|
|
|
|
জেএমএম-এর সঙ্গে জোটই কংগ্রেসের লক্ষ্য |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি ও রাঁচি |
লোকসভা ভোটের আগে শিবু সোরেনের সঙ্গে ঝাড়খণ্ডে সরকার গঠনের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব নিয়েও শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে এলেন রাহুল গাঁধী। কেননা দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যের আট বিধায়কের বিরুদ্ধে মামলা শুরু করার জন্য আজই রাজ্যপাল সৈয়দ আহমেদের কাছে অনুমতি চেয়েছে সিবিআই। এবং সেই আট বিধায়কের মধ্যে কংগ্রেসেরও কয়েকজন রয়েছেন। কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, আপাতত সেই অস্বস্তি থেকে বাঁচতেই সরকার গঠনের প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে বাধ্য হল হাইকম্যান্ড।
মজার ঘটনা হল, গত কাল রাতে ইউপিএ-র বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান উপলক্ষে নৈশভোজে জেএমএম নেতা শিবু সোরেন এবং তাঁর পুত্র হেমন্ত সোরেনকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাঁরা উপস্থিত না থাকলেও জেএমএম-এর রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জীব কুমার নৈশভোজে হাজির হন। তাঁকে হাত ধরে নিয়ে গিয়ে সনিয়া-রাহুলের টেবিলে বসান সংসদ-বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রাজীব শুক্ল। কংগ্রেস-জেএমএম সেই সখ্য থেকে স্বাভাবিক ভাবেই সরকার গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা গতি পায়। তা ছাড়া, এ ব্যাপারে আলোচনার জন্য আগামী কাল, শুক্রবার দিল্লিতে ঝাড়খণ্ডের সদ্যনিযুক্ত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুখদেব মাহাতো-সহ রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও ডেকেছেন রাহুল। সর্বোপরি আজ সকালে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য রাঁচিতে বলেন, “রাজ্যে বিকল্প সরকার তৈরি হওয়াটা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। তিন-চার দিনের ভিতরেই সব বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।” এত কিছুর পর, আজ দুপুরে আট বিধায়কের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য সিবিআই রাজ্যপালের অনুমতি চাওয়ার পরেই থমকে যায় সব প্রক্রিয়া। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের শীর্ষ সূত্রে বলা হয়, সম্প্রতি ঝাড়খণ্ড থেকে রাজ্যসভার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঘুষ কাণ্ডের যে অভিযোগ উঠেছিল তার তদন্ত করে সিবিআই আট জন বিধায়কের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতি চেয়েছে। এর মধ্যে কংগ্রেসের কয়েকজন বিধায়ক রয়েছে। এমনিতেই জাতীয় স্তরে দুর্নীতি প্রশ্নে কোণঠাসা কংগ্রেস। এর পর ঝাড়খণ্ডে নতুন করে সরকার গঠনের পর যদি কোনও কংগ্রেস বিধায়কের বিরুদ্ধে সিবিআই মামলা হয়, তাহলে অবধারিত ভাবে কংগ্রেসের মুখ পুড়বে। সেই কারণেই সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এ বছরের জানুয়ারি মাসে ঝাড়খণ্ডে জেএমএম-বিজেপি জোট সরকারের পতন হয়। শিবু সোরেনের পুত্র হেমন্ত সোরেনকে মুখ্যমন্ত্রী না করার জন্য মূলত সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নেয় জেএমএম। পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিধানসভা জিইয়ে রেখেই রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়। ঝাড়খণ্ডে সরকারের পতনের পর থেকেই রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা জেএমএম-এর সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গঠনের জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠে।
সর্বভারতীয় কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা আজ বলেন, এটা ঠিকই যে সরকার গঠনের জন্য কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্বের চাপ রয়েছে। তা ছাড়া কংগ্রেস হাইকম্যান্ডও মনে করছে, যে জে এম এমের সঙ্গে জোট হলে লোকসভা ভোটে ঝাড়খণ্ডে কংগ্রেসের আসন বাড়তে পারে। বিশেষ করে ইউপিএ জোট থেকে যেভাবে একের পর এক শরিক বেরিয়ে গিয়েছে, তাতে নতুন শরিক পাওয়াটা হবে ইতিবাচক ঘটনা। তাই এখনই সরকার গঠন না হলেও জেএমএমের সঙ্গে সমঝোতা টিকিয়ে রাখতে চায় কংগ্রেস। কাল রাহুলের ডাকা বৈঠকে সেই বিষয়ে আলোচনা হবে। মূলত, লোকসভা ভোটই কংগ্রেসের লক্ষ্য। সেক্ষেত্রে লোকসভার সঙ্গে করা হতে পারে বিধানসভা ভোটও। |
|
|
|
|
|