|
|
|
|
স্থায়িত্বের পক্ষে ভোট চাইবে কংগ্রেস, অস্ত্র খাদ্য আইন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
প্রস্তাবিত খাদ্য নিরাপত্তা আইনকে সামনে রেখে লোকসভা নির্বাচনে এ বার ‘স্থায়িত্বের জন্য’ ভোট চাইতে চলেছেন সনিয়া ও রাহুল গাঁধী। মানুষের ন্যূনতম চাহিদা পূরণের স্বার্থে কেন্দ্রে সরকারের স্থায়িত্ব যে অপরিহার্য, ভোটের আগে সেই বিতর্ক উস্কে দেওয়াকেই এ বার কৌশল হিসেবে বেছেছেন কংগ্রেসের দুই কাণ্ডারী।
এর আগে ১০০ দিন কাজের প্রকল্প রূপায়ণ করে গত লোকসভা ভোটে তা প্রচারের হাতিয়ার করেছিল কংগ্রেস। সেই ধারা বজায় রেখে খাদ্য নিরাপত্তা আইনকে যে তাঁরা ২০১৪ সালের প্রচার-অস্ত্র করতে চান, তা নিয়ে কোনও রহস্য নেই। কিন্তু সমস্যা হল, বিজেপি-র বাধায় সেই বিল এই বাজেট অধিবেশনেও পাশ হয়নি। কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, খাদ্য নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন নিয়ে এই নেতিবাচক পরিস্থিতিকেই কৌশলে দল ও সরকারের জন্য এখন ইতিবাচক করে তুলতে মাঠে নামতে চাইছেন সনিয়া-রাহুল। তাঁরা মানুষকে জানাতে চান, সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবেই মানুষের মুখে অন্ন জোগানোর নিশ্চয়তা এখনও দিতে পারেনি কংগ্রেস। তাই ‘গরিবের পেটে ভাত জোগাতে’ আবার কংগ্রেসকে জিতিয়ে আনুক মানুষ।
গত পরশু রাজস্থানে ইতিমধ্যেই এ কথা বলেছেন রাহুল। তা ছাড়া খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি জাতীয় স্তরে তুলে ধরার জন্য ক’দিন আগে ওড়িশার কালাহান্ডির সাংসদ ভক্তচরণ দাসকে সর্বভারতীয় কংগ্রেসের মুখপাত্র করেছেন রাহুল। তবে কংগ্রেসের শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, ২২ মে সরকারের চার বছর পূর্তির অনুষ্ঠান থেকে খাদ্য নিরাপত্তার প্রশ্নে প্রচার আরও জোরদার করবেন সনিয়া।
কয়লা কেলেঙ্কারির জেরে সংসদ অচল করে রেখে বিজেপি জমি ও খাদ্য নিরাপত্তা বিল পাশ করাতে দেয়নি। সরকারের একাংশের বক্তব্য, সে ক্ষেত্রে খাদ্য নিরাপত্তা ও জমি বিল নিয়ে অর্ডিন্যান্স জারি করা হোক। তা হলে গোটা দেশে খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্প রূপায়ণ শুরু করে দেওয়া সম্ভব। কিন্তু সরকারের আর একটি অংশের বক্তব্য, অর্ডিন্যান্স না এনে কংগ্রেস বরং এটাই প্রচার করুক, যে বিজেপি মানুষের অন্ন কেড়ে নিচ্ছে।
গত কাল রাতে কংগ্রেস কোর গ্রুপের বৈঠকে এ ব্যাপারে সবিস্তার আলোচনা হয়। এক শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী বলেন, যে হেতু মূল বিলটিতে প্রচুর সংশোধন প্রস্তাব রয়েছে, তাই অর্ডিন্যান্স জারি করলে জটিলতা বাড়বে। আবার এ-ও ঠিক যে খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্প রূপায়ণ না করে শুধু বিজেপি-কে দায়ী করে ভোট মিলবে না। সে জন্য এ প্রস্তাবও রয়েছে যে বিল পাশের অপেক্ষায় না থেকে প্রকল্প রূপায়ণ শুরু করে দেওয়া হোক। কারণ প্রকল্পটি শুরুর জন্য আইনের প্রয়োজন নেই। খাদ্যের নিরাপত্তাকে মানুষের মৌলিক অধিকার হিসাবে সুনিশ্চিত করার জন্যই আইনের প্রয়োজন। এর পর বাদল অধিবেশনেও বিজেপি যদি বিলটি পাশ করাতে না দেয়, তখন কংগ্রেস তাদের বিরুদ্ধে প্রচার
করতে পারবে।
কংগ্রেসের শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্প রূপায়ণের জন্য শেষ পর্যন্ত কোন পথ সরকার বেছে নেয়, এক সপ্তাহের মধ্যেই তা চূড়ান্ত হবে। তার পর এই হাতিয়ারকে সামনে রেখে স্থায়িত্বের জন্য ভোট চাওয়াই হবে সনিয়া-রাহুলের প্রচারের কৌশল। কংগ্রেসের ওই নেতার কথায়, সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, হিমাচল, কর্নাটক ইত্যাদি বিভিন্ন রাজ্যের ভোটে দেখা গিয়েছে মানুষ স্থায়িত্বের জন্য কোনও একটি দলকে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিচ্ছে। কেন্দ্রে স্থায়ী সরকার না থাকলে দেশ জুড়ে যে অস্থিরতা তৈরি হয়, মানুষ তা বোঝেন। সেই কারণেই এই বিষয়টিতে জোর দিচ্ছেন মা-ছেলে। |
|
|
|
|
|