২০১০ মার্চে ১৭০২ কোটি টাকা দিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি কেনার পর থেকেই বার্ষিক ফি নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে সঙ্ঘাত সহারার। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচের সংখ্যা বছরে ১৮ থেকে কমে যখন ১৪ হয়েছে, তখন বার্ষিক ফি-ও কমা উচিত। বোর্ড এই দাবিতে কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ সহারার। তারা বিবৃতিতে বলেছে, “ম্যাচ সংখ্যা কমে যাওয়ায় বিড প্রাইস তথা বার্ষিক ফি কমানোর অনুরোধ জানায় সহারা ও কোচি ফ্র্যাঞ্চাইজি। একজন আর্বিট্রেটর নিয়োগের প্রস্তাবও দেওয়া হয়। বোর্ড তাতে রাজি হলে ২০১২ ফেব্রুয়ারিতে যৌথ বিবৃতিতে আর্বিট্রেটর নিয়োগের কথা ঘোষণাও হয়। সহারা আর্বিট্রেটর হিসেবে এক অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নাম প্রস্তাব করে। কিন্তু চার মাস ধরে জবাব দেয়নি বোর্ড। চার মাস পর প্রস্তাবিত নামে আপত্তির কথা জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়। তাতে কারণ বা বিকল্প নাম কিছুই ছিল না। এর পরেও বোর্ডের সঙ্গে এই ব্যাপারে বহু বার যোগাযোগের চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু প্রতি বারই বোর্ড কর্তারা তা ফলপ্রসূ হতে দেননি। এই কয়েক বছরে সহারা নিয়মিত ১৭০.২০ কোটি টাকার বার্ষিক ফি দিয়েছে এই আশায় যে, জটিলতা কেটে যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা কাটেনি।”
সম্প্রতি রাজীব শুক্ল এই জটিলতা কাটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বলে দাবি সহারাশ্রী সুব্রত রায়ের। নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত যে ব্যাঙ্ক গ্যারান্টিতে হাত দেওয়া হবে না, সেই প্রতিশ্রুতিও শুক্ল দিয়েছিলেন বলে দাবি। কিন্তু ১৯ মে পুণের শেষ ম্যাচের পরই ২০ মে ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি ভাঙিয়ে নেওয়া হয়।
গত বছর ক্রিকেটারদের নিলামের দিন একই ভাবে আইপিএল থেকে সরে দাঁড়ানো এবং জাতীয় দলের স্পনসরশিপ তোলার কথা জানায় সহারা। সে বার বোর্ড প্রেসিডেন্ট শ্রীনিবাসন সহারা কর্তাদের সিদ্ধান্ত বদলানোর ব্যাপারে রাজি করালেও এ বার আর বরফ গলবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন সুব্রত রায়। বলেছেন, “পুরো টাকা মকুব করে দিলেও এ বার সিদ্ধান্ত বদলাচ্ছি না আমরা।”
|
সহারার সিদ্ধান্ত |
আইপিএল সেভেনে পুণে টিমের সঙ্গে থাকছে না তারা।
ডিসেম্বরের পরে ভারতীয় দলের স্পনসরও থাকবে না। |
কেন এই সিদ্ধান্ত |
দলের সংখ্যা, ম্যাচের সংখ্যা ও আয় কমে যাওয়ায় বার্ষিক ফি কমানোর অনুরোধ
জানিয়েছিল সহারা। তিন বছর ধরে সেই অনুরোধে বোর্ডকর্তারা কর্ণপাত না করায়
ও সহারার ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি বোর্ড ভাঙিয়ে নেওয়ায় এই সিদ্ধান্ত। |
বোর্ডের প্রতিক্রিয়া |
নিয়ম মেনেই সব কিছু হয়েছে। এর পরও সহারার দল তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত দুঃখজনক।
— রাজীব শুক্ল, আইপিএল চেয়ারম্যান। |
বোর্ডের পরবর্তী পদক্ষেপ |
৫০০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি সামলাতে পরের আইপিএলে পুণে দলের
নতুন মালিকের জন্য টেন্ডার ডাকতে হবে। এর পাশাপাশি ভারতীয় দলের
জন্য
নতুন স্পনসরও নিয়ে আসতে হবে বোর্ডকে। |
সহারার পরবর্তী পদক্ষেপ |
ক্রিকেট থেকে সরে এসে এ বার জাতীয় ক্রীড়া ফাউন্ডেশন গড়বে সহারা,
যাতে বিশ্বের সেরা ক্রীড়াবিদদের নিয়ে এসে দেশের বিভিন্ন খেলার দুশোরও বেশি
উঠতি খেলোয়াড়দের অলিম্পিক স্তর পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া যায়। |
|