটির বৈঠকে এই নিয়ে আলোচনা হবে।” হাসপাতাল সূত্রের খবর, মন্ত্রী শঙ্করবাবুর ছেলে ঋতব্রতবাবু পেশায় আইনজীবী। তাঁরই সহকর্মী, আর এক আইনজীবী প্রতুল মৈত্র গত বুধবার দুপুরে অসুস্থ হয়ে পড়ে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি হন। ৯টা নাগাদ মন্ত্রিপুত্র পরিচিত কয়েক জনকে নিয়ে হাসপাতালে সহকর্মীর খোঁজ নিতে যান। নির্দিষ্ট সময়ের পরে গেট খোলা রাখায় বহিরাগতর আনাগোনা, জরুরি বিভাগের বারান্দায় সাইকেল, বাইক পার্কিং-সহ হাসপাতালের তিন তলার করিডরে মদের বোতল দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ঋতব্রতবাবু।
হাসপাতাল সুপার বুদ্ধদেব মণ্ডল বলেন, “রাতে হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে মন্ত্রীপুত্র আমাকে দীর্ঘক্ষণ জেরা করেন। মন্ত্রীর নির্দেশে তিনি এসেছেন দাবি করলেও পরে অস্বীকার করেন। তবে কর্মীকে মারা অন্যায় হয়েছে।” ঋতব্রতবাবু এ দিন বলেন, “রোগীর পরিষেবার স্বার্থে নজরদারি বাড়ানো-সহ আরও কিছু পদক্ষেপ করার জন্য এক জন করদাতা হিসাবে সুপারকে কিছু পরামর্শ দিয়েছি। প্রভাব খাটানোর ব্যাপার নেই।” কিছু কর্মীর অভিযোগ, বুদ্ধদেববাবুর নামে আগেও অস্থায়ী মহিলা কর্মীকে চড় মারার অভিযোগ ওঠে। মাস দুয়েক আগে তাঁকে কল্যাণী হাসপাতালের সুপারের পদে বদলি করা হয়। পরিবর্ত সুপার না আসায় তিনি বালুরঘাটে রয়ে গিয়েছেন। |