কলকাতা শহর ও শহরতলির প্রায় ৫০ হাজার সেট-টপ বক্সে কেব্ল সম্প্রচার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অপারেটরদের অভিযোগ, কলকাতার একটি মাল্টি সিস্টেম অপারেটর (এমএসও) ‘মন্থন’ ওই সম্প্রচার বন্ধ করেছে। যদিও মন্থনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে: প্রযুক্তিগত সমস্যাতেই সম্প্রচার বন্ধ হয়েছে। তা মেরামতির চেষ্টা চলছে।
এই ঘটনা ঘিরে বৃহস্পতিবার সকালে কয়েকশো কেব্ল অপারেটর গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ে মন্থনের সদর দফতরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। সেখানে কয়েক দফা বৈঠকও হয়। তবে রাত পর্যন্ত সমস্যা মেটেনি। বুধবার একই সমস্যা হয় আর এক এমএসও ‘সিটি কেব্ল’-এ।
অপারেটরদের অভিযোগ, মন্থন কিছু না জানিয়েই বুধবার রাত থেকে কলকাতা ও সন্নিহিত এলাকার প্রায় ৫০ হাজার সেট-টপ বক্সে কেব্ল সম্প্রচার বন্ধ করেছে। ফলে গ্রাহকেরা রাত থেকেই স্থানীয় কেব্ল অপারেটরদের ফোন করা থেকে শুরু করে অফিসে গিয়ে ঝামেলাও করছেন। যদিও মন্থনের এক কর্তা সুদীপ ঘোষের দাবি, “কেব্ল অপারেটররা যা অভিযোগ করছেন, তা ঠিক নয়। আমরা ওই ৫০ হাজার সেট-টপ বক্সে কেব্ল সম্প্রচার বন্ধ করিনি। প্রযুক্তিগত কিছু সমস্যা হওয়ায় সম্প্রচার বন্ধ হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে।” উল্টে তিনি কেব্ল অপারেটরদের বিরুদ্ধে টাকা না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।
কেব্ল সম্প্রচারের জন্য গ্রাহকদের মাসিক কত টাকা দিতে হবে— মূলত তা নিয়েই সমস্যা। অ্যানালগ পদ্ধতিতে যখন সম্প্রচার হত, তখন কেব্ল অপারেটররা অনেক বেশি লাইন সরবরাহ করেও কম পয়েন্ট দেখাতেন। গ্রাহকদের মাসিক কিস্তির পরিমাণও ছিল কম। এমএসওদের দাবি, বর্তমানে সেট-টপ বক্সের সাহায্যে সম্প্রচার শুরু হতেই কেব্ল অপারেটরদের আর পয়েন্ট দেখাতে হচ্ছে না। নতুন প্রযুক্তিতেই এক জন কেব্ল অপারেটরের কত গ্রাহক রয়েছেন, তা জানা যাচ্ছে। কিন্তু সেই অনুপাতে টাকা চাইলেই বিরোধ বাধছে। এই পদ্ধতিতে গ্রাহকদের মাসিক কিস্তিও বাড়ানোর কথা বলছেন এমএসও-রা। কিন্তু কেব্ল অপারেটররা সেই টাকা নিতে আপত্তি করে জানান, গ্রাহকেরা অত টাকা দিতে চাইছেন না।
অপারেটরদের সংগঠনের নেতা অপূর্ব ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, “ওরা কিছু না জানিয়ে ৫০ হাজার গ্রাহকের লাইন বন্ধ করেছে। আসলে ওরা যেখান থেকে সেট-টপ বক্স কিনেছে, তাদের টাকা মেটায়নি।” অনেক গ্রাহক মাসিক কিস্তির হিসেবে সেট-টপ বক্স কিনেছেন। আগে জানলে গ্রাহকদের বকেয়া তাড়াতাড়ি তোলার চেষ্টা করা হত বলে অপারেটরদের দাবি।
|