|
|
|
|
বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা |
সামান্য বৃষ্টিতেই জলমগ্ন রামপুরহাট শহর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রামপুরহাট |
বর্ষা এখনও জোর আকার নেয়নি। কিন্তু প্রাক বর্ষার সামান্য বৃষ্টিতেই জলবন্দি হয়ে পড়ল রামপুরহাট শহর। একটা বড় অংশের বাসিন্দা এর পেছনে নিকাশি ব্যবস্থার দুর্বলতাকেই দায়ী করছেন। হতাশা ধরা পড়েছে খোদ পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারির কথাতেও। জলমগ্ন হয়েছে তাঁর ৭ নম্বর ওয়ার্ডটিও। তৃণমূল পুরপ্রধান বলছেন, “আমার ওয়ার্ডে কোনও দিন জল জমেনি। এ বারে সেখানেও জল দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে।”
কেন এই অবস্থা?
পুরপ্রধানের জবাব, “বর্ষার আগে এই বৃষ্টির জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। বর্ষা শুরুর সামান্য আগে আমরা শহরের প্রধান প্রধান নালা ভাল করে ঝালাই করার কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু বৃষ্টি শুরু হয়ে যাওয়ায় নিকাশি নালাগুলি ভাল করে পরিষ্কার করার সুযোগ পাওয়া যায়নি।” অশ্বিনীবাবুর আরও দাবি, “এই পুর এলাকায় জলনিকাশি ব্যবস্থা অনেক পুরনো আমলের। ওয়ার্ডের সংখ্যাও বেড়েছে। সেখানে নিকাশি নালা তৈরি করা প্রয়োজন।” সার্বিক পরিকল্পনা করে শহরের নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন পুরপ্রধান। যদিও এই পরিস্থিতিতে এমন পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়া সহজ নয় বলেও তিনি মেনে নিচ্ছেন। |
|
জলে ডুবেছে রাস্তা। মাড়গ্রাম মোড়ে সব্যসাচী ইসলামের তোলা। |
গত ৪৮ ঘণ্টায় মাঝে মধ্যেই বৃষ্টি এসেছে। সেই বৃষ্টির কারণে জলমগ্ন হয়েছে ৭ নম্বর বাসস্ট্যান্ড চত্বর, বাসস্ট্যান্ড, বগটুই মোড়, চামড়া গুদাম মোড়, মাড়গ্রাম মোড়, মহাজনপট্টি মোড় প্রভৃতি। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় হাঁটুজল জমে গিয়েছে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কামারপট্টি মোড় থেকে পালিরাম সেতু পর্যন্ত ভাঁড়শালা মোড় প্রভৃতি এলাকাগুলিতে। এ দিকে শহরের হাইরোডের ধারে, সানঘাটা পাড়া কালীমন্দিরের কাছে প্রধান নিকাশি নালার উপরে মাটি ভরাট করার জন্য এলাকার বেশ কয়েকটি জায়গা জলমগ্ন হয়েছে। পুরপ্রধানের অভিযোগ, “ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অপরিকল্পিত সিদ্ধান্তের জন্য জাতীয় সড়কের ধারের জায়গা মাটি ভরাট করতে গিয়ে শহরের প্রধান নিকাশি নালার উপর মাটি ফেলা হয়েছে। ফলে একটা বড় এলাকার মানুষ জলমগ্ন হয়ে পড়েছেন।” মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক হরিসাধন দত্ত বলেন, “আমি বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
বৃষ্টিতে বাড়ির ভেতরে জল ঢুকে গিয়েছে লোটাস প্রেসের গলির বাসিন্দাদের। এলাকার বাসিন্দা রঞ্জয় বর্মণের অভিযোগ, “পুরসভা অবৈজ্ঞানিক ও অপরিকল্পিত ভাবে নিকাশি নালা তৈরি করাতেই এই অবস্থা।” পুরপ্রধানের অবশ্য দাবি, “ওই এলাকায় একটি নতুন কালভার্ট তৈরি করা হয়েছে। নিকাশি নালাও নতুন ভাবে তৈরির কাজ চলছে। কাজ সম্পূর্ণ হলে সমস্যা মিটে যাবে বলে আশা করছি।” যদিও এলাকাবাসীর মত, নিয়মিত ভাবে নিকাশি নালা পরিষ্কার না করার জন্যই এই সমস্যার সৃষ্টি। জল জমেছে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জীবনানন্দ পল্লি, অভিনন্দন পল্লি, মুসলিম পাড়া এলাকাতেও। ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পুষ্পিতা মণ্ডলের বক্তব্য, “নালা ঝালাইয়ের কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ার জন্যই এই অবস্থা। পুরসভা সূত্রে খবর, নিকাশি নালা সংস্কারের জন্য প্রতি মাসে কাউন্সিলরদের ওয়ার্ড পিছু ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। সেই টাকা সব কাউন্সিলর উপযুক্ত ভাবে ব্যবহার করাতেই সামান্য বৃষ্টির জল জমে যাচ্ছে বলে অধিকাংশ বাসিন্দার অভিযোগ।
এ দিকে নিকাশি ব্যবস্থায় ত্রুটির জন্য ৬০ নম্বর রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম জাতীয় সড়কের উপরে শহরের মাড়গ্রাম মোড় থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত জল জমেছে। যার জেরে জাতীয় সড়কের জায়গায় জায়গায় পাথর উঠে গিয়ে খানাখন্ড তৈরি হয়েছে। বেড়েছে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনাও। |
|
|
|
|
|