তদন্তে সন্তুষ্ট সারদা-কর্তা, গোয়েন্দারাও
হেফাজতে চাইল না পুলিশ, সুদীপ্ত জেলে
রাজ্যের তদন্তে আস্থার কথা আগেই জানিয়েছিলেন সুদীপ্ত সেন। শনিবার বিধাননগর আদালতে ঢোকার মুখে প্রশ্নের জবাবে সারদার কর্ণধার ফের জানালেন, পুলিশি তদন্তে তিনি খুশি। তাঁকে জেরা করে এই তদন্তে সন্তুষ্ট বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা কর্তারাও। সে কারণে সুদীপ্তকে আর নিজেদের হেফাজতে চাননি তাঁরা। ফলে এক টানা ২৩ দিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পরে এ দিন সুদীপ্ত এবং সারদা সংস্থার আর এক কর্তা অরবিন্দ চৌহানকে ৩১ মে পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে বিধাননগর আদালত। এ দিনই তাঁদের দমদম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আজ, রবিবারই অবশ্য দমদম জেল থেকে সুদীপ্তকে নিজেদের হেফাজতে নেবে বারুইপুর থানার পুলিশ। শনিবার বারুইপুর এবং ক্যানিং থানার তরফে আদালতে এই আর্জি জানানো হলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন। নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল ওড়িশা পুলিশও। বিচারক সেই আর্জি নামঞ্জুর করে জানিয়ে দেন, নিয়ম মেনে আবেদন করতে হবে তাদের।
যে মামলায় সুদীপ্তকে এ দিন জেল হেফাজতে পাঠানো হয়, তার অভিযোগকারী কনৌজ মণ্ডল নামে এক আমানতকারী।
থানা থেকে: সল্টলেক আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সুদীপ্ত সেনকে। শনিবার শৌভিক দের তোলা ছবি।
ওই মামলাতেই এর আগে সুদীপ্তকে ন’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। সারদা কাণ্ডে এ দিন আরও পাঁচটি মামলা যোগ করেছে পুলিশ। তার মধ্যে তিনটি সংস্থার কর্মীদের বেতন না দেওয়া সংক্রান্ত, একটি ৫৪ লক্ষ টাকার চেক বাউন্স সংক্রান্ত এবং শেষেরটি শ্যামলী মণ্ডল নামে এক আমানতকারীর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতারণার মামলা।
সুদীপ্তর অন্যতম আইনজীবী সমীর দাস এ দিন তাঁর মক্কেলের জামিনের আর্জি জানান। বিচারক তখন সরকারি আইনজীবীর কাছে জানতে চান, পুলিশি তদন্ত কি শেষ? জবাবে তিনি আদালতকে জানান, অভিযুক্তদের জেরার কাজ অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। এর পরেই সুদীপ্তদের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। পুলিশ কেন সুদীপ্তদের নিজেদের হেফাজতে চাইল না? আদালতের বাইরে এক শীর্ষ গোয়েন্দা-কর্তাকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “তদন্তের স্বার্থে যেটুকু তথ্য প্রয়োজন, ওঁদের জেরা করে আমরা তা পেয়ে গিয়েছি। তদন্তে আমরা সন্তুষ্ট।” এ দিন, বারুইপুর ও ক্যানিং থানার পুলিশ সুদীপ্তদের জামিনের বিরোধিতা করে নিজেদের হেফাজতে নিতে চায়। বিচারক সে আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
ধরা পড়ার পর থেকে এ পর্যন্ত একাধিক বার সুদীপ্তকে আদালতে হাজির করা হলেও সওয়াল-জবাবের সময় কিছুটা উদাসীনই দেখিয়েছিল তাঁকে। কিন্তু এ দিন দুপুরে বিধাননগরের এসিজেএম এএইচএম রহমানের এজলাসে আনার পর থেকেই সারদা কর্ণধার ছিলেন বেশ চনমনে। শনিবার ছুটির দিন বলে আদালতে পুলিশ, কোর্ট-কর্মী ও সাংবাদিক ছাড়া বাইরের লোকজনের উপস্থিতি কম ছিল। হাল্কা হলুদ রঙের হাফ হাতা পাঞ্জাবি ও সাদা পাজামা পরা সুদীপ্ত এ দিন সারাক্ষণই গরাদ ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এজলাসের লক-আপে ঢোকার পরেই একটু দূরে বসে থাকা অরবিন্দকে ডেকে নেন নিজের পাশে। আগাগোড়াই আইনজীবীদের কথা মন দিয়ে শোনেন। বিচারকের বক্তব্য শুনতে এ দিন এতটাই উদগ্রীব ছিলেন যে, পাশে বসা অন্য মামলার অভিযুক্তেরা নিজেদের মধ্যে কথা বললেও সুদীপ্ত ইশারায় তাঁদের থামিয়ে দিচ্ছিলেন।
এ দিন অসুস্থতার কারণে সারদা-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে আদালতে হাজির করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশকে বিচারক বলেছেন, অভিযুক্তকে দ্রুত সুস্থ করে আদালতে হাজির করতে হবে অথবা ভিডিও কনফারেন্সের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে আদালত তাঁর সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারে। সারদা-কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত চেয়ে এ দিন আদালতের সামনে বিক্ষোভ দেখায় যুব কংগ্রেস ও বিজেপি।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.