গ্রামছাড়া চাষি
গ্রাম পঞ্চায়েতে তথ্য জানতে চাওয়ায় মারধরের অভিযোগ
থ্য জানার অধিকার আইনে ১০০ দিনের কাজের খতিয়ান-সহ প্রায় ন’টি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের পাঁচ বছরের খরচের হিসেব জানতে চাওয়ায় এক গ্রামবাসীকে হয়রান করা এবং মারধরের অভিযোগ উঠেছে বাসন্তীর তৃণমূল পরিচালিত চুনাখালি পঞ্চায়েতের কয়েক জন কর্মী-সদস্যের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি গত এপ্রিল মাসের। তার পর থেকে ঢেকিবেড়িয়া গ্রামের মারফত আলি লস্কর নামে ওই ব্যক্তি গ্রামছাড়া। বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগে মারফত জানিয়েছেন, ফের মারধরের আশঙ্কায় তিনি গ্রামে ফিরতে পারছেন না। তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে তাঁর আবেদনও গ্রাহ্য করা হয়নি। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ অবশ্য অভিযোগ মানেননি।
বিডিও সৌম্য চক্রবর্তী বলেন, “নিরাপত্তার বিষয়টি উল্লেখ করে চিঠি দিয়ে আমার কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। আমি সেই অভিযোগপত্র বাসন্তী থানায় পাঠিয়ে দিয়েছি। তাঁকে ফেরানোর ব্যাপারে পুলিশকে বলা হয়েছে। তিনি এখনও কেন পঞ্চায়েতের কাছ থেকে তথ্য পেলেন না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” পঞ্চায়েতে মারফতকে মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন উপপ্রধান তৃণমূলের অমৃত সরকার। তাঁর দাবি, “আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ। এখানে মারধরের কোনও ঘটনাই ঘটেনি।” কিন্তু মারফতের দাবি মতো পঞ্চায়েতের পাঁচ বছরের আয়-ব্যয়ের খতিয়ান জানানো হল না কেন? উপপ্রধানের দাবি, “উনি যে সব তথ্য চাইছেন, তার কাগজপত্র তৈরি করে দিতে হলে প্রায় এক লক্ষ টাকা খরচ হত। এতটা খরচ পঞ্চায়েতের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। সেই কারণে আমরা তাঁকে পঞ্চায়েতে এসে হিসেব দেখতে বলেছিলাম। কিন্তু তিনি আসেনি।”
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জানুয়ারি মাসে মারফত প্রথম বার যখন তাঁর আবেদনপত্র পঞ্চায়েতে জমা দিতে যান, তখন তা গ্রহণ করা হয়নি বলে তাঁর অভিযোগ। এর পরে তিনি ওই দরখাস্ত জমা দেন বিডিওকে। সেই দরখাস্তের প্রেক্ষিতে ব্লক অফিস থেকে পঞ্চায়েতে চিঠি পাঠানো হয়। তাতে পঞ্চায়েতকে মারফতের জানতে চাওয়া তথ্য পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু গত এপ্রিলে পঞ্চায়েতের তরফে ব্লক অফিসে পাঠানো চিঠিতে জানানো হয়, ওই আবেদনের ভিত্তিতে তথ্য সরবরাহ করতে গেলে প্রায় এক লক্ষ টাকা খরচ রয়েছে। পঞ্চায়তের সেই আর্থিক সামর্থ্য নেই। মারফতের বাড়িতে একাধিকবার লোক পাঠানো হয়েছে তাঁকে পঞ্চায়েতে গিয়ে নথিপত্র দেখে নেওয়ার কথা বলার জন্য। কিন্তু তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সেই সময়ে মারফত প্রায় প্রতিদিনই ব্লক অফিসে আসছিলেন। সে কথাও ব্লক অফিস থেকে পঞ্চায়েতকে জানানো হয়। এর কিছু দিন পরে ফের পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে মারফতের বাড়িতে নোটিস পাঠিয়ে তাঁকে সেখানে গিয়ে নথিপত্র দেখে নেওয়ার কথা জানানো হয়। সেই মতো মারফত পঞ্চায়েত অফিসে গেলে তাঁকে মারধর করা হয় এবং হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
পেশায় প্রান্তিক চাষি মারফত বর্তমানে বাসন্তীরই অন্য গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছেন। ঢেকিবেড়িয়ায় রয়েছেন মারফতের স্ত্রী ও মেয়ে। মারফত বলেন, “ভয়ে বাড়িতেও ফিরতে পারছি না। সংসারও না চলার উপক্রম। আমার মনে হয়েছিল পঞ্চায়েত ঠিকমতো কাজ করছে না। সেই কারণে ওই সব তথ্য জানতে চেয়েছিলাম। তার জন্য মারধর, হুমকি জুটল। কবে বাড়ি ফিরতে পারব জানি না।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পশ্চিম) কঙ্করপ্রসাদ বারুই জানিয়েছেন, থানায় কী অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.