সমীক্ষায় সেরা মোদীই, তবু বিরোধিতা দলে
নমত সমীক্ষা থেকে দলের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা সবেতেই এই মুহূর্তে কার্যত অপ্রতিরোধ্য তিনি। এবং সে কারণে আগামী লোকসভা ভোটে দলের প্রধান মুখ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা তাঁরই। তবু নরেন্দ্র মোদীর বিরোধিতায় সক্রিয় শীর্ষ লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজ-সহ বিজেপিরই একাংশ। সূত্রের খবর, মোদীকে ঠেকাতে কিছু দিন আগে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ীকে প্রচার কমিটির প্রধান করার প্রস্তাবও রাজনাথ সিংহকে দিয়েছেন আডবাণী। যদিও রাজনাথ-শিবির এ খবর অস্বীকার করেছে।
এই অবস্থায় দলের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষাকেই কাজে লাগাতে চাইছেন মোদী-পন্থীরা। এ বছরের শেষে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের পরেই যাতে মোদীর নাম ঘোষণা করা হয়, তার জন্য চাপও বাড়াতে শুরু করেছেন তাঁরা।
সম্প্রতি নানা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য নরেন্দ্র মোদীকেই সব থেকে বেশি উপযুক্ত বলে মনে করছেন বড় সংখ্যক মানুষ। এমনকী মোদীকে তুলে ধরলে বিজেপির আসন বাড়তে পারে বলেও দেখা গিয়েছে সমীক্ষাগুলিতে। এখনই লোকসভা নির্বাচন হলে ইউপিএর আসন কমলেও এনডিএ অবশ্য সরকার গড়ার অবস্থায় পৌঁছচ্ছে না। কিন্তু মোদী ছাড়া বিজেপির হাল আরও খারাপ হবে বলেই স্পষ্ট নানা সমীক্ষায়। বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহও দলের তরফে একটি অভ্যন্তরীণ সমীক্ষার কাজ শুরু করেছেন। লোকসভার জন্য যে রাজ্যে বিজেপির সবথেকে বেশি নজর, সেই উত্তরপ্রদেশের সমীক্ষার প্রাথমিক আভাসও দলের নেতাদের কাছে এসেছে। বিজেপি সূত্রের মতে, সেই সমীক্ষাতেও দেখা যাচ্ছে, মোদীকে তুলে ধরলেই উত্তরপ্রদেশে আশিটির মধ্যে পঞ্চাশটির কাছাকাছি আসন পেতে পারে বিজেপি। তা না হলে আসন সংখ্যা কমে কুড়ির নীচে চলে যেতে পারে। গত লোকসভা নির্বাচনে গো-বলয়ের এই রাজ্যে বিজেপির ঝুলিতে এসেছিল মাত্র দশটি আসন।
উত্তরপ্রদেশের মতো বড় রাজ্যে জোর দিতেই মোদীর কথায় সে রাজ্যে তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতা অমিত শাহকে দায়িত্ব দিয়েছেন রাজনাথ সিংহ। ২৭ তারিখ থেকে বিজেপি যে গোটা দেশজুড়ে জেল-ভরো আন্দোলন করছে, তাতে সামিল হতে ২৯ মে অমিত শাহ যাচ্ছেন উত্তরপ্রদেশে। দলের এই সমীক্ষার বিষয়ে অমিত শাহ বেশি মুখ খুলতে চান না। কিন্তু তাঁর কথায়, “এতগুলি সমীক্ষা যখন বলছে, নরেন্দ্র মোদীকে ছাড়া আর কোনও গতি নেই, তখন তাঁকে নেতা ঘোষণা করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।” উত্তরপ্রদেশে দল কী ভাবে গুটি সাজাবে, তার একটি নকশাও এঁকে ফেলেছেন তিনি। তাঁর মতে, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের প্রতি মানুষের যে প্রত্যাশা ছিল, তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। মায়াবতীর উপরেও লোকে এখনও ক্ষুব্ধ। আর দেশজুড়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে জনমত তো আছেই। এই অবস্থায় নির্বাচনে মোদীকে সামনে রেখে চললে কংগ্রেসের বিকল্প হিসেবে মানুষ বিজেপিকেই ভোট দেবে। মোদী-হাওয়ায় পাল তুলে আরও আসন বাড়ানোর চেষ্টা করবে দল।
কিন্তু মোদী যতই সক্রিয় হন, আডবাণী-সুষমারা এখনও তাঁকে রোখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। যে আডবাণীর ঘোরতর আপত্তিতে নিতিন গডকড়ীকে সভাপতি পদ ছাড়তে হয়েছে, নিতিন সভাপতি থাকার সময়ে বারবার তাঁর নীতি ও কাজের সমালোচনা করেছেন আডবাণী, আজ মোদীকে রোখার জন্য সেই গডকড়ীকেই প্রচার কমিটির প্রধান করার প্রস্তাব দিচ্ছেন আডবাণী! অথচ ঘোষণা না হলেও এই প্রচারের দায়িত্ব মোদী নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। তাঁকে প্রচার কমিটির প্রধান করার প্রস্তাবও রয়েছে দলে। কিন্তু আডবাণী এখন গডকড়ীর সাংগঠনিক ক্ষমতার তারিফ করছেন!
দলে মোদী-বিরোধী নেতাদের যুক্তি, সব সমীক্ষায় স্পষ্ট, ইউপিএ দুর্বল হলেও এনডিএ সরকার গড়ার অবস্থায় পৌঁছচ্ছে না। তার জন্য আরও শরিক প্রয়োজন। অথচ বর্তমান ও সম্ভাব্য শরিকদের মধ্যে মোদীর গ্রহণযোগ্যতা নেই। কিন্তু অমিত শাহ মনে করেন, “দল যদি নিজের ক্ষমতায় ১৮০ টির মতো আসন নিয়ে আসতে পারে, তাহলে ‘সাম্প্রদায়িক’ বিজেপিই ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ হয়ে যাবে। শরিকরাও বিজেপির ছাতার তলায় আসবে।” এই লক্ষ্য নিয়েই মোদী-পন্থী নেতারা লোকসভা যুদ্ধে ঝাঁপাতে চাইছেন। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত নিতিনকে যে ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা হচ্ছে, তা নিয়েও চরম বিরক্ত তাঁরা। মোদী-পন্থীদের বক্তব্য, দলের শীর্ষ কিছু নেতার যতই আপত্তি থাক, নিচু তলার কর্মীরা ধরেই নিয়েছেন মোদীই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হচ্ছেন। দলের নিচু তলা থেকে এই যে চাপ আসছে, দলের নেতৃত্বকেও শেষ পর্যন্ত মোদীকেই তুলে ধরতে হবে।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.