আদিবাসী উন্নয়নে নয়া দফতর, দায়িত্বে মমতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সংখ্যালঘু উন্নয়ন দেখছিলেনই। এ বার আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য পৃথক দফতর তৈরি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং জানিয়ে দিলেন, তিনি নিজেই দফতরটির দেখভাল করবেন। মঙ্গলবার মহাকরণে আদিবাসী বিকাশ পরিষদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতেই এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন মমতা।
অনগ্রসর শ্রেণি উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস এত দিন আদিবাসী উন্নয়নের বিষয়টি দেখতেন। এ ব্যাপারে আলাদা কোনও দফতর ছিল না। আদিবাসী উন্নয়নের জন্য পৃথক দফতর তৈরির প্রয়োজন হল কেন, তার কোনও ব্যাখ্যা দেননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, রাজ্যে ১৩৪৬টি টোটো পরিবার আছে। তাদের পরিবার-পিছু মাসে আট কিলোগ্রাম চাল দেওয়া হবে বিনামূল্যে। তারা যেমন আটা পাচ্ছে, তা-ও দেওয়া হবে। টোটোদের একটি মেয়ে মাধ্যমিক পাশ করেছে। তাকে সরকারি চাকরি দেওয়া হচ্ছে।
মমতা বলেন, “আদিবাসী উন্নয়ন দফতর নামে পৃথক একটি দফতর করছি। পাহাড় আমি দেখছি। সংখ্যালঘু আমি দেখছি। এখন থেকে আদিবাসী উন্নয়ন দফতরটিও আমিই দেখব।” মহাকরণ সূত্রের খবর, তিনি যে আদিবাসীদের উন্নয়নের বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতে চাইছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে সেটাই বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গত সপ্তাহে দার্জিলিঙে গোর্খা পার্বত্য পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। এ দিন মহাকরণে বৈঠক করেন উত্তরবঙ্গের আদিবাসী বিকাশ পরিষদের নেতাদের সঙ্গে।
অনগ্রসর শ্রেণি উন্নয়ন মন্ত্রী উপেনবাবু বলেন, “আমি দু’বছর ধরে আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য অনেক কিছু ভেবেছি। অনেক কাজ করেছি। এখন মুখ্যমন্ত্রী নিজে আদিবাসীদের উন্নয়নের বিষয়টি দেখবেন বলেছেন। এর থেকে ভাল আর কী হতে পারে!” আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য তাঁর সরকার যে কতটা উদ্যোগী, এ দিন তা বোঝানোর চেষ্টা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “পাহাড়ের মতো তরাই-ডুয়ার্সের উন্নয়নের উপরেও জোর দিচ্ছি। ট্রাইবাল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল গড়ার কথা হচ্ছে। আমরা একটি কমিটি তৈরি করছি।” আদিবাসীদের আরও বেশি জমির পাট্টা কী ভাবে দেওয়া যায়, সরকার তা-ও খতিয়ে দেখছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “আদিবাসীদের জমি দখল করা হলে আমরা তা ফিরিয়ে দেব। ইতিমধ্যেই উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় একটি চা-বাগান থেকে ৭০০ জনকে জমি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, বানারহাটে ফুড পার্ক হবে। হবে ফিল্ম সিটি-ও। মমতা বলেন, “আমরা বানারহাটে ১৮০ একর জমি পেয়েছি। তার ৪০ একরে হবে ফুড পার্ক। বাকি জমিতে ফিল্ম সিটি। অনেকে উত্তরবঙ্গে শু্যটিং করতে যান। তাঁদের আর সমস্যা হবে না। বানারহাট, মেটেলি, ময়নাগুড়িতে আইটিআই, পলিটেকনিক তৈরি করেছি। গড়া হয়েছে হিন্দি কলেজ।”
মুখ্যমন্ত্রী জানান, চা-বাগানের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নিয়ে সমস্যা রয়েছে। অবসরের বয়স ৫৮ থেকে কমিয়ে ৪৮ করা হয়েছে। বিষয়টি ভোটের পরে দেখা হবে। আদিবাসী বিকাশ পরিষদের রাজ্য সভাপতি বিরসা তিরকে বলেন, “আমাদের জন্য আলাদা দফতর হল। উন্নয়নের কাজ আরও ভাল হবে। আমরা খুব খুশি।” |