|
|
|
|
মাওবাদী এলাকার উন্নয়নে বরাদ্দ অর্ধেক টাকাই পড়ে
বরুণ দে • মেদিনীপুর |
বরাদ্দের অর্ধেক টাকাই পড়ে রয়েছে। এগোচ্ছে না কাজ। এমনই অবস্থা কেন্দ্রীয় প্রকল্প ‘ইন্টিগ্রেটেড অ্যাকশন প্ল্যান’-এর।
মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকার উন্নয়নেই বিশেষ এই প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্র। এ রাজ্যের জঙ্গলমহলও টাকা পেয়েছে। বরাদ্দ অর্থে তৈরি হচ্ছে কমিউনিটি হল, মার্কেট শেড, অঙ্গনওয়াড়ি, সেচ-পাম্প প্রভৃতি। তবে কাজের গতি আশানুরূপ নয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০১২-’১৩ আর্থিক বছরে ৬৪০টি প্রকল্প হওয়ার কথা ছিল। হয়েছে ২৫৩টি। বরাদ্দ ৩০ কোটি টাকার মধ্যে খরচ হয়েছে ১৪ কোটি ৬৬ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা। মঙ্গলবারই এই প্রকল্পের খোঁজ নিয়েছেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত। জেলার উন্নয়ন ও পরিকল্পনা আধিকারিক প্রণব ঘোষের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে চেয়েছেন কোন কোন প্রকল্পের কাজ এগোতে সমস্যা হচ্ছে, সমস্যাগুলো ঠিক কী।
সারা দেশে মাওবাদী অধ্যুষিত বলে পরিচিত ৬০টি জেলা আইএপি-র আওতায় রয়েছে। এ রাজ্যে জঙ্গলমহলের তিন জেলা পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুর এই প্রকল্পে অর্থ পায়। কেন্দ্রীয় সরকারের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে, চোখে দেখা যায় এমন কাজই আইএপিতে করতে হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রকল্প চালু হয় ২০১০ সালে। শুরু থেকেই বাড়তি নজর রেখেছে সরকার। আইএপি-র কাজ খতিয়ে দেখতে জেলায় এসেছেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী জয়রাম রমেশের ব্যক্তিগত সচিব আর ভিনিল কৃষ্ণ। দফায় দফায় জেলা সফর করেছেন রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) জয়া দাশগুপ্তও। গিয়েছেন লালগড়, গোয়ালতোড়-সহ নানা এলাকায়। সবদিক থেকেই প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ। বহু মানুষ উপকৃতও হয়েছেন। যে এলাকায় সেচের জল পৌঁছত না, সেখানে পাম্প তৈরি করা হয়েছে। হয়েছে কমিউনিটি হল, বাজারের ছাউনি-সহ নানা প্রয়োজনীয় কাজ। কিন্তু কাজে যথেষ্ট গতি না থাকায় অনেক প্রত্যন্ত এলাকাই বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০১০-’১১ আর্থিক বছরে এই প্রকল্পে ৬৪৩টি প্রকল্প হওয়ার কথা ছিল। সবগুলোর কাজই সম্পূর্ণ হয়েছে। ২০১১-’১২ অর্থবর্ষেও ৮৬৯টি প্রকল্পের সবকটিই করা গিয়েছে। কিন্তু ২০১২-’১৩ আর্থিক বছরে ৬৪০টি প্রকল্পের মধ্যে হয়েছে মাত্র ২৫৩টি কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে।
প্রশাসন অবশ্য এ নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নয়। এক আধিকারিকের কথায়, “এ ক্ষেত্রে টাকা ফেরত যাওয়ার কোনও ব্যাপার নেই। আর যে সব প্রকল্প শেষ হয়নি, তার সবগুলিরই কাজ চলছে। দ্রুত কাজ শেষের চেষ্টা চলছে।” ওই আধিকারিকের আরও দাবি, “আইএপিতে জেলার পারফরম্যান্স আশানুরূপ।” এ ক্ষেত্রে গত তিন বছরের পরিসংখ্যান বিচার করছে প্রশাসন। হিসেবমতো এই তিন বছরে যে অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল, তার ৭৬.৮১ শতাংশই খরচ হয়েছে। আর যে সংখ্যক প্রকল্প হওয়ার কথা ছিল, তার ৮২.০১ শতাংশই সম্পূর্ণ হয়েছে। তবে বাস্তব হল গত আর্থিক বছরে কাজের গতি কমেছে। টাকা থাকা সত্ত্বেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যায়নি।
|
জেলায় আইএপি-র হাল |
মোট বরাদ্দ |
৮৫ কোটি |
এখনও পর্যন্ত খরচ |
৬৫ কোটি |
প্রকল্প হওয়ার কথা |
২,১৫২টি |
এখনও পর্যন্ত হয়েছে |
১, ৭৬৫টি |
|
|
|
|
|
|