সেন কমিশনে অভিযোগ দিতে উপচে পড়ছে ভিড়
চার দিকে থিকথিকে ভিড়। দু’টি প্লাস্টিকের ছাউনির নীচে প্লাস্টিক পেতে বসে পড়েছেন অনেকে। ঘাসের উপরেই গা এলিয়ে দিয়েছেন কেউ। কে আগে লাইনে দাঁড়িয়েছেন, তা নিয়ে ঝগড়া-ঝাঁটিও কম হচ্ছে না। তাঁদের কেউ এজেন্ট, কেউ আমানতকারী। বারাবর পুলিশকে যেতে হচ্ছে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে শান্ত করতে। চা, আইসক্রিম বিক্রি হচ্ছে দেদার। এক জায়গায় কথা বলা পুতুল নিয়ে হাজির ক্রেতা সুরক্ষা দফতর। সেই পুতুল প্রচার করছে, বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থায় টাকা রাখা ঠিক নয়। ঠাসাঠাসি ভিড় ফেটে পড়ছে হাততালিতে। কেউ বা আড়ালে চোখের জল মুছে নিচ্ছেন হাতের পাতায়।
সারদা-কান্ডের জেরে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্যামল সেনের নেতৃত্বাধীন কমিটির শিলিগুড়ির শাখার অফিসে মঙ্গলবার চোখে পড়ল এই দৃশ্য। শহর লাগোয়া হিমাঞ্চল বিহারে রোজ অফিস খোলার আগেই আবেদনপত্র জমা দিতে লম্বা লাইন পড়ছে। অনেকে রাত জেগে লাইনে বসে থাকছেন। মঙ্গলবার অভিযোগ পত্র জমা পড়েছে ৬৬৯৩টি। এখনও পর্যন্ত অভিযোগপত্রের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৩৭৯টি। ১৯৯১ সালে মালদহে একটি বেসরকারি কোম্পানির টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগও এদিন জমা পড়ে। দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “প্রতিদিনই অভিযোগের সংখ্যা বাড়ছে। এদিন থেকে জেলা ভিত্তিক কেন্দ্র করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে আরও কাউন্টার বাড়িয়ে দেওয়া হবে। আর সেখানে যাতে কারও অসুবিধে না হয়। সে ব্যাপারটি দেখা হবে।”
শিলিগুড়ির হিমাঞ্চল বিহারে কমিশনে অভিযোগ জানাতে মঙ্গলবার এজেন্ট, আমানতকারীদের ভিড়।—নিজস্ব চিত্র।
প্রশাসন সূত্রের খবর, আটটি কাউন্টারে কমিশনে অভিযোগ জমা নেওয়া শুরু হয় ১০ মে থেকে। ওই দিন যে যত অভিযোগপত্র দিচ্ছিলেন, নিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু তা নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়। তার পরে এক জন একবারে ২৫টি অভিযোগপত্র জমা দিতে পারবেন বলে ঠিক হয়। আরও অভিযোগ থাকলে আবার লাইনে দাঁড়াতে হবে। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত অভিযোগপত্র জমা নেওয়া হচ্ছিল। তার পরেও দেখা যাচ্ছে অনেকেই অভিযোগপত্র জমা দিতে পারছেন না। ফলে দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, কোচবিহার থেকে যারা অভিযোগ জমা দিতে আসছেন, তাঁদের রাতে থেকে যেতেও হচ্ছে।
মালদহের শেখর সরকার রবিবার রাতে পৌঁছন হিমাঞ্চল বিহারে। তার পর থেকেই সেখানে রয়েছেন। ২৯৬টি অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার জন্য নিয়ে এসেছেন। সোমবার দু’বার লাইনে দাঁড়িয়ে ৫০টি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। এদিন আরও ৫০টি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। আরও অন্তত তিন দিন থাকতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘সব মিলিয়ে আমার ৪২ লক্ষ টাকা আছে সারদায়। আমনতকারীদের টাকা ফেরত দিতে হবে। সব অভিযোগপত্র আমাকেই জমা দিতে হবে। তাই রাতে জেগে এখানেই আছি। হোটেলে থাকতে গেলে অনেক খরচ।” তাঁর কথায়, “এদিন রাতে আমরা প্রায় ৪০ জন ছিলাম। এখানে খাবার পাওয়া যায় না। শৌচাগার সকাল ১০টার আগে ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। তাই অসুবিধেয় পড়তে হয়।”
তবে সকাল হলেই পরিবেশ গমগমে হয়ে যাচ্ছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.