বিদেশি লগ্নি দূর অস্ত ফের ডানা মেলার আশা
ক্রমেই ক্ষীণ কিংফিশারে
কিংফিশার বিমানসংস্থার উড়ান নতুন করে চালু হওয়ার সম্ভাবনা ফিকে হয়ে গিয়েছে। সংস্থা-সূত্রের খবর: সম্প্রতি আইপিএলে তাঁর দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে উঠতে ব্যর্থ হওয়ার পরে আকারে-ইঙ্গিতে ঘনিষ্ঠ মহলে এ কথা জানিয়ে দিয়েছেন কিংফিশারের কর্ণধার বিজয় মাল্য স্বয়ং। এ দিকে মঙ্গলবার সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইঞ্জিনিয়ারিং) হিতেশ পটেল পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। বস্তুত গত ক’দিনে আরও কয়েক জন
ভিপি ইস্তফা পেশ করেছেন বলে সংস্থা-সূত্রে জানা গিয়েছে।
সব মিলিয়ে কিংফিশারের ভবিষ্যৎ ঘিরে অন্ধকার যেন ক্রমেই প্রকট হচ্ছে। যে যে বিদেশি বিমানসংস্থা কিংফিশারে টাকা ঢালবে বলে মাল্য আশা করে বসেছিলেন, একে একে তারা সরে গিয়েছে। যেমন আবু ধাবি-র ইতিহাদ। তারা কিংফিশারের বদলে ভারতেরই অন্য বিমানসংস্থা জেট-এ বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই পথ ধরেছে এয়ার এশিয়া। তার কণর্ধার টনি ফার্নান্ডেজের সঙ্গে মাল্যের যথেষ্ট হৃদ্যতা থাকলেও প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা দেনার ভারে চাপা পড়া কিংফিশারে টাকা ঢালতে এয়ার এশিয়া উৎসাহ দেখায়নি। পরিবর্তে তারা টাটা গোষ্ঠীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৈরি করেছে নয়া বিমানসংস্থা।
এমতাবস্থায় মাল্য নিজেরই মদ প্রস্তুতকারী সংস্থা (ইউবি) থেকে টাকা নিয়ে কিংফিশারকে জিইয়ে তোলার শেষ একটা চেষ্টা করেছিলেন। তা-ও কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে মাল্যর ঘনিষ্ঠ-সূত্রের খবর। কী রকম?
মাল্যর পরিকল্পনা ছিল, ইউবি তহবিলের ছ’শো কোটি টাকা কিংফিশারে ঢেলে নতুন লাইসেন্সের আবেদন করবেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কর্মীদের বকেয়া বেতনেই তার সিংহভাগ চলে যাবে। কিংফিশারের কর্মীরা গত বছরের জুলাই থেকে বেতন পাচ্ছেন না। তাঁদের পাওনা চোকানোর পরে বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের পাওনা ও পরিষেবা-কর মেটানো সম্ভব হবে না। মাল্য অবশ্য তেল সংস্থার সঙ্গে রফা করে নিয়েছিলেন। ঠিক ছিল, তাদের বকেয়া তিনি পরে মেটাবেন। নতুন উড়ান চালু হলে কিংফিশার জ্বালানি কিনবে নগদে।
তেল সংস্থাগুলো রাজি হলেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এই শর্তে রাজি হননি। ল্যান্ডিং-পার্কিং ফি এবং অফিসঘরের ভাড়া বাবদ তারা কিংফিশারের কাছে তিনশো কোটি টাকা পায়। কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বেদপ্রকাশ অগ্রবাল বলেন, “আগের টাকা না-মেটালে নগদের চুক্তি আমরা করব না। ওড়ার ছাড়পত্রও দেব না।”
আর সেই ছাড়পত্র না-পেলে গত ৩১ ডিসেম্বর বাতিল হয়ে যাওয়া কিংফিশারের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করা হবে না। দেশের বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টোরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)-এর শর্ত ছিল, সমস্ত কর্মীদের বকেয়া বেতন, বিভিন্ন তেল সংস্থা ও বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের পাওনা ও বাকি থাকা পরিষেবা-কর জমা দেওয়ার পরেই কিংফিশার নতুন লাইসেন্স পাবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সে শর্ত পূরণ করা মাল্যের পক্ষে প্রায় অসম্ভব বলেই সংস্থা-সূত্রের ইঙ্গিত।
ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে কিংফিশারের ‘স্লট’ অন্যদের বিলি করতে শুরুও করেছে ডিজিসিএ। তারাই ঠিক করে দেয়, কোন বিমানবন্দর থেকে কোন সংস্থার উড়ান কোন সময়ে ছাড়বে। যাকে ‘স্লট’ বলা হয়। সব বিমানসংস্থাই চায় সকাল-সন্ধের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উড়ান চালাতে। তাই আগাম তারা সেই সব ‘স্লট’ কিনে রাখে। মুম্বই-দিল্লি-বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্লটগুলো এত দিন কিংফিশারের হাতে ছিল। কিন্তু আর তা ধরে রাখতে দিতে ডিজিসিএ নারাজ। “একটি বিমানসংস্থা অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্লট ধরে রাখতে পারে না। দিল্লি-কলকাতা-চেন্নাইয়ে কিংফিশারের স্লট ইতিমধ্যে অন্যদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে।” সাফ জানালেন ডিজিসিএ-প্রধান অরুণ মিশ্র।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.