কমিশনারেটের নিচু তলায় পুলিশের উর্দি হচ্ছে সাদা-নীল |
বিতান ভট্টাচার্য • ব্যারাকপুর |
রাজ্যের পুলিশ কমিশনারেটগুলিতে কনস্টেবল থেকে ইন্সপেক্টর পর্যন্ত পদাধিকারীদের জন্য নতুন উর্দির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। খাকির বদলে তাঁদের এ বার উর্দি হবে সাদা জামা ও নীল প্যান্ট। সোমবারই রাজ্যের পাঁচটি পুলিশ কমিশনারেট ব্যারাকপুর, আসানসোল-দুর্গাপুর, হাওড়া, বিধাননগর ও শিলিগুড়িতে স্বরাষ্ট্র দফতরের এই নির্দেশিকা পৌঁছেও গিয়েছে। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় সিংহ বলেন, “কমিশনারেটের পুলিশের একটা নিজস্ব পরিচয়ের কথা আগে ভাবা হয়েছিল। সেটাই বাস্তবায়িত হয়েছে।”
নির্দেশে ক্ষুব্ধ কমিশনারেটগুলির পুলিশের নিচু মহল। আশঙ্কা, খাকি উর্দির প্রতি মানুষের যে সম্ভ্রম রয়েছে, এই পোশাকে তা বজায় রাখা কঠিন। কেউ বলছেন, সাদা-নীল উর্দি পরা থাকলে পুলিশকর্মীদের চেনাই শক্ত হবে। পুলিশের উঁচু তলার অফিসারদের সঙ্গে সাদা-নীল উর্দি পরা নিচু তলার কর্মীদের পার্থক্যও বেশি করে চোখে পড়বে। নিচু তলার কর্মীরা খাকি উর্দি রাখারই দাবি করেছেন কর্তৃপক্ষের কাছে। তাঁদের বক্তব্য, ওই পোশাক চালু করলে কনস্টেবল থেকে কমিশনার পর্যন্ত করা হোক। তা না করে শুধু কনস্টেবল থেকে ইন্সপেক্টর পর্যন্ত করা হচ্ছে কেন? পুলিশকর্মীদের একাংশের অসন্তোষের কারণ, সাদা জামা নীল প্যান্ট রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলেরও ইউনিফর্ম। তাঁরা বলছেন, পোশাকের রঙটা বদল করা হোক।
স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তা জানান, আশঙ্কা অমূলক। পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ বাহিনীর বহু পোশাক চালু রয়েছে। তাঁর কথায়, কলকাতা পুলিশের উর্দি সাদা জামা ও সাদা প্যান্টও রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের পোশাক। তাতে ফারাক করতে কারও অসুবিধা হয় না।
আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দার বক্তব্য, ‘‘একটু সময় নিয়ে ট্রাফিক পুলিশের পোশাক আগে পরিবর্তন করে ধীরে ধীরে থানায় ও অন্য বিভাগে পরিবর্তন আনলে নিচু তলায় ক্ষোভ তৈরি হত না।” শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার কে জয়রামন জানান, পোশাকের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, “জুনেই ওই পোশাক চালু করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।”
নিচু তলার কিছু পুলিশকর্মী অবশ্য বলছেন, খাকি উর্দির জন্যই ছোটবেলা থেকে পুলিশ হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। পুলিশ সূত্রে খবর, অনেকে খাকি ছাড়বেন না বলে কমিশনারেট থেকে জেলা পুলিশে স্বেচ্ছা বদলির আর্জিও জানিয়েছেন।
|