হাসপাতালের স্টোররুম থেকে ওষুধ পাচারের ব্যাপারে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেন কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। একটি বেনামি চিঠিতে এই অভিযোগ পাওয়ার পরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গড়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সেই কমিটি হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপারকে রিপোর্ট দেয়। কমিটির সুপারিশ মতোই কর্তৃপক্ষ পুলিশে অভিযোগ করেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ মে একটি বেনামি চিঠি পান ভারপ্রাপ্ত সুপার তাপস সরকার। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, গত ১০ মে বিকেলে হাসপাতালের স্টোর রুম থেকে দু’টি সাদা বস্তায় ওষুধ পাচার করা হয়েছে। সেই সময়ে সেখানে দুই ওষুধ সরবরাহকারী ও হাসপাতালের কর্মী পার্থবাবু হাজির ছিলেন বলে অভিযোগ। চিঠি পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গড়েন। সিসিটিভি-র ফুটেজ জোগাড় করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এ দিন তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্টে জানায়, ১০ মে বহিরাগত এক ভ্যানচালক ফাঁকা ভ্যান নিয়ে স্টোরের সামনে এসে দাঁড়ায়। তার পরে দু’টি বস্তা ভর্তি জিনিস ভ্যানে চাপিয়ে চলে যায়। ভ্যানচালক বহিরাগত এবং ঘটনার সময়ে যে দুই ওষুধ সরবরাহকারী সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ, তাঁরাও বহিরাগত। তাই তদন্ত কমিটি তাঁদের জেরা করতে পারবে না জানিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে পুলিশে অভিযোগ জানানোর সুপারিশ করে। ভারপ্রাপ্ত সুপার তাপসবাবু বিষয়টি নিয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও কাটোয়ার মহকুমাশাসকের সঙ্গে আলোচনার পরে সন্ধ্যায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন।
তদন্ত কমিটির এক সদস্যের দাবি, “সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, কিছু একটা যে ঘটেছে তা পরিষ্কার। খাতায়-কলমে স্টোররুমের হিসেবে কোনও গরমিল মেলেনি। তাই বহিরাগতদের জেরা করা জরুরি।” তদন্ত কমিটির একটি সূত্রে জানা যায়, স্টোরকিপার প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তাঁর কিছু জানা নেই। হাসপাতালের কর্মী পার্থপ্রতিম দত্ত দাবি করেছেন, ওই দুই বস্তায় ভাঙাচোরা জিনিসপত্র বিক্রি করা হয়েছে। কিন্তু তদন্ত কমিটি প্রশ্ন তুলেছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ভাঙাচোরা জিনিসই বা বিক্রি করা হল কেন। ভারপ্রাপ্ত সুপার তাপসবাবু বলেন, তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। কাটোয়ার মহকুমাশাসর আর অর্জুন জানান, পুলিশকে তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। |