শিল্পতালুকের জমি-জট কাটাতে সেল |
সুপ্রকাশ চক্রবর্তী • কলকাতা |
জমি কেনা হয়েছে বছর তিনেক আগে। কিন্তু সেই জমির মালিকানা ও চরিত্র বদল না-হওয়ায় শুরুই করা যায়নি হাওড়া জেলায় চারটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পতালুক গড়ার কাজ। অনেক দেরিতে হলেও এখন সেই কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য হাওড়ার জেলাশাসকের কার্যালয়ে বিশেষ সেল খুলেছে ভূমি দফতর।
দূষণের হাত থেকে হাওড়া শহরকে বাঁচাতে জেলার শিল্প ও বণিকসভার উদ্যোগে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পতালুক গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয় ২০০৯-এ। হাওড়া বণিকসভার সভাপতি শঙ্কর সান্যাল জানান, চারটি শিল্পতালুক তৈরি হওয়ার কথা জগৎবল্লভপুর, ডোমজুড়, পাঁচলা ও জগদীশপুরে। মোট জমির পরিমাণ ৭৭৫ একর। এর মধ্যে জগৎবল্লভপুরের শিল্পতালুকটি হবে ৬০০ একর জমির উপর। সেখানে বণিকসভার ছত্রচ্ছায়ায় ২৮৫ জন বিনিয়োগকারী জমি কিনেছেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই পার্কে রোলিং মিল, ফাউন্ড্রি, চটশিল্প, বস্ত্রশিল্প, সব ধরনের কারখানাই তৈরি হওয়ার কথা। বাকি তিনটি জায়গায় তিনটি তালুক গড়ার জন্য ১৭৫ একর জমি কেনা হয়। কিন্তু, জমি কেনার পরে তার মালিকানা ও চরিত্র বদল করার যে জরুরি কাজটি করার কথা ছিল সরকারের, তা আর হয়নি।
ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্প দফতরের এক মুখপাত্র জানান, সম্প্রতি বিষয়টি সরকারের নজরে আসে। তার পরেই তৈরি ওই বিশেষ সেল তৈরি করা হয়েছে। ভূমি দফতরের কাজে অভিজ্ঞ মাত্র পাঁচ জন অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক ও কর্মীকে নিয়ে তৈরি সেল গত দু’মাসে কাজ অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। ওই মুখপাত্রের দাবি, মোট ৭৭৫ একর জমির মধ্যে মালিকানা পরিবর্তনের কাজ শেষ হয়েছে ৪১৭ একরের। মালিকানা বদলের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে আরও ১২০ একরের। আর ৫৩ একর জমির চরিত্র পরিবর্তনের কাজ শেষ হয়েছে। আরও ৩০ একর জমির চরিত্র পরিবর্তনে সিলমোহর দেওয়ার কাজ প্রায় শেষের পথে।
রাজ্যের ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্প দফতরের সচিব রাজীব সিংহ বলেন, “মাস দুয়েক আগে চালু সেল যে গতিতে কাজ করছে, তাতে আগামী সাত মাসের মধ্যে পুরো ৭৭৫ একর জমির মিউটেশন ও কনর্ভাসন শেষ হয়ে যাবে। মালিকানা ও চরিত্র পরিবর্তনের পরে জমি হাতে পেয়ে গেলে বিনিয়োগকারীরা শিল্পতালুক গড়ার কাজ শুরু করে দেবেন। প্রাথমিক ভাবে চারটি শিল্পতালুকের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে খরচ ধরা হয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।”
সচিবের দাবি, পরিকাঠামো তৈরির পরে চারটি শিল্পতালুকে কারখানা চালু হয়ে গেলে সব মিলিয়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ হতে পারে। আর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে কর্মসংস্থান হতে পারে ৩৫ হাজার মানুষের। |