ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি সারদা কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায়। ফলে এ দিন তাঁকে আদালতে হাজির করানো গেল না।
শনিবার সকাল ৮টা নাগাদ দেবযানীকে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আদালত জানিয়েছে, সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত ওই হাসপাতালেই রাখা হোক তাঁকে। সুস্থ হলে ফের আদালতে হাজিরা দিলে ঠিক হবে, এর পরে তাঁকে কোথায় রাখা হবে পুলিশি হেফাজতে, না জেল হেফাজতে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, ক’দিন ধরেই স্পন্ডিলোসিসের ব্যথায় ভুগছিলেন দেবযানী। শুক্রবার সকাল থেকে পেটের সমস্যাও তৈরি হয়। বমি-পায়খানা, সেই সঙ্গে পেটের যন্ত্রণা। গায়ে অ্যালার্জিও বেরোয়। অসুস্থতা বাড়লে রাতেই তাঁকে নিউটাউন থানা থেকে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কিছু ওষুধপত্র দেওয়ার পরে ফের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়।
কিন্তু রাতেই আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন দেবযানী। শরীর থেকে অতিরিক্ত জল বেরিয়ে যাওয়ায় প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে শনিবার সকালে পুলিশ তাঁকে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। |
ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ শুশ্রূত বন্দ্যোপাধ্যায় ও গ্যাসট্রোএন্ট্রোলজিস্ট সুজিত চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে হাসপাতালের সাত তলায় একটি কেবিনে পুলিশি পাহারায় রাখা হয়েছে তাঁকে। শুশ্রূতবাবু শনিবার বলেন, “জীবাণু সংক্রমণ হয়েছে দেবযানীর। শরীর থেকে অনেক জল বেরিয়ে গিয়েছে বলে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। তবে দুপুরে ডাল-ভাত খেয়েছেন। কী থেকে এই সংক্রমণ, তা দেখতে রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি।” আজ, রবিবারও দেবযানীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বলেই চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
সরকারি হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে কেন তুলনায় ব্যয়বহুল বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল দেবযানীকে, সেই প্রশ্ন উঠেছে। এ ব্যাপারে তদন্তকারীদের বক্তব্য, দেবযানীর অসুস্থতা এতই বেড়েছিল যে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির দরকার ছিল। নিউটাউনের কাছেই সল্টলেকের ওই বেসরকারি হাসপাতাল। তাই তড়িঘড়ি সেখানেই তাঁকে ভর্তি করা হয়। দিন কয়েক আগে সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেনকে অবশ্য শারীরিক পরীক্ষার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ।
দেবযানী সম্পর্কে আদালতের এ দিনের নির্দেশে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তাঁর আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা। তিনি বলেন, “আদালত তাঁর মক্কেলের পুলিশি হেফাজত বা জেল হেফাজত সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু জানায়নি। বলেছে, আপাতত তিনি হাসপাতালেই থাকবেন।
সেখান থেকে সুস্থ হয়ে আদালতে হাজির হলে বা হাসপাতাল থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের ব্যবস্থা করা গেলে তাঁর পরবর্তী হেফাজত সম্পর্কে রায় জানানো হবে। কিন্তু আইনে হাসপাতালের হেফাজত বলে কিছু হয় না। আমরা এর বিরুদ্ধে আবেদন জানাব।” |