নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৭ একর সরকারি জমি দখলমুক্ত করল দার্জিলিং জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে শিলিগুড়ির মাটিগাড়া এলাকার চারটি জায়গা দখলমুক্ত করা হয়। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১৬ কোটি টাকা বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের নেতৃত্বে পুলিশি অভিযানে ওই জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে। তার মধ্যে একটি জমি দখল করে অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা একটি বিস্কুট কারখানা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। জেলাশাসকের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী বলেন, “শিলিগুড়ি এবং আশেপাশের এলাকায় ‘ল্যান্ড মাফিয়া’রা বিভিন্ন সরকারি জমি দখল করে বিক্রি করেছে। এমনকী ভূমি সংস্কার বিভাগের বিভিন্ন অফিসে সঙ্গে যোগসাজোশ করে ভুয়ো নথি, দলিল তৈরি করে বহু কোটি টাকার জমি তারা নিয়ে নিয়েছে। সরকারি উদ্যোগে সেই সমস্ত জমি উদ্ধার করার কাজ শুরু হয়েছে। এই প্রক্রিয়া চলবে।”
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোথাও নদীর চর দখল করে বিক্রি করা হয়েছে। কোথাও বাড়ি তৈরি হয়েছে। মাটিগাড়া থেকে বাগডোগরা যাওয়ার রাস্তার দুই দিকে অনেক খাস জমি দখল হয়ে গিয়েছে। ওই সমস্ত ক্ষেত্রে জমিতে অবৈধ নির্মাণ থাকলে তা ভেঙে জমি উদ্ধার করা হচ্ছে। রাজগঞ্জ এলাকায় জমির ‘ডিজিটাল ম্যাপ’ তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। তাতে কোথায় কত জমি রয়েছে তার বিস্তারিত নথি থাকবে।
প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, মাটিগাড়া এলাকার প্রচুর সরকারি জমি ল্যান্ড মাফিয়াদের দখলে চলে গিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তা খতিয়ে দেখতে সক্রিয় হন দার্জিলিঙের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। নথিপত্র ঘেঁটে তিনি দখল হয়ে যাওয়া কিছু সরকারি জমির তালিকা তৈরি করেন। সেই মতো এ দিন প্রথম দফায় অভিযান চালান হয় মাটিগাড়ার চারটি এলাকায়। তার মধ্যে বারোঘরিয়ায় ৩ একর, বেনিয়াখাঁড়িতে প্রায় ৮ একর, পাথরঘাটা এলাকায় প্রায় ৬ একর এবং পাঁচকেলগুড়িতে ৫ বিঘা সরকারি জমি দখল মুক্ত করা হয়। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “দখল হয়ে যাওয়া সরকারি জমির তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই মতো জমিগুলি উদ্ধার করতে অভিযান চলবে।”
এ দিন অভিযানের সময় দার্জিলিঙের অতিরিক্ত জেলাশাসক গোপাল লামাকে বাধা দেন বিস্কুট কারখানার মালিকপক্ষ। মাটিগাড়া থানার পুলিশের সাহায্যে গোপালবাবু তাদের হঠিয়ে বিস্কুট কারখানা গুড়িয়ে দেন। কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে কয়েক জনকে আটক করা হলেও পরে থানায় নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। গোপালবাবু বলেন, “এই অভিযানের মাধ্যমে জবরদখলকারীদের সতর্ক বার্তা পাঠানো হচ্ছে। বেআইনি নির্মাণ বা সরকারি জমি দখল বরদাস্ত করা হবে না। এদিন অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক মাণিক সরকার, মাটিগাড়া থানার ওসি সঞ্জয় ঘোষ। শীঘ্রই মাটিগাড়া এলাকায় আরও কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালানো হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। |