|
|
|
|
চালা উড়েছে ঝড়ে, খোলা আকাশে পাঠ |
সুব্রত গুহ • কাঁথি |
ক্লাস শুরুর আগে কাঁধে করে বার করতে হবে চেয়ার-টেবিল, বেঞ্চ। তারপর গাছের ডালে টাঙাতে হবে ব্ল্যাক বোর্ড। তবেই শুরু হবে পঠন-পাঠন। গত জানুয়ারি মাসে আচমকা ঝড়ে স্কুলের চালা উড়ে যাওয়ার পর থেকে খোলা আকাশের নীচে এ ভাবেই চলছে রামনগর ২ ব্লকের কালিন্দী গ্রাম পঞ্চায়েতের দাদনপাত্রবাড় মধ্যশিক্ষা কেন্দ্র।
শুরুর শুরুতে চেয়ার-টেবিল টানার কাজটুকু সারতে হয় দাদনপাত্রবাড়, শৌলা, অরখবনিয়া, মন্দারমণি, সোনামুই, সিলামপুর থেকে আসা ছোট-ছোট ছেলেমেয়েদেরই। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির প্রায় ৩০০ জন ছাত্র-ছাত্রীর জন্য আছেন পাঁচ জন শিক্ষক আর একজন শিক্ষিকা। স্কুলের শিক্ষক সুদীপ প্রামাণিকের কথায়, “ঝড়ে ক্লাসঘরের চালা উড়ে গিয়েছিল। নিরাপত্তার কথা ভেবে ভাঙা ক্লাসঘরের বদলে খোলা আকাশের নীচেই ক্লাস করছি আমরা।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাছাকাছি স্কুল না থাকায় ১৯৮৯ সালে তফসিলি অধ্যুষিত এই এলাকার মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েদের পড়ানোর জন্য ‘সিন্ধু সৈকত বাণী নিকেতন’ নামে শিক্ষাকেন্দ্র খুলেছিলেন কিছু উদ্যোগী যুবক। সেটিই আজকের দাদনপাত্রবাড় মধ্যশিক্ষা কেন্দ্র। গত ২০০৪ সালে স্কুলটি পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়। |
|
বিপন্ন শিক্ষার অধিকার: দাদনপাত্রবাড় মধ্যশিক্ষা কেন্দ্রে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
দাদনপাত্রবাড় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য গৌরহরি সাহু জানান, দাদনপাত্রবাড় এলাকা কোস্টাল রেগুলেটিং জোনের আওতায় পড়ায় গৃহনির্মাণ নিয়ে নানা বিধিনিষেধ আছে। তাই স্থানীয় বিডিও সুকান্ত সাহা ও দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের নির্বাহী আধিকারিক সৌমেন পালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। দু’জনেই স্কুলের ঘর তৈরিতে কোনও বাধা নেই বলে জানালে আর্থিক সাহায্যের জন্য জেলা পরিষদে যোগাযোগ করা হয়।
জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ ও স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য দেবব্রত মণ্ডল বলেন, “ওই শিক্ষাকেন্দ্রের ভেঙে পড়া স্কুল নতুন করে তৈরির জন্য ৩ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তা স্কুলের পরিচালন সমিতির কাছে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে।”
টাকা বরাদ্দ হলেও ভবন তৈরি হয়নি কেন?
স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক দেবব্রত পঞ্চাধ্যায়ী জানান, “জেলা পরিষদ থেকে স্কুলঘর তৈরির জন্য আমরা ৩ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা পেয়েছি। কিন্তু এই টাকায় স্কুলের চারটি শ্রেণিকক্ষ তো দূরের কথা একটিও তৈরি করা সম্ভব নয়। তাই টাকা পড়ে রয়েছে।” |
|
|
|
|
|