তৃণমূলকে ঠেকানোই লক্ষ্য
আঞ্চলিক দলের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট জঙ্গলমহলে
ঞ্চায়েত ভোটকে ‘পাখির চোখ’ করে জঙ্গলমহলে ঝাড়খণ্ডী ও আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে জোট বাঁধল কংগ্রেস। তৃণমূলকে চাপে রাখতে কংগ্রেসের তরফে এটা গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পদক্ষেপ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যে দলগুলির সঙ্গে কংগ্রেস জোটে যাচ্ছে, তার বেশিরভাগই জঙ্গলমহলে স্বশাসনের দাবিতে কয়েক বছর আগে ‘ঝাড়খণ্ড আন্দোলন সমন্বয় মঞ্চ’ গঠন করেছে। এ বার সেই মঞ্চের পরিধি বাড়ল। নতুন নাম হল ‘জঙ্গলমহল গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা মঞ্চ’। গত ১৭ মে নতুন মঞ্চটি তৈরি হয়েছে। আগের মঞ্চের পাঁচটি দল ছাড়াও এতে রয়েছে কংগ্রেস ও ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)।
২০০৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটের সময় পিসিসি-সিপিআই (এম এল), ঝাড়খণ্ড অনুশীলন পার্টি, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, ঝাড়খণ্ড ক্রান্তি দল-সহ ৫টি ঝাড়খণ্ডী ও আঞ্চলিক দল মিলে ‘ঝাড়খণ্ড আন্দোলন সমন্বয় মঞ্চ’ গড়েছিল। তারপর বহুবার আমন্ত্রণ জানানো সত্ত্বেও চুনিবালা হাঁসদার নেতৃত্বাধীন ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন) ওই মঞ্চে যোগ দেয়নি। কারণ, মঞ্চ চায় জঙ্গলমহলে স্বশাসন। আর চুনিবালাদের দাবি, জঙ্গলমহলকে ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া। তাই এতদিন এই মঞ্চের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতেন চুনিবালারা। কিন্তু অবস্থা পাল্টেছে। জঙ্গলমহলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার তৃণমূলের সাংগঠনিক হাল ভাল নয়। সেই সঙ্গে এটাও সত্যি পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেসের একার পক্ষে তৃণমূলকে বেকায়দায় ফেলা সম্ভব নয়। সে জন্যই এই নতুন মঞ্চ। যেখানে কংগ্রেস ছাড়াও যোগ দিয়েছে জঙ্গলমহলে তাদের দীর্ঘদিনের জোটসঙ্গী ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)। জেলা কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতার কথায়, “জঙ্গলমহলকে ঝাড়খণ্ড রাজ্যে অন্তর্ভুক্তির দাবিটি আমরা সমর্থন করি না। তা সত্ত্বেও দীর্ঘ দু’দশক ধরে ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর সঙ্গে আমাদের নির্বাচনী জোট রয়েছে। এখন আমরা মনে করছি, তৃণমূলকে আটকাতে গেলে অন্য ঝাড়খণ্ডী ও আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গেও জোট করাটা জরুরি।”
রাজনৈতিক মহলের মতে, কংগ্রেস ও ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর পক্ষে রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার জন্য জঙ্গলমহলের স্বশাসনের দাবিতে সরব হওয়া সম্ভব নয়। তা সত্ত্বেও যে সব দল স্বশান চাইছে, তাদের সঙ্গে জোট করার একমাত্র উদ্দেশ্য তৃণমূলকে ঠেকানো। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেসের দুই সহ-সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য ও নিখিল মাইতি বলেন, “সিপিএম ও তৃণমূল দু’টি দলকেই মানুষ এখন এক চোখে দেখছেন। জঙ্গলমহলের স্বার্থেই সিপিএম ও তৃণমূল বিরোধী দলগুলিকে এক মঞ্চে নিয়ে জোট গড়াটা অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। প্রদেশ নেতৃত্বও বিষয়টি অনুধাবন করে জঙ্গলমহলে আঞ্চলিক স্তরে জোট করার জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছেন।” আর চুনিবালার মতে, “জঙ্গলমহলের আদিবাসী-মূলবাসীরা চরম উপেক্ষার শিকার। শাসক তৃণমূল পুলিশ দিয়ে স্বৈরশাসন ও দলতন্ত্র চালাচ্ছে। এ সবের বিরুদ্ধে যৌথ আন্দোলন জরুরি।”
স্বশাসনের দাবির ক্ষেত্রে কংগ্রেস ও ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর সঙ্গে মতপার্থক্য কোনও সমস্যা হবে না বলে মনে করছে ‘ঝাড়খণ্ড আন্দোলন সমন্বয় মঞ্চ’। মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক সন্তোষ রানা বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটে আসন সমঝোতা ও আদিবাসী-মূলবাসীদের দাবি আদায়ের জন্য বৃহত্তর মঞ্চে যেতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। তবে স্বশাসনের দাবিতেও আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
কংগ্রেসের উদ্যোগে বৃহত্তর এই জোটকে কোনও গুরুত্বই দিচ্ছে না তৃণমূল। পঞ্চায়েত ভোটেও এর কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই মনে করছেন জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.