এক বালিকাকে ধর্ষণের ঘটনার ২৩ দিনের মাথায় অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত। আজ, শনিবার অভিযুক্তের সাজা ঘোষণা করবেন মালদহ আদালতে জেলা ও দায়রা বিচারক সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়। পুলিশ ও আইনজীবীরা জানান, গত বছর শিশুদের উপরে যৌন নির্যাতন রুখতে যে নতুন আইন হয়েছে, তা কাজে লাগিয়েই ওই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হয়েছে।
পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলা এত দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার ঘটনাকে ‘দৃষ্টান্তমূলক’ বলে মনে করছেন পুলিশ-প্রশাসনের প্রায় সকলেই। এ দিন রায় ঘোষণার পরে ধর্ষিতা ছাত্রীর মা আদালত চত্বরে কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, “এত তাড়াতাড়ি মামলার ফয়সলা হবে, স্বপ্নেও ভাবিনি!”
পুলিশ জানায়, অভিযুক্তের নাম বিভূতি রায়। মালদহের বামনগোলা থানা এলাকার বাসিন্দা ওই ৬৫ বছরের বৃদ্ধের বিরুদ্ধে গত ২৪ এপ্রিল এলাকার এক পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে একাধিক বার ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযুক্তের ছেলে ঘটনাটি গোপন রাখার জন্য হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ। মেয়েটির মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে সে দিনই অভিযুক্ত বাবা-ছেলেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ দিন অবশ্য আদালতে অভিযুক্তের ছেলেকে নির্দোষ বলে ঘোষণা করা হয়। কী ভাবে এত দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি সম্ভব হল?
মালদহের পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় জানান, নতুন আইনটি হওয়ার আগে শিশু ও নাবালক-নাবালিকাদের উপরে কেউ যৌন অত্যাচার করলে ৩৭৬ ও ৩৫৪ ধারায় মামলা করা হত। কিন্তু, জামিন অযোগ্য ও কড়া সাজা হতে পারে যে ৩৭৬ ধারায় তা তখনই প্রয়োগ করা যেত, যখন মহিলার যৌনাঙ্গে কোনও পুরুষাঙ্গ প্রবেশ ঘটত। অন্য কোনও রকম নিগ্রহের ক্ষেত্রে ৩৭৬ ধারায় মামলা করা যেত না। তাই বহু ক্ষেত্রে শিশুদের উপরে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ পেয়েও জামিনযোগ্য ৩৫৪ ধারায় পুলিশকে মামলা করতে হয়েছে।
শিশুদের উপরে যৌন নির্যাতনের নতুন আইনে (২০১২) কিন্তু বলা হয়েছে, কোনও পুরুষ কোনও শিশু কিংবা কিশোর-কিশোরীর দেহের কোন অংশে চুম্বন, স্পর্শ বা অত্যাচারের চেষ্টা করলে, এমনকী অশ্লীল ছবি দেখালেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ওই আইন প্রযোজ্য হবে। পুলিশ সুপার বলেন, “বামনগোলা থানার মামলায় অভিযোগ পেয়েই পুলিশ দ্রুত তদন্ত শেষ করে। জবানবন্দি ও তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে পুলিশ চার দিনের মধ্যে চার্জশিট দেয়।” |