ভারতীয় ক্রিকেটের আদ্যোপান্ত জেন্টলম্যানের দলেই যে খুঁজে পাওয়া যাবে আইপিএলের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারির বীজ, তা কখনও অবচেতন মনেও ভেবেছেন তিনি রাহুল দ্রাবিড়? ভাবতে পারেননি বলেই সেই যন্ত্রণা কুরে কুরে খাচ্ছে রাজস্থান রয়্যালস অধিনায়ককে। তাঁর তিন সতীর্থ গ্রেফতার হওয়ার পরপরই সাংবাদিক বৈঠকে এসে এই সংক্রান্ত একটা বিবৃতি পড়ে শুনিয়েছিলেন। কিন্তু মনের কথা বললেন এত দিনে এলিমিনেটরে সানরাইজার্স-কে হারিয়ে।
“খুব দুঃখ হচ্ছে, হতাশ লাগছে। রাগও হচ্ছে। আসলে অনেক আবেগ জড়িয়ে আছে তো,” আইপিএল সিক্স ফাইনাল থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে দাঁড়িয়েও বলছেন দ্রাবিড়। পাশাপাশি তাঁর গলায় বিষাদেরও সুর। “এই ক’দিন আমাদের খুব খারাপ কেটেছে। এমন অভিজ্ঞতা কোনও দিন হয়নি। প্রিয়জনকে হারানোর শোকের মতোই সমান যন্ত্রণার,” বলতে বলতে গলা ধরে এসেছে ক্রিকেট-যুদ্ধে জয়ী সৈনিকের। |
ইডেনে দ্রাবিড়ের ছবি তুলেছেন শঙ্কর নাগ দাস। |
যে ভাবে দলের ক্রিকেটাররাই টিমকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে এনেছেন, তাতে সেনাপতির তৃপ্ত হওয়ারই কথা। কিন্তু ক্রিকেট যেখানে বিপন্ন, সেখানে তৃপ্ত হওয়া কঠিন। দিল্লিতে গত কাল দ্রাবিড় নিজেও বলেছেন, “মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ম্যাচের পর একটা দিন পেয়েছিলাম আমরা। তার পরের দিনই সানরাইজার্স ম্যাচ ছিল। দলের সবাই হতাশ। সানরাইজার্স ম্যাচটার পর জয়পুরে ফিরে দু’দিন ছিলাম। ওই দু’দিন আমরা নিজেদের মধ্যে মন-প্রাণ খুলে কথা বলেছিলাম। কেউ কারও কাছে কিছু লুকোইনি। কোচিং স্টাফও ছিলেন আলোচনায়। গত কয়েক দিনে আমরা যে ভাবে নিজেদের আবেগ ভাগাভাগি করে নিয়েছি, সেটাই দারুণ।” তীব্র সঙ্কটে দলকে ফের এককাট্টা করতে যে সাপোর্ট স্টাফের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ ছিল, স্বীকার করতে ভুলছেন না দ্রাবিড়। বলছেন, “প্যাডি (আপটন) ও অন্য কোচিং স্টাফ ধীরে ধীরে পরিস্থিতি সামলেছেন। জানতাম আমাদের হাতে চার দিন রয়েছে। আবেগটাকে ঝেড়ে ফেলতে লাগল দু’দিন। তার পর আমরা টিমের উপর ফোকাস করলাম। ওই চারটে দিন সাপোর্ট স্টাফ যে ভাবে দলকে সামলেছে, তার জন্য কোনও ধন্যবাদ যথেষ্ট নয়। প্যাডির মতো এক জন এ বছর আমাদের দলের সঙ্গে রয়েছে, আমাদের সৌভাগ্য। এ রকম সময়ও দলের মধ্যে একটা সুন্দর আবহাওয়া গড়ে তোলায় ওঁর অবদান যথেষ্ট। আমরা যদি শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হই, সেটা একটা রূপকথার মতো হবে।”
|
কড়া নজরে সাজঘরও
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ইডেনে আজ, শুক্রবারের আইপিএল ম্যাচ ঘিরে শুধু মাঠে নয়, ক্রিকেটারদের ঘরেও জোরদার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ক্রিকেটারদের ঘরে দলের সদস্য ছাড়া আর কাউকেই ঢুকতে দেবে না পুলিশ। খেলোয়াড়েরা অন্য কাউকে নিজের ঘরে নিয়ে যেতে চাইলে অনুমতি দেওয়া হবে না। ক্রিকেটারদের বাইরে যেতে হলে পুলিশকে জানাতে হবে। যুগ্ম কমিশনার (সদর) জাভেদ শামিম বৃহস্পতিবার লালবাজারে বলেন, “১৩৫টি সিসিটিভি লাগানো হচ্ছে ইডেন জুড়ে। মোতায়েন করা হচ্ছে পাঁচ হাজার পুলিশ।” সাজঘরের সামনে যে-সব পুলিশকর্মী নিযুক্ত থাকবেন, তাঁরা ছাড়া অন্য পুলিশ সেখানে যেতে পারবেন না। খেলা চলাকালীন সাজঘরে খেলোয়াড় ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। পুলিশকর্তারা জানান, আবহাওয়া খারাপ থাকলে খেলা যদি পুরো শেষ না-হয়, তাতেও কোনও অসুবিধা নেই। শুক্রবার যেখানে খেলা শেষ হবে, শনিবার সেখান থেকেই ফের খেলা শুরু হবে। দর্শকেরা একই টিকিটে ঢুকতে পারবেন। |