বহু আকাঙ্খিত ডার্বি-গোলেও বাগানে সম্ভবত কপাল খুলছে না টোলগে ওজবের!
পরের মরসুমে তাঁকে সবুজ-মেরুন কর্তারা রাখবেন কি না, তা নিয়ে ডার্বি ম্যাচ শেষেও দ্বিধা রয়েছে।
টোলগের মতোই মরসুম শেষে মোহনবাগানেও নিকষ অন্ধকার! ফাইনাল না খেলেই ওডাফারা এয়ারলাইন্স ট্রফি পেয়েছেন হয়তো, কিন্তু তার প্রায় কোনও নম্বরই নেই। একই সঙ্গে মরসুমে এক বারও ইস্টবেঙ্গলকে হারাতে পারল না মোহনবাগান। স্বভাবতই সবুজ-মেরুন তাঁবু জুড়ে আফসোস আর দীর্ঘশ্বাস।
যদিও এ দিন হারের পর করিম খানিকটা অজুহাত দেওয়ার ভঙ্গিতেই বললেন, “আমার দলে চোট-সমস্যা ছিল, ফুটবলারদের ক্লান্তি ছিল। বিপক্ষ দলে এ সব কিছুই ছিল না।”
মোহনবাগান সমর্থকদের ক্ষোভের নিশানায় এখন টোলগে। এ দিন তিনি ম্যাচের শেষের দিকে গোল করে ব্যবধান কমালেও, তাঁর পারফরম্যান্সে ক্ষুব্ধ সমর্থকেরা গ্যালারি থেকে কটুক্তি করলেন দেড় কোটির স্ট্রাইকারকে। টোলগেকে সই করাতে গিয়ে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছিল বাগানকে। দিনের শেষে টোলগের পারফরম্যান্স সন্তুষ্ট করতে পারেনি বাগানের কর্তা থেকে শুরু করে সদস্য-সমর্থকদের। বৃহস্পতিবারের ডার্বিতে হারের পর টোলগেকে পরের মরসুমে না-রাখার গুঞ্জন এখন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। ম্যাচের পর টোলগে বলছিলেন, “পরের মরসুমে আমাকে ঘিরে আর কোনও বিতর্ক চাই না।” কথা শুনে যেন মনে হচ্ছিল এখন থেকেই নতুন বিতর্কের গন্ধ পাচ্ছেন তিনিও। বাগানের মরক্কান কোচও যে টোলগেকে নিয়ে উদাসীন তা তাঁর কথাতে পরিষ্কার, “টোলগে চেষ্টা করেছে, গোল পেয়েছে। ঠিক আছে।” |
সান্ত্বনা। করিম ও দেবদাস। বৃহস্পতিবার যুবভারতীতে। -বি: উৎপল সরকার |
গ্যালারি জুড়ে তখন লাল-হলুদ মশাল জ্বলছে, চিডি-পেন-মেহতাবরা কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দে ভাসছেন, সেই সময় রাগে গজগজ করতে করতে মাঠ ছাড়ছিলেন ওডাফা। তীব্র হতাশায় বলেও দিলেন, “ধুর, এ ভাবে কী আর ম্যাচ জেতা যায়! ঠিক করে কেউ পাস দিতে পারে না। আমরা খেলতেই পারিনি।”
রহিম নবি আবার আফসোস করছিলেন পুরো ম্যাচ না খেলতে পারার জন্য। চোট পাওয়ার পরও খেলতে চেয়েছিলেন নবি। কিন্তু করিম তাঁকে তুলে মেহরাজকে নামান। ক্ষোভে বোতলে লাথি মারতেও দেখা যায় নবিকে। পরে নবি বলেন, “পায়ে আমার ভাল রকম ব্যথা রয়েছে। খেলা সম্ভব ছিল না। চোট পাওয়ার হতাশা থেকেই বোতলে লাথি মেরেছিলাম। কোচের ওপর রাগ করে নয়।” যদিও ইচেকে নামানো এবং নবিকে তুলে নেওয়া নিয়ে এক কর্তার সঙ্গে ড্রেসিংরুমে করিমের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে বলেও শোনা যাচ্ছে।
ডার্বি-যুদ্ধের পর সবুজ-মেরুন শিবিরের এই কোলাজগুলোই বলে দিচ্ছিল হারের পর বাগানের যন্ত্রণার কথা।
হারের বোঝা কাঁধে নিয়েও অবশ্য টোলগে-ওডাফারা বিপক্ষ কোচকে জানালেন বিদায়ী শুভেচ্ছা। “মর্গ্যানের জন্য আমার অনেক শুভেচ্ছা রইল,” বললেন লাল-হলুদ কোচের প্রাক্তন ছাত্র টোলগে। আর ওডাফা বললেন, “মর্গ্যান খুব ভাল কোচ। ইস্টবেঙ্গলকে অনেক সাফল্য এনে দিয়েছে ও।”
|