পর্যটন দফতরের প্যাকেজ
‘সুবে বাংলা’র রাজধানী সংস্কারে খরচ ১৫ কোটি
লাশির যুদ্ধের পরে সুবে বাংলার নবাব মির জাফরের বাড়িটি ‘নিমকহারম দেউড়ি’ নামেই পরিচিত।
তিনশো বছরের প্রাচীন ওই বাড়িতে এখন ঘুঘু চরে। চামচিকে বাসা বেঁধেছে। সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের পথে। নিমকহারাম দেউড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দক্ষিণে নবাব নাজিম হুমায়ুনজা বাহাদুর ১৮৩৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন হাজারদুয়ারি প্যালেস। হাজারদুয়ারি প্যালেস ও মিউজয়ামের গা ঘেঁষা ভাগীরথীর পাড় জবরদখল করে গড়ে উঠেছে শ’ দেড়েক দোকান। কিছু দূরে নবাব আলিবর্দির জামাই, অর্থাৎ ঘসেটি বেগমের স্বামী নওয়াজেস মহম্মদের উদ্যোগে গড়া অশ্বখুরাকৃতির মতিঝিল। একদা মুক্তো চাষ হত সেই ঝিলে। এখন কচুরিপানার চাদরে ঢাকা।
হাজারদুয়ারি প্যালেস ও মিউজয়াম, ‘নিমকহারম দেউড়ি’ ও মতিঝিলের হতশ্রী এই চেহারা মুছতে মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সন্দীপ দত্ত এ জেলার ৭ জন বিধায়ক ও রাজ্যের পর্যটন দফতরর আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন, ‘ডেস্টিনেশন হাজারদুয়ারি মতিঝিল ও আহিরণ’। সুতির পাখিরালয় ‘ডেস্টিনেশন আহিরণ’-সহ প্রতিটির জন্য প্রকল্প-ব্যয় ৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট প্রকল্প ব্যয় ১৫ কোটি টাকা। ওই বৈঠকে ছিলেন মুর্শিদাবাদ (লালবাগ)-এর বিধায়ক শাঁওনী সিংহ রায়। তিনি বলেন, “পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ করা টাকা রাজ্যে এসে পড়ে রয়েছে। মঙ্গলবারের বৈঠকে তৈরি করা প্রকল্প জেলা থেকে পাঠানোর পর রাজ্য অনুমোদন দিলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।
এই দোকানঘরগুলি উচ্ছেদ করেই হবে সংস্কার।—নিজস্ব চিত্র।
কি সেই কাজের তালিকা?
সন্দীপবাবু জানান, ভগ্নপ্রায় নিমকহারাম দেউড়ি ও সমাধিক্ষেত্র সংস্কার করা হবে আলোকিতও। দক্ষিণ দরওয়াজা থেকে হাজারদুয়ারির উত্তরে ফক্সেস কুটির পর্যন্ত ভাগীরথীর পাড় বরাবর প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় সৌন্দর্যায়ন করা হবে। পর্যটকদের জন্য সেখানে অনেকগুলি অত্যাধুনিক সুলভ শৌচালয় গড়া হবে।
কিন্তু ভাগীরথীর পাড়ের দোকানঘর? শাঁওনী বলেন, “দোকানঘর গুলি থেকে একশো মিটার দূরেই সাড়ে ৭ একরের পাহাড়বাগান এলাকাটির বর্তমান মালিক রাজ্যের পর্যটন দফতর। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের অনুমতি সাপেক্ষে সেখানে পিপিপি মডেলে মার্কেটিং কমপ্লেক্স তৈরি করা হবে। জবরদখল করা জায়গা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ওই দেড়শো দোকানের পুমনর্বাসন হবে মার্কেট কমপ্লেক্সে।”
জবরদখলকারীদের মুখপাত্র গহর আলি মির্জা বলেন, “সে তো উত্তম প্রস্তাব। আমরাও চাই পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্য ও হাজারদুয়ারি সৌর্ন্দযায়নের পাশাপশি আমাদেরও রুটিরুজির ব্যবস্থা হোক।” জগৎ বিখ্যাত মুর্শিদাবাদ সিল্ক, খাগড়ার কাঁসার বাসন ও শোলা শিল্পের জন্য মুর্শিদাবাদ জেলা জগৎ বিখ্যাত। শাঁওনীদেবী বলেন, “সে সব কিনতে পর্যটকদের যেতে হয় বহরমপুর শহরে। ওই কারণে পাহাড়বাগানে সিল্ক প্যাভেলিয়ন করা হবে।” অশ্বক্ষুরাকৃতির বিশাল মতিঝিল সংস্কার করে সেখানে পিপিপি মডেলে ফ্লোটেল, শব্দদূষণ মুক্ত ব্যাটারি চালিত বোটিংও পাড়ে রিসর্টের ব্যবস্থা করা হবে। জিয়াগঞ্জের মিউজিয়াম ও জিয়াগঞ্জের বড়নগরে রানিভবানী প্রতিষ্ঠিত টোরাকোটার শিল্পে সমৃদ্ধ মন্দির রয়েছে। লালবাগ মহকুমাশাসক চিরঞ্জীব ঘোষ বলেন, “জিয়াগঞ্জের মিউজিয়াম চত্বর ও বড়নগরের সৌর্ন্দযায়ন ও আলোকিত করার কাজ শুরু হবে।”
আশায় বুক বাঁধবে কি মুর্শিদাবাদ!



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.