কাঠগোলায় জোড়া খুনে দোষী মাফিয়া
কাঠগোলার পাশে বসে গল্প করছিলেন কর্মীরা। হঠাৎ মোটরবাইকে চড়ে এসে তাঁদের উপরে যথেচ্ছ গুলি চালিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। নিহত হন দু’জন। ২০০৯ সালের ১৪ ডিসেম্বরে ফরিদপুর (লাউদোহা) থানার এই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করা হল এলাকার কয়লা মাফিয়া শেখ আমিন ও তার সহযোগী শেখ সাজাহানকে। দুর্গাপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক দীপঙ্কর পাল এ দিন তাদের দোষী সাব্যস্ত করেন। আজ, বুধবার সাজা ঘোষণা হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মাধাইগঞ্জ মোড়ের কাছে ওই কাঠগোলাটির মালিক ছিলেন লাউদোহা এলাকার আর এক কয়লা মাফিয়া শেখ সেলিমের ভাই। দুষ্কৃতী হামলায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছিল কাঠগোলার কর্মী শিবা সিংহের। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে মারা যান শেখ জাকির নামে আর এক জন। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছিল শেখ আমিন ও শেখ সাজাহান। তদন্তে নেমে পুলিশ অনুমান করেছিল, কয়লা কারবারে প্রতিদ্বন্দ্বী সেলিমকে কোণঠাসা করতেই তাঁর ভাইয়ের কাঠগোলায় হামলা করে আমিন। তার আগে ২০০৮ সালে সেলিমের আর এক ভাই শেখ জাহাঙ্গির খুন হন। সেক্ষেত্রেও অভিযোগের তির ছিল আমিনের দিকে।

আদালতে শেখ আমিন।—নিজস্ব চিত্র।
১৯৮৩ সালে ঝাঁঝড়া কোলিয়ারি চালু হওয়ার পর থেকেই লাউদোহা এলাকায় শেখ সেলিমের দাপট শুরু হয়। তখন তাঁর অন্যতম প্রধান শাগরেদ ছিল আমিন। পরে সেই আমিনই হয়ে ওঠে সেলিমের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। সেলিম ও আমিনের কর্তৃত্ব কায়েমের লড়াইয়ে লাউদোহার কৈলাসপুর, আমদহি, মাধাইগঞ্জ এলাকা অশান্ত হয়েছে বারবার। তত দিনে মাধাইগঞ্জে বিশাল বাড়ি, কাঠগোলা, পেট্রোল পাম্প তৈরি করে ফেলেছেন সেলিম। পুলিশ সূত্রে খবর, ২০০৮-এর ১০ জুন কৈলাসপুর থেকে মাধাইগঞ্জ যাওয়ার রাস্তায় সেলিমের গাড়িতে গুলি-বোমা ছোড়ে আমিনের দল। গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও প্রাণে বেঁচে যান সেলিম। ২৩ জুলাই দুর্গাপুরে পার্টির কাজকর্ম সেরে ফেরার পথে গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে কেন্দোলা মোড়ে খুন হন সিপিএম কর্মী শেখ ফারুখ হোসেন ও সহকারী সুধীর বাউড়ি। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সেলিম গ্রেফতার হন কয়েক মাস পরে।
২০১১ সালে ১৬ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে আমদহি গ্রামের তৃণমূল কর্মী শেখ খোকন ও শেখ কামালকে তুলে নিয়ে গিয়ে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনায় শেখ আমিন, শেখ সাজাহান-সহ কুড়ি জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। ঘটনার পরে এলাকায় আসেন তৎকালীন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তৃণমূল নেতা মদন মিত্র। তাঁরা এই ঘটনার দ্রুত কিনারা দাবি করেন। এর পরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। কৈলাসপুর, আমদহি-সহ নানা এলাকায় পুলিশি অভিযান হয়। সপ্তাহখানেকের মধ্যেই আমদহি থেকে গ্রেফতার করা হয় সশস্ত্র আমিন ও সাজাহানকে। জোড়া সিপিএম কর্মী খুনে ধৃত সেলিম জামিনে ছাড়া পাওয়ার পরে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। গত ২৫ অক্টোবর বাড়ির কাছেই দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয়ে যান তিনি।
মঙ্গলবার সরকার পক্ষের আইনজীবী বশিষ্ঠ নারায়ণ ঠাকুর জানান, ২০০৯ সালে কাঠগোলায় জোড়া খুনের ঘটনায় আমিন ও সাজাহানের বিরুদ্ধে ৩০২ ও ৩০৭ ধারায় মামলা চলছিল। পুলিশ জানায়, ফরিদপুর ও বীরভূমের ইলামবাজার থানায় শেখ আমিনের বিরুদ্ধে ১৫টি অভিযোগ রয়েছে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.