বিএড প্রশিক্ষণ না থাকায় বিপাকে কোচবিহারের ৮০০ হাইস্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা। তাঁদের আশঙ্কা, এ বছর বেতন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাবে। ক্ষুব্ধ শিক্ষক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ২০১৫ সাল অবধি বেতন বৃদ্ধি বন্ধের প্রক্রিয়ার বাইরে রাখার দাবি তোলা হয়েছে।
ঊর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষের নির্দেশিকা না থাকায় আশ্বাস দিতে পারছেন না জেলা শিক্ষা দফতরের কর্তারা। কোচবিহারের মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শক মহাদেব শৈব বলেছেন, “পুরনো নির্দেশিকা অনুযায়ী ২০১২ সাল পর্যন্ত বিএড প্রশিক্ষণহীন শিক্ষক শিক্ষিকাদের বেতন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া চালু রাখা হয়। কিন্তু এখনও সময়সীমা বাড়ানোর জন্য আমাদের কাছে কোনও নির্দেশিকা আসেনি। জুলাই মাসে অনেকের বেতন বৃদ্ধির কথা। কী হবে কিছু বলতে পারছি না।”
কোচবিহার জেলায় ৬৫০০ শিক্ষক শিক্ষিকার মধ্যে ১৬৯৩ জনের বিএড প্রশিক্ষণ নেই। তাঁদের মধ্যে ৮০০ জন ২০০৭ সালে বা তার আগে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের জুলাই মাসে বেতন বৃদ্ধি (বেসিকের ৩ শতাংশ) হওয়ার কথা। চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর চার দফায় সমস্যা না হলেও এ বার বেতন বৃদ্ধির অন্যতম শর্ত বিএড প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ। ২০০৯ সালে রাজ্য সরকার, ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছাড় দেয়। এ বার বেতন বৃদ্ধির প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে বিএড প্রশিক্ষণ থাকা বাধ্যতামূলক হিসাবে ধরা হবে। শিক্ষক শিক্ষিকার অভিযোগ, ফি বছর জেলায় ১০০ আসনে কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকা বিএডে ভর্তির সুযোগ পান। ২০১২ অবধি সময় বাড়ানোয় বেতন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এত দিন সমস্যা হয়নি। তৃণমূল প্রভাবিত মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলার আহ্বায়ক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “এনসিইআরটি-র নিয়মে ২০১৫-র মধ্যে সব শিক্ষক শিক্ষিকার বিএড প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। সরকার সকলের চাকরির কথা ভেবে প্রশিক্ষণ চালুর বন্দোবস্ত করছে। ৮০০ জনের বেতন বৃদ্ধি প্রক্রিয়া যাতে বন্ধ না হয়, সে নিয়ে সরকারকে জানানো হয়েছে।” তিনি জানান, বাম সরকার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো না করাতেই বিএড প্রশিক্ষণ নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি শিশির সরকার বলেন, “এক বার বেতন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া বন্ধ হলে চাকরি জীবনে প্রতিমাসে গড়ে ৬০০-১০০০ টাকার ক্ষতি। অথচ শিক্ষিক শিক্ষিকারা পরিকাঠামোর অভাবে ভর্তির সুযোগ পাননি। তাই তাঁদের খেসারত দেওয়া কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা আন্দোলনে নামছি।” এবিটিএ-র জেলা সম্পাদক সুজিত দাস বলেন, “কর্মরতদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা সরকারের দায়িত্ব। আপাতত ২০১৫ সাল পর্যন্ত বেতন বৃদ্ধির নির্দেশিকা জারি করার দাবিতে আমরা আন্দোলন করব।” |