ক্লাসের মধ্যে তিন ছাত্রী গান-বাজনা করছিল। বারণ করলেও না শোনায় তাদের চড় মারার অভিযোগ উঠল শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, কেন ওই ছাত্রীদের মারা হল তা জানতে চাওয়া হলে এক শিক্ষাকর্মী এবং ছাত্রীদের অভিভাবকদের তিনি জুতোও ছুড়ে মারেন বলে অভিযোগ। বসিরহাটের বেগমপুর-বিবিপুর হাইস্কুলের ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি তাঁরা শিক্ষা দফতরকেও জানিয়েছেন।
অভিযুক্ত শিক্ষিকা অবশ্য বলেন, “পড়াশোনার বদলে ক্লাসের মধ্যে গান-বাজনা করছে দেখে শাসন করতে ওই তিন ছাত্রীকে চড় মারি। এর প্রতিবাদ জানাতে কয়েকজন বহিরাগতকে নিয়ে এক শিক্ষাকর্মী আমার উপরে চড়াও হন। আত্মরক্ষায় পা থেকে জুতো খুলে নিয়ে তেড়ে যাই, তবে কারও গায়ে লেগেছে কিনা জানি না।”
বসিরহাট থানার আইসি শুভাশিস বণিক বলেন, “মারামারির ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ালে পুলিশ স্কুলে যায়। অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৭ সালে সংস্কৃতির শিক্ষিকা হিসাবে স্কুলে যোগ দেন ওই শিক্ষিকা। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ওই শিক্ষিকা সব সময় নিজেকে অন্যদের থেকে আলাদা করে রাখতেন। কারও সঙ্গে মিশতেন না। এমনকী পরীক্ষায় কেউ প্রশ্নের উত্তর না দিলে বা ভুল লিখলেও তাকে নম্বর দিয়ে দিতেন। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার ঝামলাও হয়েছে। এ দিন বারো ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নিচ্ছিলেন ওই শিক্ষিকা। সেই সময় ক্লাসে তিন ছাত্রী পড়া না শুনে গান গাওয়ায় তাদের চড় মারেন তিনি। এতে তিন ছাত্রী অসুস্থ বোধ করায় তাদের প্রধান শিক্ষকের ঘরে বসিয়ে রেখে শুশ্রূষা করা হয়। পরে তাদের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। মারধরের ঘটনা জানাজানি হলে স্কুলে চলে আসেন ওই ছাত্রীদের অভিভাবক ও গ্রামের মানুষ। কেন তিনি মারধর করেছে জানতে চাওয়া হলে শিক্ষিকা তাদের দিকে তেড়ে যান। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। খবর দেওয়া হয় থানায়। প্রধান শিক্ষ মেকাইল রহমান বলেন, “ছাত্রীদের চড় ও অন্যদের দিকে জুতো নিয়ে তেড়ে গিয়ে ওই শিক্ষিকা ভাল কাজ করেননি। এর আগেও ব্যক্তিগত কারণে মানসিক অশান্তির জেরে তিনি এমন সব কাণ্ড ঘটিয়েছেন যাতে স্কুল পরিচালনায় সমস্যা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশ-প্রশাসন ওবং শিক্ষা দফতরকেও জানানো হয়েছে।” এ দিন ওই ছাত্রীদের এক সহপাঠী বলে, “ম্যাডামের কথা ক্লাসে কেউ শোনে না। এ দিন তিনি ক্লাসে ঢোকার পরে ওই তিন ছাত্রী টেবিলের উপরে পা তুলে গান-বাজনা করছিল। তাতেই রেগে গিয়ে উনি তাদের মারধর করেন।” |