|
|
|
|
নিখরচায় জয়েন্টের কোচিং, তবু মিলছে না তফসিলি ছাত্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
গরিব তফসিলি ছাত্রছাত্রীদের জন্য নিখরচায় জয়েন্ট এন্ট্রান্সের কোচিংয়ের ব্যবস্থা করেছে সরকার। কিন্তু ছাত্র জুটছে না। ফলে ক্লাসও শুরু করা যাচ্ছে না। এমনটাই ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর।
কেন ছাত্র মিলছে না? প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে সদুত্তর মেলেনি। তফসিলিরা অবশ্য মনে করছেন, প্রচারের অভাবেই এই হাল। অভিযোগ, সরকারের উন্নয়ন খতিয়ান প্রচার করতে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মেলা হচ্ছে, অথচ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনও প্রচার নেই। মাঝি মাডওয়া জুয়ান গাঁওতার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রবীর মুর্মু বলেন, “তফসিলিদের উন্নয়ন সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য একটি কমিটিও রয়েছে। যে কমিটির সদস্য আমরাও। আমাদেরও কোচিংয়ের কথা জানানো হয়নি।” লোধা শবর কল্যাণ সমিতির জেলা সম্পাদক বলাই নায়েকেরও বক্তব্য, “ছাত্রছাত্রীরা না জানলে ভর্তি হবে কী করে?” এ ব্যাপারে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের জেলা প্রকল্প আধিকারিক রাহুল নাথ কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, লিফলেট ছড়িয়ে বিভিন্ন জায়গায় প্রচারের ব্যবস্থা হয়েছে। তা সত্ত্বেও ছাত্র না মেলায় ভর্তি ও ক্লাসের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।
তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের গরিব এবং মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা যাতে ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুবিধা পায় সে জন্যই জয়েন্ট এন্ট্রান্সের বিশেষ এই কোচিংয়ের ব্যবস্থা করেছে সরকার। সব জেলাতেই বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে এই বন্দোবস্ত করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে এ রকম কোচিং সেন্টার রয়েছে দু’টি। একটি মেদিনীপুর শহরের কেরানিতলায় শ্রী শ্রী মোহনানন্দ বিদ্যামন্দিরে, অন্যটি ঝাড়গ্রামের কুমুদকুমারী ইন্সটিটিউশনে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৪০ জন করে মোট ৮০ জন পড়ুয়া এই সুবিধা পেতে পারে। কোচিং সেন্টারে যাতায়াতের জন্য ছাত্রছাত্রীদের মাসে ৩০০ টাকা করে স্টাইপেন্ডও দেওয়া হয়। এত সুযোগ-সুবিধে দেওয়ার পরেও গত বছর মাত্র ১৭ জন ছাত্র কোচিং নিয়েছিলেন। মেদিনীপুর কেন্দ্রে ১১ জন ও ঝাড়গ্রামে ৬ জন। এ বারও অবস্থা ভাল নয়। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে কোচিংয়ের জন্য আবেদনের শেষ দিন ঠিক করা হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত মেদিনীপুর কেন্দ্রে ২০ জন আবেদন জমা দিয়েছে। ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে আবেদন পড়েছে ১৫টি। ছাত্র না মেলায় আবেদনের সময়সীমা বাড়িয়ে জুন করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, বাত্সরিক ২ লক্ষ টাকার কম পারিবারিক আয় হলে ও তফসিলি পড়ুয়াটি মাধ্যমিকে ৬০ শতাংশ নম্বর পেলেই নিখরচায় এই কোচিংয়ের সুবিধা পাবে। যেহেতু জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার আগে ১০-১১ মাস কোচিং দেওয়া হয়, তাই একাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরাই এই সুযোগ পান। নামী শিক্ষকদের দিয়ে কোচিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। তাঁদের সাম্মানিক দেওয়া হয়। কিন্তু এত আয়োজন কার্যত বিফলে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে পদক্ষেপ করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। |
|
|
|
|
|