|
|
|
|
মর্গ্যানকে হাসি মুখে শহর ছাড়তে দিতে চান না করিম
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সালগাওকরের কোচ থাকার সময় মর্গ্যানের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মোহনবাগানের দায়িত্ব নেওয়ার পর চলতি মরসুমে তাঁর বিরুদ্ধে এখনও অপরাজিত মর্গ্যান। বৃহস্পতিবার তাই মর্গ্যানের বিদায়ী ম্যাচে তাঁকে হাসি মুখে মাঠ ছাড়তে দিতে চান না মোহনবাগান কোচ করিম বেঞ্চারিফা।
প্রসঙ্গ উঠলে মুখে মর্গ্যানের নাম না আনলেও ওডাফাদের মরক্কান কোচ বলছেন, “ইস্টবেঙ্গল কোচ কিংবা ফুটবলারদের নিয়ে ভাবার সময় নেই আমাদের।” কিন্তু মোহনবাগান শিবিরের অন্দরমহলের খবর, ভিতরে ভিতরে ফুটবলারদের তাতানোর কাজ প্রয়াগ ম্যাচের পরই শুরু করে দিয়েছেন কোচ। জানেন, বৃহস্পতিবারের ডার্বিতে মর্গ্যানের বিদায় মুহূর্ত স্মরণীয় করে রাখতে মরিয়া হবেন মেহতাব-চিডিরা। মঙ্গলবার সকালে যুবভারতীতে অনুশীলনের পর ওডাফা থেকে টোলগে, ডেনসন থেকে নবি-- ফুটবলারদের জনে জনে ডেকে কোচ কানে মন্ত্র দিয়েছেন, ইস্টবেঙ্গলকে হারালেই লিগ চ্যাম্পিয়ন। কাজেই ম্যাচটা জিততে নিজেদের দু’শো শতাংশ নিংড়ে দাও। যা শুনে মাথা নেড়েছেন ওডাফা-নবিরা। মাথায় আইএফএ-র শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির তলব থাকলেও অনুশীলন শেষে হাসিখুশি মেজাজেই বাগান কোচ। “সেই জানুয়ারি থেকেই তো এ রকম ‘মাস্ট উইন’ পরিস্থিতিতে খেলে আসছে ছেলেরা। চাপের কিছু নেই। দলের সবাই এই ম্যাচের গুরুত্ব জানে।” |
মোহনবাগান প্র্যাক্টিসে বাচ্চাদের সঙ্গে ওডাফা। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
|
বিগত কয়েক বছরে প্রয়াগ ইউনাইটেডকে হারাতে পারেনি মোহনবাগান। গত ম্যাচে সেই প্রয়াগের বিরুদ্ধেই জয় এসেছে ওডাফার হ্যাটট্রিকে। এটাই বাড়তি অক্সিজেন বাগানের কাছে। মোহনবাগানের ‘কিং কোবরা’ কি এ বার মর্গ্যান-বধের টোটকাও বাতলে দেবেন? শুনে ইঙ্গিতপূর্ণ হাসি মুখে দার্শনিকের মতো সবুজ-মেরুন কোচ বললেন, “এই মরসুমে ওডাফার দায়িত্ববোধ দেখার মতো। তবে ম্যাচে কী হবে তা সময় বলবে।”
কোচের মতোই চনমনে টোলগেও। বলছেন, “আমাদের জিততেই হবে।” গত বছর লাল-হলুদ জার্সি গায়ে কলকাতা লিগের শেষ ম্যাচে মহমেডানের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করে সেই রাতেই উঠেছিলেন মোহনবাগানের ডেরায়। তার পর আর বড় ম্যাচে টোলগের গোল নেই। এ দিন সে কথা মনে করাতেই চোয়াল শক্ত টোলগের। বিদেশিদের মতোই রণংদেহি মেজাজে বাগানের ভারতীয় ফুটবলাররাও। নবি থেকে মণীশ মৈথানি। সকলের মুখে একটাই কথা, “জিততেই হবে যে কোনও মূল্যে।”
টোলগে-ওডাফার এই মরিয়া মনোভাবটা যদি করিমের স্বস্তি আনে। অস্বস্তি অবশ্যই মাঝমাঠে কুইন্টনের না থাকাটা। নামিবিয়ার মিডফিল্ডার এ দিন অনুশীলনেও মনমরা ছিলেন। তবে বাগান শিবিরে সুখবর, অনেকটাই চোট মুক্ত ইচে এবং ডেনসন। প্রথম জন এ দিন অনুশীলনে না নামলেও ডেনসন অনুশীলন করেছেন পুরোদমে। এই পরিস্থিতিতে গোলে শিল্টনকে রেখে রক্ষণে নির্মল, ইচে, আইবর এবং বিশ্বজিৎকে নিয়ে দল সাজাচ্ছেন মোহনবাগান কোচ। মাঝমাঠে ডান প্রান্তে নবি। বাঁ প্রান্তে সাবিথ কিংবা মণীশ ভার্গব। সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে ডেনসন এবং মণীশ মৈথানি। আক্রমণে টোলগে-ওডাফা যুগলবন্দি।
সাত ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্ট ২১। সমসংখ্যক ম্যাচে মোহনবাগানের পয়েন্ট ১৯। ড্র করলেই চ্যাম্পিয়ন মর্গ্যানের দল। কলকাতা লিগের ট্রফি গঙ্গাপারের তাঁবুতে নিয়ে যেতে হলে জিততেই হবে বাগানকে। না হলে মরসুম শেষে করিমের থাকবে শুধু সান্ত্বনা, আই লিগে মোহনবাগানের অবনমন বাঁচানো। এগারো বছর আগে ঠিক এ রকম পরিস্থিতিতেই জাতীয় লিগে গোয়ার মাঠে নাইজিরীয় স্যালিউয়ের গোলে চার্চিল ব্রাদার্সকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মোহনবাগান। লক্ষ্মীবারের সন্ধ্যায় বাগানে স্যালিউয়ের ভূমিকা নিয়ে কেউ উদয় হবেন কি? বড় ম্যাচের ৪৮ ঘণ্টা আগে সে রকমই এক জনের খোঁজে করিমের দল। |
|
|
|
|
|