স্বামী জেলে, ‘অপহৃতা’ স্ত্রীর নিশ্চিন্ত সংসার দিল্লিতে |
স্ত্রীকে অপহরণের অভিযোগে ৯০ দিন জেলহাজতে থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন। মামলা চালাতে গিয়ে ঘটি-বাটি বিক্রির জোগাড়। বহু বার বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, স্ত্রী তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে ঘর ছেড়েছেন স্বেচ্ছায়। অভিযোগ, স্বামীর দেওয়া তথ্য কানে তোলেনি পুলিশ। হাইকোর্টের নির্দেশে সিআইডি তদন্তে নেমে দেখে, সেই দাবিই ঠিক। দিল্লিতে গিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে সংসার পেতেছেন ওই মহিলা। এ বার পুলিশের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হবেন ভাবছেন উলুবেড়িয়ার বলরামপোতার আসাদুর রহমান।
২০০৪ সালে তেহট্ট গ্রামের রহিমার (নাম পরিবর্তিত) সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল আসাদুরের। তাঁদের এক ছেলে। ২০০৮ সালের ২৬ এপ্রিল শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান রহিমা। দিন তিনেক পরে উলুবেড়িয়া থানায় অভিযোগ করেন তাঁর স্বামী। সপ্তাহ খানেক পরে থানায় আরও একটি অভিযোগ দায়ের করেন রহিমার ভাই। তাঁর দাবি, পণের দাবিতে শারীরিক-মানসিক অত্যাচার চালাতেন আসাদুর ও তাঁর বাড়ির লোকজন। রহিমাকে খুন করতে চেয়ে অপহরণ করেছেন তাঁরা। দিন পনেরোর মধ্যেই গ্রেফতার হন আসাদুর। তিন মাস পরে জামিন পান তিনি।
পরে পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তোলেন রহিমার ভাই। গত বছর হাইকোর্টে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান তিনি। সিআইডি জানতে পারে, প্রতিবেশী এক যুবকের সঙ্গে আসাদুরের স্ত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। পেশায় জরির কারিগর ওই যুবকের সঙ্গেই বাড়ি ছাড়েন রহিমা। দিল্লিতে বিয়ে করে সংসার পেতেছেন। একটি সন্তানও আছে। রবিবার সিআইডি-র কাছে আত্মসমর্পণ করেন। সোমবার তাঁকে উলুবেড়িয়া এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। সিআইডির আধিকারিক জানান, মহিলা যেহেতু প্রাপ্তবয়স্ক এবং স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়েছিলেন বলে আদালতে জানান, তাঁকে মুক্তি দিয়েছেন বিচারক। রহিমা গোপন জবানবন্দিও দেন আদালতে। সিআইডি-র বক্তব্য, জবানবন্দির ভিত্তিতে রহিমার স্বামী-সহ বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের উদ্দেশে অপহরণের মামলা তুলে নেওয়ার সুপারিশ করা হবে হাইকোর্টে। আদালতে রহিমার ভাই বলেন, “বোনকে ফিরে পেয়েছি, এটাই অনেক।” আসাদুর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন পুলিশের বিরুদ্ধে। বলেন “পুলিশ আমাদের কোনও কথাই শোনেনি। তদন্ত করলে আগেই সব তথ্য ফাঁস হয়ে যেত।” |