গ্রীষ্মে শুকিয়ে যাওয়া পুনর্ভবা নদীর বালিস্তরের নীচে মিলল জলের ভান্ডার। সম্প্রতি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের ইঞ্জিনিয়রদের সমীক্ষায় দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর ব্লকের রাজীবপুর ও হামজাপুর এলাকায় বালির নীচে পুনর্ভবার ফল্গুধারার সন্ধান মিলেছে। ফলে গঙ্গারামপুর থেকে খরা প্রবণ তপনের করদহের নওগাঁ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানীয় জলের সরবরাহের সুবিধা মিলতে পারে। ওই দুটি ব্লকের প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন।
তপনের তৃণমূল বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদার আবেদনে সাড়া দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভাগীয় মন্ত্রককে এ বিষয়ে উদ্যোগী হতে নির্দেশ দেন। এই কর্মসূচিতে ৩০০ কোটি টাকার খসড়া প্রকল্প তৈরি হয়েছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের দক্ষিণ দিনাজপুরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রজেস সমাজদার বলেন, “তপন ও গঙ্গারামপুর নিয়ে এই ‘মেগা জল সরবরাহ প্রকল্পে’র বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক বরাদ্দের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ আর্থিক সহায়তায় মেগা প্রকল্পটি আগামী ২ বছরের মধ্যে রূপায়ণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়।”
তপনের তৃণমূল বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদা জানান, প্রকল্পটি রূপায়ণের পাশাপাশি জরুরি ভিত্তিতে পানীয় জলের সঙ্কট মোকাবিলায় তপনের ১১ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৬০০র উপর মার্ক-টু নলকূপ বসানোর কাজ শেষ পর্যায়ে। পঞ্চায়েত পিছু গড়ে প্রায় ৬০ টি নলকূপ বসানো হবে। বিধায়কের অভিযোগ, জেলা পরিষদ থেকে কিছু এলাকায় সজলধারা প্রকল্প তৈরি করা হলেও তা অকেজো হয়ে গিয়েছে।
পাশাপাশি নিম্নমানের পাইপ এবং যন্ত্রাংশ ব্যবহারের ফলে জলস্তর নেমে যাওয়ায় ওই প্রকল্প থেকে জল উঠছে না বলে অভিযোগ। জলঘর, বালাপুর, ভবানিপুর, অভিরামপুরের মত এলাকাগুলির বাসিন্দারা এই ভরা বর্ষার মরসুমেও জল সঙ্কটে ভুগছেন। বিধায়ক বলেন, “তপন ব্লকে জলকষ্ট দূর করতে দীর্ঘমেয়াদি ধারাবাহিক প্রকল্প রূপায়ণের আবেদন মুখ্যমন্ত্রীকে করা হয়েছিল।” তপন ও গঙ্গারামপুরে বেশ কিছু নলকূপের জলে ফ্লোরাইড দূষণ দেখা দিয়েছে। তপনের মালঞ্চা ও আউটিনা অঞ্চলের পাহাড়পুর, অর্জুনপুর, কাউলি, সন্ধ্যাপুকুর, মনিপুর, সাদুল্লাপুর এলাকা গুলিতে বিএসএফকে ট্যাঙ্কারে করে বাসিন্দাদের পানীয় জল সরবরাহ করতে হয়। ওই অবস্থায় হস্তচালিত গভীর নলকূপ বসিয়ে আশু সমস্যা মোকাবিলার পাশাপাশি পুনর্ভবার নদী জল উত্তোলন প্রকল্প রূপায়ণে জোর দিতে সম্প্রতি দিল্লিতে রাজ্যের ‘মেগা জল প্রকল্প’ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেন। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কর্তারা আলোচ্যসূচিতে তপন ও গঙ্গারামপুরের ওই নদী জলত্তোলন প্রকল্প রূপায়নের বিষয়টি তোলা হয় বলে জেলার এগজিকিটিভ ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন। |