|
|
|
|
ইস্তফা চান গুরুদাস |
গ্যাসের দামে রিলায়্যান্সকে সুবিধা, নিশানায় মইলি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
দুর্নীতির অভিযোগে জেরবার মনমোহন-সরকার এ বার নতুন আক্রমণের মুখে। কৃষ্ণা-গোদাবরী অববাহিকায় গ্যাস উত্তোলনের ক্ষেত্রে রিলায়্যান্স সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী বীরাপ্পা মাইলির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেন সিপিআই-সাংসদ গুরুদাস দাশগুপ্ত। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে তাঁর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তিনি। গুরুদাসের দাবি, মইলি মন্ত্রিসভায় থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। যে যুক্তিতে এ রাজা, পবন বনসল, অশ্বিনী কুমারকে পদত্যাগ করতে হয়েছে, সেই যুক্তিতেই মইলিরও পদত্যাগ করা উচিত।
কৃষ্ণা-গোদাবরী অববাহিকা বা কেজি-বেসিনের ডি-৬ ব্লক থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনের জন্য মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স সংস্থার সঙ্গে কেন্দ্রের চুক্তি হয়। কিন্তু রিলায়্যান্সের বক্তব্য, তারা যতটা বিনিয়োগ করেছেন, সেই অনুযায়ী গ্যাস মিলছে না। কাজেই কেন্দ্র এখন ওই গ্যাসের জন্য বাড়তি দাম দিক। এ নিয়ে বহু দিন ধরেই কেন্দ্র বনাম রিলায়্যান্স টানাপোড়েন চলছে। গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ করতে সি রঙ্গরাজনের নেতৃত্বে কমিটিও হয়েছে।
আজ গুরুদাস বলেন, রঙ্গরাজনের সুপারিশ অনুযায়ী আগামী বছর থেকে ইউনিট প্রতি গ্যাসের দাম ৮ ডলার হওয়া উচিত। কিন্তু রিলায়্যান্স দাবি করছে ১৪ ডলার। |
|
গুরুদাসের বক্তব্য, বিদ্যুৎ মন্ত্রক ও সার মন্ত্রক, এক সুরে রিলায়্যান্সের দাবির বিরোধিতা করছে। রঙ্গরাজনের সুপারিশেও তাদের আপত্তি রয়েছে। কারণ বেশি দামে গ্যাস কিনতে হলে বাড়তি ভর্তুকি গুনবে ওই মন্ত্রকগুলি, আর লাভের কড়ি গুনবে রিলায়্যান্স। রিলায়্যান্স সংস্থার তরফে আগেই বলা হয়েছে, ভূ-প্রাকৃতিক কারণে ওই এলাকায় প্রত্যাশা মতো গ্যাস মিলছে না। কিন্তু গুরুদাসের অভিযোগ, দাম বাড়িয়ে নেওয়ার জন্যই রিলায়্যান্স ইচ্ছাকৃত ভাবে কম গ্যাস উত্তোলন করছে। ভূ-প্রাকৃতিক কারণ স্রেফ অজুহাত।
আজ এ বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে ১২৪ পৃষ্ঠার মন্ত্রিসভার গোপন নোট তুলে ধরেছেন গুরুদাস। সিপিআই-সাংসদের অভিযোগ, অর্থ মন্ত্রক ও যোজনা কমিশনও এই ষড়যন্ত্রে জড়িত। অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে এ বিষয়ে রাজস্ব বিভাগের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হলেও সাড়া মেলেনি। গুরুদাসের অভিযোগ, মইলি এখন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হয়ে রিলায়্যান্সকে রঙ্গরাজনের সুপারিশের থেকেও বেশি হারে গ্যাসের দাম পাইয়ে দিতে চাইছেন। গুরুদাস বলেন, “পেট্রোলিয়াম সচিব তিন বার লিখিত ভাবে এর বিরোধিতা করেছেন। তিন বারই মইলি সেই আপত্তি খারিজ করে দিয়েছেন। মন্ত্রকের অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের হুমকি দিয়ে, ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ করিয়ে দিচ্ছেন মন্ত্রী। মইলির কম্পিউটার পরীক্ষা করলেই দেখা যাবে, তাঁর সঙ্গে রিলায়্যান্স সংস্থার যোগাসাজস রয়েছে।”
পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের তরফে আজ গুরুদাসের অভিযোগের কোনও জবাব দেওয়া হয়নি। তবে সরকার তথা কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা মইলির ইস্তফার দাবি উড়িয়ে বলেন, বিষয়টি নিয়ে অনেক দিন ধরেই চর্চা চলছে। কিন্তু মন্ত্রিসভায় এ নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সুতরাং, মইলি দুর্নীতি করেছেন, এখনই সে কথা বলে দেওয়া যায় না। |
|
|
|
|
|