|
|
|
|
ঠিকাদার গররাজি, সবংয়ে সেতু নির্মাণের কাজে শুরুতেই ধাক্কা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • সবং |
সেতুর কাজ শুরু করতে গিয়ে সবংয়ে প্রথমেই ধাক্কা খেল সেচ দফতর।
অনগ্রসর এলাকা উন্নয়ন তহবিলের অর্থে সবংয়ের বিভিন্ন জায়গায় ১৪টি সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। দুই ঠিকাদার সংস্থা কাজের বরাত পায়। তার মধ্যে একটি সংস্থা (৬টি সেতুর দায়িত্বে ছিল) শেষ মুহূর্তে কাজ করবে না জানানোয় বিপাকে পড়েছে সেচ দফতর। এই পরিস্থিতিতে ফের দরপত্র ডাকতে উদ্যোগী হচ্ছে তারা। দফতরের ইঞ্জিনিয়ার সুবীর লাহা বলেন, “আমরা পুনরায় দরপত্র আহ্বান করব। যাতে দ্রুত সব সেতুর কাজ শেষ করা যায় সে জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
সবং ব্লকের চার দিক ঘিরে রয়েছে বিভিন্ন নদী ও খাল। ফলে ফি বছরই বন্যা হয়। সর্বত্র সেতু না থাকায় সমস্যা হয় নদী ও খাল পারাপারেও। আবার কোথাও সেতু থাকলেও তা এতই সঙ্কীর্ণ যে সেখান দিয়ে বড় গাড়ি চলাচল করে না। এমনকী ছোট গাড়ি চলার সময় তার পাশ দিয়ে সাইকেলে করেও কেউ যেতে পারে না। অপেক্ষা করতে হয় গাড়ি পার না হওয়া পর্যন্ত। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য সবংয়ে সেতু ও রাস্তার দাবি দীর্ঘদিনের। এখন অবশ্য কয়েকটি এলাকায় প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় রাস্তা হয়েছে। কিন্তু সেতু ছাড়া উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব নয়। তা বুঝে সরকার কেলেঘাই-কপালেশ্বরী-বাগুই বেসিনের সংস্কারের সঙ্গে সঙ্গেই ১৪টি সেতু তৈরির পরিকল্পনা নেয়। অবশ্য সেতু তৈরি মূল প্রকল্পের মধ্যে না থাকায় রাজ্য সরকার অনগ্রসর এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ করে। |
|
কপালেশ্বরী নদীতে সেতু তৈরির জন্য চলে এসেছে সরঞ্জাম। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
প্রশাসন সূত্রে খবর, ১৪টি সেতুর জন্য বরাদ্দ হয় ৩৭ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। ঠিক হয়, সেতুগুলি হবে দু’লেনের এবং ৭.৫ মিটার চওড়া। ছোট সেতুটিও চওড়ায় হবে ৪.২৫ মিটার। ফলে সব ক্ষেত্রেই বড় গাড়ি চলাচল করতে পারবে। সিদ্ধান্ত হয়, কপালেশ্বরী নদীর উপর ২টি সেতু হবে। একটি ভুয়াতে ও অন্যটি মোহিনী বাজারে। ভুয়ার জন্য বরাদ্দ হয় সাড়ে ৯ কোটি টাকা ও মোহিনী বাজারে ৯ কোটি ২ লক্ষ টাকা। তা ছাড়া হবে গণপথ খালের আমদা বসন্তপুর, শিমুলতলা ও তেখালিতে। প্রথম দু’টি সেতুর জন্য বরাদ্দ হয় ২ কোটি ৯ লক্ষ টাকা করে এবং তেখালির জন্য ২ কোটি ৮ লক্ষ টাকা। এ ছাড়াও বাঁশকোনা খালের উপরে শ্যামসুন্দরপুর (১ কোটি ৩৮ লক্ষ), কালী মণ্ডপ খালের উপর মোহাড় বাজার (১ কোটি ২২ লক্ষ), রায়চক (১ কোটি ৭৭ লক্ষ) ও কেরুড়ে (১ কোটি ৬৭ লক্ষ) হবে সেতুগুলি। সঙ্গে আমড়াখালি খালের উপর বিষ্ণুপুর (১ কোটি ৬২ লক্ষ) ও মুরারীচকে (১ কোটি ২২ লক্ষ) ২টি সেতু হবে। দোখালি খালের উপর খড়িকাতে সেতুর জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা। খড়িকা খালের খালের উপর কুলেশ্বরী বাজার (১ কোটি ৪২ লক্ষ) ও সতী খালের উপর নিশ্চিন্তিপুর-সিংপুরে (১ কোটি ৪৩ লক্ষ) হবে একটি করে সেতু।
সেচ দফতর জানিয়েছে, দুই বছরের মধ্যে যাতে সব সেতু তৈরি হয় তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ঠিকাদার সংস্থা সেখানে শিবির করেছে। এই অবস্থায় শেষ মুহূর্তে একটি সংস্থা কাজ করবে না বলে জানিয়ে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছে সেচ দফতর। বিষ্ণুপুর বাজার, আমড়াখালি, কুলেশ্বরী বাজার, নিশ্চিন্তিপুর-সিংপুর ও কেরুড়এই ৬টি সেতু করার কথা ছিল তাদের। এই সেতুগুলির কাজ অন্য ঠিকা সংস্থাটিকে দেওয়ার জন্য অর্থ দফতরের অনুমোদন চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু অর্থ দফতর সেই অনুমোদন না দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করতে হবে। ফলে সেতু তৈরির কাজ কিছুটা পিছিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা। কারণ, গ্রীষ্ম পেরোলেই বর্ষা। দরপত্র আহ্বান করে কাজের ওয়ার্ক অর্ডার দিতে দিতেই হয়তো বর্ষা নামবে। তা হলে এই মরসুমে আর কাজ শুরুই করা যাবে না। যদিও সেচ দফতর জানিয়েছে, দ্রুত গতিতে কাজ শুরু করতে সব ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে। |
|
|
|
|
|