একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বুধবার মালদহের মানিকচকের ভুতনিতে গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধের কাজ শুরু করল প্রশাসন। ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ ভাঙন রোধের কাজ করতে পারবে না বলে গত সপ্তাহে জানানোর পরে জেলা প্রশাসনের তরফে ওই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ দিন সকাল থেকে হীরানন্দপুরে ১১৩২ জন মাটি ফেলে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করে। মালদহের জেলাশাসক গোদালাকিরণ কুমার বলেন, “বর্ষার আগে ভাঙনরোধ ও বাঁধ মেরামতের জন্য ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষকে ডাকা হয়। কিন্তু ওঁরা জানিয়ে দেন টাকা নেই। তাই কাজ করা সম্ভব নয়। কিন্তু এখন কাজ না-হলে বর্ষায় মানিকচকে নদী পাড়ের মানুষ বিপন্ন হবে। তাই একশো দিনের প্রকল্পে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করা হয়েছে।” ফরাক্কা ব্যারেজ প্রকল্পের জেনারেল ম্যানেজার এ কে সিংহ বলেন, “মানিকচক ও কালিয়াচকে ভাঙন রোধের কাজের জন্য প্রকল্প তৈরি করে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক থেকে এখনও তা হাতে আসেনি। টাকা না পাওয়া গেলে কেমন করে কাজ হবে। তাই প্রশাসনকে জানানো হয়েছে বাঁধ মেরামতের কাজ করা সম্ভব নয়।”
মানিকচকের চারটি পঞ্চায়েতের ৮৬৪০ মিটার এলাকায় ভাঙন রোধ এবং বাঁধ মেরামতের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে অনুযায়ী এ দিন হীরানন্দপুরে কাজ শুরু হয়। এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে। এ জন্য ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ৩২০ শ্রম দিবস লাগবে। খরচ হবে প্রায় ৪ কোটি টাকা। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ ৭ মে শাসনকে জানায় বাঁধ মেরামতের কাজ করার মতো টাকা নেই। এখন কাজ করা সম্ভব নয়। তা শোনার পরে হতাশ হন প্রশাসনের কর্তারা। মানিচকচকের গঙ্গাপাড়ে হীরানন্দপুর, দক্ষিণ চন্ডীপুর, ধরমপুর, গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ওই পরিস্থিতিতে কিছুটা নিরুপায় হয়ে নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র ও পযর্টন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর উপস্থিতিতে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বাঁধ মেরামত ও ভাঙন রোধের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন।
ওই কাজের জন্য মানিকচকের চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের গঙ্গা লাগোয়া এলাকায় ১২৮টি প্রকল্প তৈরি হয়। সাবিত্রীদেবী বলেন, “ফরাক্কা ব্যরেজের ৪০ কিমি উপর গঙ্গা ভাঙন রোধের কাজের দায়িত্ব ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের। সামনে বর্ষা। গঙ্গাপাড়ের বাসিন্দাদের বিপদের মধ্যে ফেলে রাখা যায় না। একশো দিনের প্রকল্পে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করা হয়েছে।” কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, “স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য বাঁধ মেরামতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” |