শেষ রক্ষা হল না ময়বুলের। সাত বছর আগে লন্ডনে স্ত্রীকে খুন করে পালিয়ে এসে ভারতে ঠাঁই নেয় বাংলাদেশি যুবক ময়বুল হক। মাস ছয়েক আগে তার পিছন পিছন ব্রিটিশ পুলিশের একটি তদন্তকারী দলও কাছাড়ে এসে পৌঁছয়। কিন্তু ঠিকঠাক খুঁজে পাওয়া যায়নি হত্যাকারী যুবককে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ব্রিটিশ পুলিশের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত কাল কাছাড় জেলার কাটিগড়া থেকে গ্রেফতার হয়েছে ময়বুল হককে। পুলিশ সুপার দিগন্ত বরা জানান, “ব্রিটিশ পুলিশের একটি দল ছ’মাস আগে কাছাড়ে এলে আমরা ময়বুলের কথা জানতে পারি। সে সময় তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। গত কাল পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।”
পুলিশি জেরায় সে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকারও করে নিয়েছে। ময়বুল পুলিশকে জানিয়েছে, তার বাড়ি বাংলাদেশের গোপালগঞ্জে। ১১ বছর আগে একই পাড়ার জুলিকে বিয়ে করে সে। জুলির বাবা, তার শ্বশুর দীর্ঘ দিন ধরে লন্ডনে কাজকর্ম করেন বলে তারাও সে দেশে পাড়ি দেয়। ময়বুল সেখানে একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করত। তার অভিযোগ, বাংলাদেশে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সমস্যা না থাকলেও লন্ডনে এসেই স্ত্রীর আচার-আচরণ বদলে যায়। তাই দু’বছর তারা পৃথকভাবে বসবাসও করে। কিন্তু সন্তানের টানে ময়বুল স্ত্রীর কাছে ফিরে গেলে ফের অশান্তি শুরু হয়। ২০০৬-এর জানুায়রিতে, একদিন স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া চরমে পৌঁছয়। রাগে অন্ধ ময়বুল বালিশ চাপা দিয়ে জুলিকে হত্যা করে বাংলাদেশ পালিয়ে আসে সে।
কিন্তু ব্রিটিশ পুলিশ ক’দিন পরেই বাংলাদেশে ময়বুলের বাড়িতে হানা দেয়। ময়বুল তখনই পালিয়ে ভারতের মেঘালয়ে চলে আসে। পরে আসমের কাছাড় জেলার কাটিগড়া থানা এলাকার কলাছড়িরপারে একটি বাড়িতে কাজ জুটিয়ে নেয়। কিছু দিন বাদে ওই বাড়িরই একটি মেয়েকে সে বিয়েও করে।
পুলিশ সুপার জানান, তবে এখানে সে স্ত্রী-হত্যা মামলায় অভিযুক্ত নয়। ভারতে অনধিকার প্রবেশের জন্য বিদেশি আইনে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ব্রিটিশ পুলিশকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাদের ‘ওয়ান্টেড’ ময়বুল এখন কাছাড় পুলিশের জালে। তারা তাকে নিয়ে যেতে চাইলে কূটনৈতিক স্তরে কথাবার্তা চালাতে পারে। |