ভাওয়াইয়াকে হাতিয়ার করে বেসরকারি সন্দেহজনক অর্থলগ্নি সংস্থাগুলি সম্পর্কে সচেতনতা প্রসারে উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা দফতর। ওই লগ্নি সংস্থা সম্পর্কে সচেতনতার প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে। খোঁজ চলছে সহজ কথায় বাঁধা ভাওয়াইয়া গানের। ছয় জেলায় দফতরের আধিকারিকদের ব্লক ভিত্তিক স্বনির্ভর গোষ্ঠী বাছাইয়ের নির্দেশও দেওয়া হয়। শনিবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেছেন ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে।
কেন ভাওয়াইয়া, কেনই বা স্বনির্ভর গোষ্ঠী?
ইতিমধ্যেই অর্থলগ্নি সংস্থাগুলি সম্পর্কে সচেতনতা প্রসারে পথ নাটিকা, কথা বলা পুতুল এবং শিবির করে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরামর্শ দেওয়া শুরু করেছে ক্রেতা সুরক্ষা দফতর। শিলিগুড়িতে শ্যমল সেন কমিশনের অভিযোগ গ্রহণ কেন্দ্রেও পথ নাটিকা প্রদর্শন করা হয়েছে। তবে দফতরের সমীক্ষা অনুযায়ী, শহর থেকেও গ্রামীণ এলাকায় বিভিন্ন অর্থলগ্নি সংস্থায় লগ্নি করার প্রবণতা বেশি। পথ-নাটিকা বা বিশেষজ্ঞদের মুখে পরামর্শ শোনার থেকেও জনপ্রিয় ভাওয়াইয়া গানের সুর ও কথা বেশি গ্রহণযোগ্য হবে বলেই দফতরের একাংশ মনে করছেন। দফতরের মন্ত্রীও এবিষয়ে সিলমোহর দিয়েছেন। সাধারণ মানুষদের আস্থা অর্জন করতে বিভিন্ন অর্থলগ্নি সংস্থা ‘অশোকস্তম্ভের প্রতীক’ লাগানো রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিভিন্ন নথি দেখায় বলে অভিযোগ। যদিও সে নথিগুলি আসলে সংস্থা তৈরির ছাড়পত্র, চড়া সুদে ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাধারণ মানুষের থেকে আমানত সংগ্রহের কোনও অনুমতিই তাদের নেই বলে দফতরের দাবি। ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে বলেন, “সব ভুয়ো সংশাপত্র দেখিয়ে টাকা তোলা হয়। কিন্তু সাধারণ গ্রামের মানুষের পক্ষে সেই পদ্ধতিগত জটিলতা বোঝা সম্ভব নয়। সে কারণেই তাদের সহজ সরল ভাষায় বুঝিয়ে বলতে হবে যাতে কোনও নথি বা আশ্বাসেই তারা কোনও অর্থলগ্নি সংস্থায় টাকা না রাখেন। উত্তরবঙ্গের গ্রামেগঞ্জে এই বিষয়টি সহজ ভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে ভাওয়াইয়া গান।”
পাশাপাশি, পরিবারের অন্তত একজন মহিলা কোনও না কোনও স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে যুক্ত নয়, এমন পরিবার বর্তমানে উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ কোনও গ্রামেই খুঁজে পাওয়া যাবে না। সেই সব গোষ্ঠীর দলনেত্রী বা সদস্যারা গ্রামের মানুষদের কাছে যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য ভাবমূর্তি রয়েছে বলে দফতরের দাবি। গোষ্ঠীর সদস্যসাদের প্রতি এই ‘আস্থাকে’ কাজে লাগিয়েই তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সচেতনতা প্রসারের কাজ গোটা রাজ্যেই শুরু করতে চাইছে দফতর। তাদের মতে, শহর থেকে আসা বিশেষজ্ঞদের পরিবর্তে গ্রামেরই গোষ্ঠী সদস্যাদের কথা অনেক বেশি মানুষের কাছাকাছি পৌঁছোবে। এবং প্রায় প্রতি পরিবারেই গোষ্ঠীর সদস্যা থাকায় এই ‘নেটওয়ার্কে’ সচেতনতা আপনা আপনি প্রসারিত হবে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা শুধু সচেতনই করতে পারি। সংস্থা ভুয়ো জেনেও আমাদের কিছু করার নেই, সে কাজ পুলিশের। তাই সচেতন করতেই আমরা বাড়তি উদ্যোগ নিচ্ছি। অর্থলগ্নি সংস্তাগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে কমিশন তৈরি থেকে আইন পাশ করে মুখ্যমন্ত্রী যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তাকে সার্থক করতেই এই ব্যবস্থা।”
|
নেতৃত্বে বদল, ক্ষোভ ডিওয়াইএফআইয়ে |
একেই রাজ্য এবং সর্বভারতীয় সম্মেলন মিটে যাওয়ার অনেক পরে জেলা সম্মেলন করায় সাংগঠনিক দুর্বলতা প্রকট। সেখানেও নেতৃত্ব বদল করতে গিয়ে ক্ষোভ। যার জেরে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের কলকাতা জেলা সম্মেলনের শেষ পর্বে গরহাজির থাকলেন প্রায় দেড়শো প্রতিনিধি! এ বার ডিওয়াইএফআইয়ের কলকাতা জেলার নতুন সভাপতি হলেন প্রতীক দাশগুপ্ত এবং জেলা সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ ঘোষ। কারণ ছাড়াই জেলা সভাপতির পদ থেকে স্বপন দাসকে কেন ছেঁটে ফেলা হল, প্রশ্ন তুলছেন কর্মীরাই। স্বপন ও তাঁর অনুগামীরা রবিবার সম্মেলনে যাননি। জেলা সম্পাদক রাজীব মজুমদারকে অব্যাহতি দেওয়ার ক্ষেত্রে বয়ঃসীমার যে যুক্তি, তা বিদায়ী জেলা সভাপতির বেলায় খাটে না বলে কর্মীদের দাবি। বিদায়ী নেতারা আপাতত রাজ্য কমিটিতে থাকবেন। নতুন নেতাদেরও বর্ধিত কমিটিতে ডাকতে হবে। |