কর্মঠদের প্রার্থী করার নির্দেশ বিমানের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বিরোধী ভূমিকায় যাওয়ার পরে প্রথম পঞ্চায়েত ভোট। কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কর্মঠ ব্যক্তি, যাঁরা দৌড়-ঝাঁপ করতে পারেন, তাঁদেরই প্রার্থী করার উপরে জোর দিল বামফ্রন্ট।
কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে পঞ্চায়েত ভোটের রাস্তা পরিষ্কার হওয়ার পর নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে মঙ্গলবার প্রথম বৈঠক বসে বামফ্রন্টের। আলিমুদ্দিনে বৈঠকের পরে প্রার্থী নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বিমানবাবু বলেন, “যাঁরা দৌড়-ঝাঁপ করতে পারে না, তাদের বাদ দিয়ে প্রার্থী করতে হবে।” বিমানবাবু জানান, তরুণ ও মধ্যবয়সীদের প্রার্থী করার উপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে। অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে, বয়সের ভারে ন্যুব্জ কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে গ্রাম বা জেলা স্তরে রাজনীতি করছেন, এমন বহু ব্যক্তিকেই পঞ্চায়েতে প্রার্থী করা হয়। ফলে, অনেক সময় ভোটে জিতেও তাঁরা কাজ করতে পারেন না। বিমানবাবর বক্তব্য, অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রাখার পাশপাশিই এ বার শারীরিক সক্ষমতাকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ, আগামী দিনে পঞ্চায়েতের প্রার্থীদের সামনে রেখেই গ্রামে সংগঠন সাজাতে হবে বামেদের।
এ বার যাতে জেলায় শরিকি ঐক্য দৃঢ় হয়, তার জন্য বিমানবাবু নিজে যথাসম্ভব জেলা বামফ্রন্টের বৈঠকে উপস্থিত থাকছেন। ১৯৭৮ সাল থেকে পঞ্চায়েত ভোট হচ্ছে। কিন্তু প্রতি বারই শরিকদের সার্বিক ঐক্য শুধু আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ থাকে। বিশেষত, ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে শরিকি অনৈক্য বামেদের খারাপ ফলের অন্যতম বড় কারণ ছিল। এ বার যাতে সার্বিক ঐক্য গড়ে ওঠে, বিমানবাবু গত ৬ মাস ধরেই তার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি এ দিন বলেন, “এ বারই বোধ হয় প্রথম সার্বিক ঐক্যের ভিত্তিতে বামফ্রন্ট লড়বে। যা কোনও দিন অতীতে হয়নি!” তবে জেলা পরিষদের দু-একটি আসন এবং গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির কিছু আসন নিয়ে এখনও আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লকের সঙ্গে সিপিএমের আলোচনা চলছে।
অবিলম্বে পঞ্চায়েত ভোট করতে হবে, এই দাবি জানিয়ে বিমানবাবু বলেন, “আমরা বা অন্য বিরোধীরা নাকি পঞ্চায়েত ভোট চাই না। সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা! তৃণমূল পঞ্চায়েত বোর্ডের পাঁচ বছর মেয়াদ পূরণ হওয়ার আগেই ভোট চেয়েছিল। আমরা তাতে আপত্তি করেছিলাম।” তৃণমূলের অভিযোগ, হারের ভয়ে পঞ্চায়েত ভোট ভেস্তে দেওয়ার ‘চক্রান্ত’ করছে বামেরা। সেই অভিযোগেরই জবাব দেন বিমানবাবু।
গত দু’বছর ধরে তাঁরা বারবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলছেন। এই পরিস্থিতিতে সব আসনে প্রার্থী দিতে পারবেন? বিমানবাবুর বক্তব্য, “হ্যাঁ, আমরা সব আসনেই লড়ব।” মুখে দাবি করলেও সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে বামেরা যে যথেষ্ট চিন্তিত, বিমানবাবুর কথাতেই তার ইঙ্গিত মিলেছে। তিনি বলেন, “রাজ্যে গণতন্ত্র বহাল থাকলে নিশ্চয়ই সব আসনে প্রার্থী দেওয়া যাবে! কিন্তু স্বৈরতন্ত্র থাকলে সব আসনে প্রার্থী দেওয়া যাবে না।” |