মেয়াদ ফুরোচ্ছে ২০শে
মন্ত্রিত্বে আর রাখবেন কি দিদি, উৎকণ্ঠায় হুমায়ুন
খুব উদ্বেগের মধ্যে আছেন হুমায়ুন কবীর। মন্ত্রীর চাকরির মেয়াদ আর মাত্র কয়েকটা দিন। তার পরে কী হবে?
মন্ত্রিপদে আরও ক’টা মাস টিকে থাকতে পারবেন কিনা, সেটা নির্ভর করছে মুখ্যমন্ত্রীর মর্জির উপরে। আপাতত দলের নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে দিদির মতিগতি বোঝার চেষ্টা করছেন হুমায়ুন। কোনও আঁচ পাননি। তাই উৎকন্ঠাও কাটছে না। মন্ত্রীর চেয়ারে বসার আগে পর্যন্ত তাঁর নামে হত্যার চেষ্টা, সরকারি কর্মীকে মারধর, অগ্নিসংযোগ ও সম্পত্তি নষ্ট, হাঙ্গামা বাধানোর চেষ্টা-সহ একাধিক মামলা রয়েছে বিভিন্ন আদালতে। তাঁর ঘনিষ্ট মহলের বক্তব্য, মন্ত্রী থাকলে পুলিশ সহজে ঘাঁটাবে না। কিন্তু চেয়ার চলে গেলে আশঙ্কা যথেষ্ট। “সেটা ভেবেই দাদা খানিকটা চিন্তায়।” মন্তব্য এক অনুগামীর।
মুর্শিদাবাদের রেজিনগরের বিধায়ক থাকাকালীন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন একদা অধীর-ঘনিষ্ঠ হুমায়ুন। দলবদলের সুবাদে বিধায়ক পদ ছাড়তে হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলত্যাগী হুমায়ুনকে নিজের মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী পদে বসান। গত ২১ নভেম্বর পাশের জেলা মালদহের কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর সঙ্গে তিনি রাজভবনে গিয়ে মন্ত্রিত্বে শপথ নেন। অফিসরঘর জোটে খাস মহাকরণে। প্রত্যয়ী হুমায়ুন তখন ভেবেছিলেন, রেজিনগরের উপনির্বাচনে হেলায় জিতে স্থায়ী ভাবে মন্ত্রীর চেয়ারে থেকে যাবেন। এমনকী, মুখ্যমন্ত্রীকেও বিলক্ষণ আশ্বস্ত করেছিলেন তিনি।
মহাকরণে হুমায়ুন কবীর। —ফাইল চিত্র
কিন্তু গত ২৩ ফেব্রুয়ারির উপনির্বাচনে রেজিনগরের ভোটাররা হুমায়ুনকে শুধু হারিয়ে দেননি, একেবারে তিন নম্বরে পাঠিয়ে দিয়েছেন! বস্তুত হুমায়ুন সে দিনই ধরে নেন মন্ত্রিত্ব চলে গেল। তবে সকলকে অবাক করে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে প্রাণিসম্পদ দফতরের প্রতিমন্ত্রী পদেই রেখে দেন। আইন মোতাবেক, বিধায়ক না-হয়েও এক জন ছ’মাস মন্ত্রী থাকতে পারেন। সেই মেয়াদ ফুরোচ্ছে আগামী ২০ মে, ঘটনাচক্রে যে দিন দু’বছর পূর্ণ করবে মমতা সরকার।
এবং হুমায়ুন জানেন না, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেবেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের খবর: আজ, শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী দার্জিলিং থেকে কলকাতায় ফেরার পরে তিনি দিদির সঙ্গে কথা বলবেন। কিন্তু বিধায়ক না-হয়ে ছ’মাস পরেও কি মন্ত্রী থাকা সম্ভব?
রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, সম্ভব। তাঁর ব্যাখ্যা, “মুখ্যমন্ত্রী চাইলে আরও ছ’মাসের জন্য (সব মিলিয়ে এক বছর) মন্ত্রী থাকতে পারেন। তার পরে পারবেন না।” বিমানবাবু বলেন, “বিধায়ক নন, এমন কারও মন্ত্রিত্বের ছ’মাসের মেয়াদ যে দিন শেষ হবে, সে দিন তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে। তবে মুখ্যমন্ত্রী চাইলে পরের দিনই শপথ নিয়ে আবার তিনি ছ’মাসের জন্য মন্ত্রী হতে পারেন।”
মমতা কী করবেন? তৃণমূলের অন্দরে কী ইঙ্গিত?
দলীয় সূত্রের খবর: আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে অধীরের দাপট কমাতে জেলায় হুমায়ুনকে প্রয়োজন। উনি মন্ত্রী থাকলে দলেরই সুবিধা, কারণ জেলা প্রশাসন তাঁর কথায় মান্যতা দেবে। তাই মুখ্যমন্ত্রী আরও ছ’মাসের জন্য হুমায়ুনকে মন্ত্রী করে রেখে দিতে পারেন বলে দলের একাংশের অভিমত। অন্য অংশের দাবি: হুমায়ুনের অবস্থান কখনওই খুব একটা পোক্ত নয়। দৃষ্টান্ত হিসেবে তারা জানাচ্ছে, মন্ত্রী হয়ে হুমায়ুন কোনও ব্যক্তিগত সচিব (প্রাইভেট সেক্রেটারি) পাননি। এ জন্য তিনি তিন-তিন বার স্বরাষ্ট্র (কর্মীবর্গ) সচিবকে চিঠি দিয়ে উত্তর পাননি। এমনকী, প্রাইভেট সেক্রেটারি না-থাকায় তিনি মন্ত্রীর ভাতাও তুলতে পারেননি!
এই পরিস্থিতিতে মমতার সিদ্ধান্ত কী হবে, তা নিয়ে জল্পনা নানা মহলে। হুমায়ুন নিজে কী ভাবছেন?
প্রাণিসম্পদ-প্রতিমন্ত্রী বলছেন, “দিদির নির্দেশ মাথা পেতে নেব। ভোটে হেরে যাওয়ার পরেও উনি আমাকে মন্ত্রিসভায় রেখেছেন।
আমি কৃতজ্ঞ।” তাঁর আশা, ২০ তারিখের আগেই দিদি ভবিষ্যৎ কর্মসূচি জানিয়ে দেবেন।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.