একে চাকরি গিয়েছে, তার উপরে ডুবে গিয়েছে বিনিয়োগ করা লক্ষাধিক টাকাও। বেশ কিছু দিন ধরেই তাই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন সারদা অর্থলগ্নি সংস্থার এক কর্মী সুমিত দাস (২১)। বুধবার সকালে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট শহরের মঙ্গলপুর ব্রিজকালীপাড়া এলাকার বাড়ি থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বালুরঘাট থানার আইসি মনোজ চক্রবর্তী বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, সুমিতবাবু আত্মহত্যা করেছেন। বাড়ির লোকও তাই বলছেন। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
বালুরঘাটের যুবশ্রী মোড়ে সারদা-র দফতরে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী সুমিতের বাবা সমরেন্দ্র ওরফে সমীর দাস সারদা-র ডেভেলপমেন্ট অফিসার ছিলেন। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে সুমিতের মা ডলিদেবী এ দিন কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, “সারদা উঠে গিয়ে আমার ছেলেকেও নিয়ে গেল।” সমীরবাবু অবশ্য বলেন, “কেমন করে এমনটা হল, বুঝতে পারছি না।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, সমীরবাবুকেই সামনে রেখে ২০০৭ সালে বালুরঘাটে সারদা গোষ্ঠী কাজ শুরু করে। সমীরবাবুর উদ্যোগে পুরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে শহরময় এজেন্টদের মাধ্যমে সারদার রমরমা কারবার ছড়িয়ে পড়ে। চার বছর আগে মাসে ৬ হাজার টাকা বেতনে সুমিতবাবুও চাকরি পেয়ে যান। কিন্তু গত ২০ এপ্রিল বালুরঘাটে সারদা-র অফিস বন্ধ হলে সমীরবাবু সহ কর্মকর্তারা তখন গা ঢাকা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই সময়ে গচ্ছিত টাকা এবং কাজ হারিয়ে সুমিতবাবু দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। ওই যুবকের মামি লিপি মোহান্ত জানান, কয়েকদিন আগে সুমিতবাবু তাঁদের বাড়িতে এসে মনমরা হয়ে বলেছিল সারদা উঠে গেল, তিনিও আর বাঁচবেন না। লিপিদেবীর কথায়, “সব ঠিক হয়ে যাবে বলে তখন আশ্বস্ত করেছিলাম। কিন্তু কিছুই হল না।”
এ দিন নদিয়ার কৃষ্ণনগরে প্রতারণার অভিযোগে ‘সানর্মাগ সুরাহা মাইক্রো ফাইনান্স’ নামে একটি লগ্নি সংস্থার এজেন্ট সৌমেন হালদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের বাড়ি শহরের ঘূর্ণি এলাকায়। ওই সংস্থারই এজেন্ট মিঠু বিশ্বাস ধৃতের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। মিঠুদেবীর অভিযোগ, সৌমেনবাবুর মাধ্যমেই সব টাকা জমা দেওয়া হত। তাঁর কথায়, “কিন্তু এখন আমানতকারীরা কোনও টাকাই ফেরত পাচ্ছেন না। সে কারণেই অভিযোগ দায়ের করেছি।” |