কলকাতা হাইকোর্টে বসছে দু’টি চলমান পথ। মূলত হাইকোর্টের তিনটি ভবনের মধ্যে হাঁটাপথে দ্রুত যোগাযোগের জন্যই এমন ব্যবস্থা বলে জানা গিয়েছে। হাইকোর্টের প্রস্তাব অনুযায়ী রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতর এই চলমান পথ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খরচ ধরা হয়েছে ২০ কোটি টাকা।
পূর্ত দফতরের মুখ্য স্থপতি মলি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার এই চলমান ফুটপাথ তৈরির জন্য দরপত্র চাইবে। দিল্লি বিমানবন্দরে এমন চলমান পথ আছে। এর ইংরেজি নাম ট্র্যাভেলেটর।
কিন্তু হাইকোর্টে কেন দরকার চলমান পথ? মুখ্য স্থপতি জানিয়েছেন, কলকাতা হাইকোর্টের তিনটি বাড়ির মধ্যে কিছুটা দূরত্ব আছে। তিনটি বাড়িতেই রয়েছে আদালত। সেই আদালতগুলিতে সময়ে হাজির হওয়ার ক্ষেত্রে আইনজীবীদের সমস্যা হচ্ছে। একটি আদালতে মামলা শেষ করে অন্য বাড়ির আদালতে পৌঁছতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। |
এই সমস্যা কী ভাবে মেটানো যায়, তা নিয়ে রাজ্য সরকারকে ব্যবস্থা নিতে বলেছিল হাইকোর্ট। তার পরেই পূর্ত দফতরের স্থপতিরা হাইকোর্টের তিনটি বাড়ি সরেজমিন সমীক্ষা করে রিপোর্ট তৈরি করেন। তাতে বলা হয়, হাইকোর্টের মূল বাড়িটি এমন ভাবে তৈরি এবং সেখানে আদালত কক্ষগুলি এমন ভাবে রয়েছে যে, তার কোনও পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব নয়। তখনই ঠিক হয়, তিনটি বাড়ির মধ্যে দু’টি চলমান পথ তৈরি করলে সমস্যা মিটবে।
কেমন হবে এই চলমান পথ? পূর্ত দফতরের স্থপতিরা জানান, হাইকোর্টের প্রাচীন ভবনের মূল ফটকের পাশে ২০ ফুট উচ্চতায় বসবে প্রথম চলমান পথটি। তাতে পুরনো ভবনের সঙ্গে সংযোগ হবে হাইকোর্টের শতবার্ষিকী ভবনের। দ্বিতীয় চলমান পথটি বসবে শতবার্ষিকী ভবনের অন্য প্রান্তে। সেটি যুক্ত হবে হাইকোর্টের শেষ বাড়িটির সঙ্গে। প্রত্যেকটি চলমান পথেই থাকবে আসা-যাওয়ার ব্যবস্থা। একটির দৈর্ঘ্য হবে ১৫০ ফুট, অন্যটির ১০০ ফুট। আসা-যাওয়ার দু’টি পথ হবে ৪ ফুট করে মোট ৮ ফুট চওড়া। নিরাপত্তার জন্য দু’ধারে থাকবে রেলিং। পথগুলির গতি হবে সেকেন্ডে দেড় ফুট। ২০ ফুট উঁচু চলমান পথটিতে ওঠা ও নামার জন্য দু’টি এসক্যালেটর বসানো হবে হাইকোর্টের মূল ফটকের পাশে। চলমান পথ বিদ্যুতে চলবে। জরুরি প্রয়োজনের জন্য থাকবে ব্যাটারি এবং জেনারেটর।
কারা ব্যবহার করতে পারবেন এই চলমান পথ? পূর্ত দফতর সূত্রে বলা হয়েছে, আইনজীবী-সহ সকলেই ওই পথ ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এই চলমান পথ বিচারপতিদের ব্যবহারের জন্য নয় বলে জানিয়েছেন মুখ্য স্থপতি। |