|
|
|
|
হাওড়া-খড়্গপুর |
লেডিজ ট্রেনে পুরুষের প্রবেশাধিকার, বিভ্রান্ত যাত্রীরা
নুরুল আবসার • কলকাতা |
নামে ‘লেডিজ স্পেশ্যাল’। তবে, এই ট্রেনে পুরুষ যাত্রীদেরও প্রবেশাধিকার মিলেছে। এই জগাখিচুড়ি সমন্বয়ে উপরি হিসাবে পুরুষ যাত্রীদের কপালে জুটছে বিড়ম্বনা। সঙ্গে থাকছে বিভ্রান্তি।
হাওড়া থেকে খড়্গপুরের মধ্যে বছর তিনেক আগে ট্রেনটি চালু করেন তত্কালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। কামরা আটটি। প্রতিদিন সকাল ৭টা ১০ মিনিটে খড়্গপুর থেকে ছেড়ে ট্রেনটি হাওড়ায় পৌঁছায় ৯টা ৪০ মিনিটে। আবার সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে হাওড়া থেকে ছেড়ে ট্রেনটি খড়্গপুরে ফেরে ৯ টা ১০ মিনিটে। প্রথম প্রথম পুরো ট্রেনটিই ছিল মহিলা যাত্রীদের জন্য সংরক্ষিত।
গত বছর ১২ ডিসেম্বর থেকে অবশ্য ট্রেনটিতে পুরুষ যাত্রীদের চড়ার অনুমতি দেওয়া হয়। ঠিক হয়, পিছনের দু’টি এবং সামনের দু’টি এই চারটি কামরা মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত রেখে মাঝের চারটি কামরায় পুরুষেরা উঠতে পারবেন। সংবাদপত্রে এই মর্মে বিজ্ঞাপনও দেয় রেল। এই ব্যবস্থা চালু হওয়ার পরে প্রথম কিছু দিন বিভিন্ন স্টেশনে মাইকে বক্তব্যটি প্রচার করেন সংশ্লিষ্ট স্টেশন ম্যানেজাররা। কিন্তু, রেল কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে শুরু থেকেই দেখা দিয়েছে বিভ্রান্তি। পুরুষেরা প্রবেশাধিকার পেলেও ট্রেনটি এখনও চলছে ‘লেডিজ স্পেশ্যাল’ নামেই। ট্রেনটির সামনে ও পিছনে লেখা রয়েছে সেই নাম। সেই মতো স্টেশনে ঘোষণাও হচ্ছে। ফলে অনেক পুরুষ যাত্রীই ওই ট্রেনে ভয়ে উঠছেন না।
আবার কিছু পুরুষ যাত্রী ভুল করে উঠে পড়ছেন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত কামরাগুলিতে। মহিলা কামরায় কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা বাস কন্ডাক্টরদের মতো অনেকসময় পুরুষ যাত্রীদের উঠতে বাধা দিলেও সব সময় তাঁদের পক্ষে এটা করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেকে ইচ্ছা করে অপেক্ষাকৃত ফাঁকা মহিলা কামরায় চড়ে বসছেন। শেষে রেলপুলিশের হাতে ধরা পড়ে মোটা টাকা জরিমানা দিতে হচ্ছে মহিলা কামরায় ওঠা পুরুষদের। সম্প্রতি খড়্গপুর আইআইটি-র কয়েক জন ছাত্র ভুল করে মহিলা কামরায় উঠে পড়েন। তাঁদের গ্রেফতার করে উলুবেড়িয়া আদালতে হাজির করানো হয়। মোটা টাকা জরিমানা দিয়ে তাঁরা রেহাই পান। এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে বলে যাত্রীদের ক্ষোভ।
সমস্যা আছে আরও। ট্রেনের কয়েকটি কামরায় পুরুষ যাত্রীদের বসে থাকতে দেখে কিছু কিছু মহিলাও (মূলত যাঁরা নতুন যাচ্ছেন) বিভ্রান্তিতে পড়ে ট্রেনটিতে উঠছেন না। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর বিভাগের যাত্রী সংগঠনের পক্ষে অরূপ সাহা বলেন, “আমরা রেল কর্তৃপক্ষকে বলেছিলাম ট্রেনটিকে ‘লেডিজ স্পেশাল’-এর বদলে ‘খড়্গপুর স্পেশ্যাল’ করে দেওয়া হোক। স্টেশনে স্টেশনে ‘লেডিজ স্পেশ্যাল আসছে’ এই মর্মে ঘোষণা বন্ধ হোক। তা হলে অনেক বিভ্রান্তি কাটবে।”
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সৌমিত্র মজুমদার বলেন, “ট্রেনটির কিছু অংশে যে পুরুষ যাত্রীরাও চড়তে পারবেন, তা বিজ্ঞাপন দিয়ে জানানো হয়েছিল। মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত কামরাগুলি আরও সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করতে হবে। ট্রেনটি খড়্গপুর স্পেশ্যাল হিসাবে চালানোর জন্য যাত্রীরা দেওয়া প্রস্তাব ভেবে দেখা হবে।” |
|
|
|
|
|