মিনিট কুড়ির ঝড়ে তছনছ বাঁকুড়ার গ্রাম
ড়বৃষ্টিতে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বাঁকুড়া জেলার কয়েকটি ব্লকে। রবিবার বিকেলের ওই ঝড়ে বাঁকুড়া ১, বাঁকুড়া ২, গঙ্গাজলঘাটি, তালড্যাংরা, কোতুলপুর, সোনামুখী ব্লকে শতাধিক ঘরবাড়ি ভেঙেছে। অনেকে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন। বহু গাছ ঝড়ের দাপটে ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বহু এলাকা বিদ্যুৎহীন।
আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, ঝড়ের সর্বাধিক গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার। মিনিট কুড়ির টানা ঝড়ে প্রায় দু’মিনিট ওই গতিবেগ স্থায়ী হয়েছিল। বাঁকুড়া ১ ব্লকের মোলবনা, কেঞ্জাকুড়া, পাকুড়দা গ্রামগুলিতে বহু ঘরবাড়ি ও গোয়ালঘর ভেঙেছে। গ্রামগুলি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মোলবনা গ্রামের বাসিন্দা বিজয় বাউরি, সুভাষ বাউরি, অনিল বাউরিরা বলেন, “ঝড়ে বাড়ির চালা ভেঙে পড়েছে। আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই।”
পঁচিরডাঙা গ্রামে মাটিতে মিশেছে মাটির বাড়ি।
বাঁকুড়া ১ ব্লকের পঁচিরডাঙা গ্রামের একেবারে শেষ প্রান্তে খড়ের চালার মাটির বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন সেখ রবিউল। রবিবারের ঝড়ে তাঁর বাড়ি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। রবিউলের কথায়, “ঝড়বৃষ্টি চলছিল বিকেল থেকেই। হঠাই ঝড়ের গতি প্রচণ্ড বেড়ে গেল। বাড়ির চালাটা উড়িয়ে নিয়ে চলে গেল। বৌবাচ্চাকে নিয়ে ওই ঝড়ের মধ্যেই বেরিয়ে গ্রামের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিলাম।” তাঁর বাড়ির আসবাবপত্র, সাইকেল সবই বাড়ির মাটির দেওয়ালের নীচে চাপা পড়েছে। স্থানীয় মোলবনা গ্রামের বাসিন্দা দেবজিৎ মণ্ডল বলেন, “ঝড়ে বাড়ির চালা উড়িয়ে নিয়ে গেল। প্রথমে আতঙ্কে চিৎকার শুরু করে দিয়েছিলাম আমরা। তার পর চালাহীন ঘরেই মাথায় প্লাস্টিক নিয়ে বসে ছিলাম।” ওই গ্রামেরই দেবাশিস মণ্ডলের বাড়ি অবশ্য অক্ষতই আছে। কিন্তু ২৪ ঘন্টা পরেও ঝড়ের তাণ্ডবের আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। বললেন, “একের পর এক বাড়ির চালা চোখের সামনে ঝড়ে উড়ে যেতে দেখেছি। গ্রামবাসীরা ভয়ে চিৎকার করছিলেন। ঝড় শেষে গোটা গ্রামে শোকের পরিবেশ। চারপাশে দুর্গতদের হাহাকার।”
সোমবার দুপুর থেকে অবশ্য ভাঙা বাড়িতেই কেউ ত্রিপল, কেউ আবার খড় দিয়ে নতুন করে ছাউনি করার কাজ শুরু করে দিয়েছেন। গ্রামবাসীরা বলছেন, “আমরা কী করব? কোথায় যাব? মাথা গোজার ঠাঁই তো অন্তত চাই। তাই আপাতত ত্রিপল, প্লাস্টিক দিয়েই কাজ চালাচ্ছি। বাড়ি কবে বানাতে পারব জানি না।” ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাঁকুড়ার জেলাশাসক বিজয় ভারতী।
গাছ ভেঙে পড়েছে বাঁকুড়ার পশু হাসপাতালে।
অন্য দিকে, কালবৈশাখীর দাপটে পুরুলিয়াতেও জনজীবন কিছুটা বিপর্যস্ত হয়েছে। সোমবার বিকেলে পুরুলিয়া ২, কাশীপুর, পাড়া, হুড়া থানা এলাকায় ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় একাধিক গাছ ভেঙে পড়ে। রেললাইনের উপরে গাছ পড়ে এ দিন বিকেলে পুরুলিয়া-আদ্রা শাখায় কিছুক্ষণের জন্য রেল চলাচল ব্যাহত হয়। কাশীপুর ও হুড়ার লালপুরের মাঝে একাধিক বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে। আদ্রা ও কাশীপুরের মাঝে বিদ্যুতের লাইনের উপর গাছ পড়ে কাশীপুর এলাকা রবিবার সারারাত অন্ধকারে ডুবে ছিল। বিদ্যুৎ না থাকায় মঙ্গলবার এলাকায় পানীয় জলের পরিষেবাও ব্যাহত হয়। লালপুর মোড়ে পুরুলিয়া-বাঁকুড়া ৬০-এ জাতীয় সড়কে গাছ পড়ে যান চলাচল ব্যাহত হয়। কিছু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছের ডাল ভেঙে পড়ে কয়েক জন আহত হয়েছেন।

ছবি: অভিজিৎ সিংহ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.