|
|
|
|
ভাবনা অর্থ সঙ্কট |
গতি কমছে একশো দিনের কাজে |
সুমন ঘোষ • মেদিনীপুর |
প্রয়োজনের তুলনায় একশো দিনের প্রকল্পে টাকা মিলছে না। ফলে এই প্রকল্পে কাজের গতি কমছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়।
২০১২-১৩ আর্থিক বছরে এই জেলা একশো দিনের প্রকল্পে ২৯৭ কোটি টাকা পেয়েছিল। কিন্তু খরচ হয়েছিল ৪০২ কোটি টাকা! অর্থাত্ ১০৫ কোটি টাকার ঘাটতি ছিল। কাজ করিয়েও শ্রমিকদের টাকা দিতে পারেনি প্রশাসন। আবার কিছু ক্ষেত্রে ধারে কাঁচামাল কিনতে হয়েছিল। সময়ে শ্রমিকদের টাকা না দিতে পারায় কিছু ক্ষেত্রে ক্ষোভ-বিক্ষোভের ঘটনাও ঘটে। এতে বিডিও ও পঞ্চায়েত প্রধানেরা নতুন করে কাজ করাতে উত্সাহ পান না। আর এই কারণেই পশ্চিম মেদিনীপুরে যতটা কাজ হওয়ার কথা ছিল, ততটা হয়নি। গড়ে ৩০ দিন কাজ পেয়েছে মানুষ। একশো দিনের কাজের জেলা প্রকল্প আধিকারিক প্রিয়াঞ্জন দাস বলেন, “টাকার অভাব থাকায় কিছু ক্ষেত্রে কাজের গতি কমে গিয়েছে। নাহলে কাজ পাওয়ার গড় আরও বাড়ত।”
কেন জেলা টাকা কম পাচ্ছে? সময়ে টাকা দিচ্ছে না বলে রাজ্য সরকার বারবারই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ এনেছে। পরিসংখ্যান বলছে, রাজ্যও জেলাকে টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে সুবিচার করে না। চলতি আর্থিক বছরে অর্থাত্ ২০১৩-১৪ তে পশ্চিম মেদিনীপুর এই প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত ১১৫ কোটি টাকা পেয়েছে। প্রথম ধাপে পেয়েছিল ৪৫ কোটি। চলতি মাসে এসেছে আরও ৭০ কোটি টাকা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর, বীরভূম ও বর্ধমানও ৭০ কোটি করে টাকা পেয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে কাজ করিয়ে টাকা না দিতে পারার পরিমাণ ৩৭ কোটি, বীরভূমে ১২ কোটি ও বর্ধমানের ক্ষেত্রে ২৮ কোটি টাকা। পশ্চিম মেদিনীপুরে এই পরিমাণ অনেকটাই বেশি, ১০৫ কোটি টাকা।
অথচ প্রতি বছরই কাজ বাড়ছে জেলায়। ২০০৬-০৭ সালে যেখানে বছরে ৫৮ লক্ষ দিন শ্রমদিবস তৈরি হয়েছিল, সেখানে গত আর্থিক বছরে ১৬৪ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে। ২০০৬-০৭ আর্থিক বছরে ১৫৮টি পরিবার একশো দিন কাজ পেয়েছিলেন। গত আর্থিক বছরে একশো দিন কাজ পেয়েছেন ১২ হাজার ২০৭ জন। এ দিকে, পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় বেশিরভাগ ব্লকই কম কাজ করছে। যেমন চলতি আর্থিক বছরে টাকা আসার আগে সাঁকরাইল ব্লকের দেনা ছিল ৩ কোটি ১০ লক্ষ টাকা, খড়্গপুর ২ ব্লকের দেনা ছিল প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা। কাজ করিয়ে মানুষকে টাকা না দিতে পারলে বিক্ষোভ, ঘেরাও-সহ নানা অনভিপ্রেত পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকে।
সামনেই রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন। কোনও গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতিই চাইবে না যে কাজ করিয়ে টাকা দিতে দেরি হোক। সেক্ষেত্রে তার প্রভাব পড়তে পারে ভোটে। আবার কাজ না করালেও জেলার উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে যাবে, গরিব মানুষও কাজ পাবেন না। |
|
|
|
|
|