|
|
|
|
বেটিং চক্রের খোঁজে |
মহানগরের অলিগলিতে নজরদারি দিল্লি পুলিশের
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি ও কলকাতা |
আইপিএলের বেটিং কেলেঙ্কারির সঙ্গে এ বার জুড়ে গেল মহানগরের নাম-ও! গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ক্রিকেট জুয়ার টাকার হদিস পেতে শনিবার কলকাতা আসেন দিল্লি পুলিশের ‘স্পেশ্যাল সেল’-এর অফিসারেরা। স্থানীয় পুলিশকে না জানিয়েই কয়েকটি এলাকায় ঘুরেছেন তাঁরা। তবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের (আইবি) একটি দল তাঁদের সঙ্গে ছিল। শহরের বেটিং চক্রের আড্ডাগুলিতেই মূলত নজরদারি চালাতে দিল্লি পুলিশের আগমন বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, মধ্য কলকাতার বড়বাজার, পোস্তা, বন্দর এলাকার খিদিরপুর, একবালপুর এবং কলকাতা সংলগ্ন হাওড়া ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার একাংশে বেটিং চক্রের রমরমা রয়েছে। লালবাজারের একাংশের দাবি, ইদানীং বড়বাজার ও পোস্তা এলাকায় তেমন ভাবে ক্রিকেট জুয়ার আসর বসছে না। বরং পূর্ব কলকাতা, হাওড়া ও বাগুইআটি, লেকটাউন, রাজারহাটের দিকে এই অপরাধের রমরমা বেড়েছে। হাওড়া ও রাজারহাট থেকে সাম্প্রতিক কালে কয়েক জন ক্রিকেট জুয়াড়িকে গ্রেফতার করে সিআইডি।
পুলিশ বলছে, হাওড়া, লেকটাউনের মতো এলাকাগুলিতে ইদানীং একের পর এক বহুতল গজিয়ে উঠছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বহুতলেরই কোনও ফ্ল্যাটে টিভি, কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন নিয়ে এই ধরনের জুয়ার আসর বসানো হয়। গত ডিসেম্বর মাসে ইডেনে ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট ম্যাচ চলার সময় ক্রিকেট বেটিং চালানোর অভিযোগে বেলেঘাটার একটি বহুতল থেকে দীনেশ গুপ্ত নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, দীনেশের সঙ্গে দেশের বড় আকারের বেটিং চক্রের যোগ রয়েছে।
এ ছাড়াও রয়েছে, জুনিয়র কলকাতা নামে এক জুয়াড়ি। বছর দুয়েক আগে মুম্বইয়ের লোখন্ডওয়ালায় একটি বেটিং চক্রে গোয়েন্দারা হানা দিয়েও জুনিয়ার কলকাতাকে ধরতে পারেননি। এ রাজ্যের পুলিশ সূত্রের খবর, বছর কয়েক আগে জুনিয়র কলকাতা শহরতলি এলাকায় বেটিং চক্র চালালেও বর্তমানে সে ভিন্ রাজ্যেই থাকে। মূলত দুবাইয়ের বেটিং মাফিয়া সুনীল অভিচন্দানি ওরফে সুনীল দুবাইয়ের হয়েই এই চক্র চালায় সে। তা হলে কি আইপিএলে বেটিং চক্রের শিকড় ছড়িয়েছে এ রাজ্যেও?
এ ব্যাপারে দিল্লি পুলিশের একটি সূত্রের ব্যাখ্যা, কলকাতার বেটিং চক্র যে জড়িত সে ব্যাপারে নিশ্চিত ভাবে প্রমাণ না মিললেও কিছু সূত্র মিলেছে। তা না হলে আমদাবাদ, হায়দরাবাদ বা মুম্বইয়ের পাশাপাশি কলকাতাতে দিল্লির গোয়েন্দারা হাজির হতেন না। কী সম্পর্কে খোঁজ নেবেন তাঁরা?
একটি সূত্রের খবর, আইপিএল বেটিং চক্রের টাকা এই রাজ্যেও লেনদেন হয়েছে কি না, সেটাই খতিয়ে দেখতে এসেছে দিল্লি পুলিশ। কারণ, বেটিংয়ের ঘটনায় ফৌজদারি আইনে খুব কড়া শাস্তি দেওয়া যায় না। কিন্তু যদি টাকা লেনদেন সংক্রান্ত বড় ধরনের অপরাধ নজরে আসে (মানি লন্ডারিং), তা হলে মামলাটি গুরুতর হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে মামলাটিতে জড়িয়ে পড়তে পারে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট-ও (ইডি)।
এ দিন দুপুরে কলকাতা পৌঁছে দিল্লি পুলিশের দলটি আইবি-র দফতরে হাজির হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালান। তবে কেউ ধরা পড়েছে কি না, তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি গোয়েন্দারা। পুলিশ সূত্রের খবর, বড়বাজার, পোস্তা-সহ মধ্য কলকাতার কয়েকটি জায়গায় নজরদারি চালান তাঁরা। তবে কোনও গ্রেফতারির খবর মেলেনি। |
|
|
|
|
|